ঢাকা, শুক্রবার   ০৪ জুলাই ২০২৫

সুবীর নন্দীর জন্মদিন আজ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:৩৮, ৩০ নভেম্বর ২০২০

Ekushey Television Ltd.

একুশে পদকপ্রাপ্ত ও দেশ বরেণ্য জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী সুবীর নন্দীর জন্মদিন আজ। প্রয়াত এই শিল্পী ১৯৫৩ সালের ৩০ নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং থানায় নন্দীপাড়া নামক গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত সঙ্গীত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

সুবীর নন্দীর নানার বাড়ি শ্রীমঙ্গল উপজেলার বাদেআলিশা গ্রামে। তার পিতা-সুধাংশু নন্দী ছিলেন একজন চিকিৎসক ও সঙ্গীতপ্রেমী। তার মা পুতুল রানী চমৎকার গান গাইতেন কিন্তু রেডিও বা পেশদারিত্বে আসেননি কখনও।

ছোটবেলা থেকেই সুবীর ভাই-বোনদের সঙ্গে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে তালিম নিতে শুরু করেন ওস্তাদ বাবর আলী খানের কাছে। তবে সঙ্গীতে তার হাতেখড়ি মায়ের কাছেই। বাবার চাকরি সূত্রে তার শৈশবকাল চা বাগানেই কেটেছে। পাঁচ-ছয় বছর বয়স পর্যন্ত বাগানেই ছিলেন। চা বাগানে খ্রিস্টান মিশনারিদের একটি স্কুল ছিল, সেখানেই পড়াশোনা করেন।

তবে পড়াশোনার অধিকাংশ সময়ই তার কেটেছে হবিগঞ্জ শহরে। হবিগঞ্জ শহরে তাদের একটি বাড়ি ছিল, সেখানেই ছিলেন তিনি। পড়েছেন হবিগঞ্জ সরকারী হাইস্কুলে। তারপর হবিগঞ্জ বৃন্দাবন কলেজে। মুক্তিযুদ্ধের সময় সুবীর নন্দী সেকেন্ড ইয়ারে পড়তেন।

১৯৬৩ সালে তৃতীয় শ্রেণি থেকেই গান করতেন সুবীর নন্দী। এরপর ১৯৬৭ সালে তিনি সিলেট বেতারে গান করেন। তার গানের ওস্তাদ বাবর আলী খান থাকলেও লোকগানে ছিলেন বিদিত লাল দাশ।

সুবীর নন্দী গানের জগতে আসেন ১৯৭০ সালে ঢাকা রেডিওতে প্রথম রেকর্ডিংয়ের মধ্য দিয়ে। প্রথম গান ‘যদি কেউ ধূপ জ্বেলে দেয়’। এ গান রচনা করেন মোহাম্মদ মুজাক্কের এবং সুরারোপ করেন ওস্তাদ মীর কাসেম।

৪০ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে গেয়েছেন আড়াই হাজারেরও বেশি গান। বেতার থেকে টেলিভিশন, তারপর চলচ্চিত্রে গেয়েছেন অসংখ্য জনপ্রিয় গান। চলচ্চিত্রে প্রথম গান করেন ১৯৭৬ সালে আব্দুস সামাদ পরিচালিত সূর্যগ্রহণ চলচ্চিত্রে। ১৯৮১ সালে তার একক অ্যালবাম ‘সুবীর নন্দীর গান’ ডিসকো রেকর্ডিংয়ের ব্যানারে বাজারে আসে। এছাড়া তিনি গানের পাশাপাশি দীর্ঘদিন ব্যাংকে চাকরি করেছেন।

বরেণ্য এই শিল্পীর গাওয়া জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-‘কত যে তোমাকে বেসেছি ভালো, আমার এ দুটি চোখ, বন্ধু হতে চেয়ে, আমি বৃষ্টির কাছ থেকে কাঁদতে শিখেছি, চাঁদের কলঙ্ক আছে, দিন যায় কথা থাকে, একটা ছিল সোনার কন্যা, হাজার মনের কাছে, পাহাড়ের কান্না, বন্ধু হতে চেয়ে তোমার প্রভৃতি।

যিনি মানুষের হৃদয় জয় করা ছাড়াও ভূষিত হয়েছিলেন একুশে পদক, চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, বাচচাস পুরস্কারসহ বিভিন্ন পদকে।

সুবীর নন্দী দীর্ঘদিন ধরে কিডনি ও হার্টের অসুখে ভুগছিলেন। পরবর্তিতে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তাকে সিঙ্গাপুর নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় ২০১৯ সালের ৭ মে তার মৃত্যু হয়।

এদিকে শিল্পীর একমাত্র কন্যা কণ্ঠশিল্পী ফালগুনী নন্দী জন্মদিনে বাবার স্মৃতি মনে করে নিজের ফেসবুকে লিখেছেন, ‘শুভ জন্মদিন বাবু। আজ থাকলে তোমার ৬৭তম জন্মদিন পালন করতাম! ঠাকুর হয়তো তা মেনে নেন নি। কারণ খুব ভালো মানুষদের তিনি তাড়াতাড়ি কাছে টেনে নেন! বেশী কিছু চাওয়া ছিল না, কিন্তু যা পেয়েছো সবাই তা পায় না! ভাগ্য লাগে সেই সম্মান আর ভালোবাসা পেতে, মানুষের মনে জায়গা করে নিতে! সব চাওয়া পাওয়া নিয়ে তুমি চলে গেছ। ভালো থেকো বাবু, প্রণাম আর অনেক আদর।’
এসএ/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি