ঢাকা, সোমবার   ২৮ জুলাই ২০২৫

বিক্ষোভে নিষিদ্ধ ‘লেডি অব হ্যাভেন’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৫৮, ১১ জুন ২০২২ | আপডেট: ১১:০২, ১১ জুন ২০২২

Ekushey Television Ltd.

গত শুক্রবার (৩ জুন) যুক্তরাজ্যে মুক্তি পেয়েছে ‘লেডি অব হ্যাভেন’ নামের একটি সিনেমা। এরপর দেশজুড়ে মুসলিমদের প্রতিবাদের জেরে সিনেমাটির প্রদর্শনী স্থগিত করেছে প্রেক্ষাগৃহ চেইন সিনে ওয়ার্ল্ড।

মূলত এই চলচ্চিত্রটি নবী মুহাম্মদের কন্যা ফাতিমাকে কেন্দ্র করে। এই গল্পটি প্রায় ১,৪০০ বছর পরে আধুনিক সময়ে একটি ছোট ইরাকি শিশুর জীবন কাহিনীর সাথে মিল রেখে করা।

গল্প লিখেছেন শিয়া মুসলিম ধর্মগুরু শেখ ইয়াসের আল-হাবিব। তিনি এতে ফাতিমার মৃত্যুকে চিত্রিত করেছেন এবং তাকে ‘সন্ত্রাসবাদের প্রথম শিকার’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন। এই বিষয়ে ধর্মের ভিন্ন ভিন্ন মত রয়েছে। প্রধানত সুন্নি মুসলমানরাই চলচ্চিত্রটির তীব্র সমালোচনা করে বলেছে, প্লটটি ঐতিহাসিক ঘটনাগুলো সঠিকভাবে তুলে ধরেনি।

সিনেমাটির সমালোচনাকারীরা একে বিতর্কিত, ধর্মদ্রোহী এবং বর্ণবাদী বলে অভিহিত করেছে। সারাদেশে বিক্ষোভকারীরা প্রতিবাদে সোচ্চার হবার ফলে চেইন সিনে ওয়ার্ল্ড সিনেমাটি তাদের প্রদর্শনী থেকে সরিয়ে নিয়েছে। 
অনলাইনে করা এক পিটিশনে এক লাখ ২৬ হাজার লোক সিনেমাটির প্রদর্শনী বন্ধ করার দাবী জানিয়ে স্বাক্ষর করেছিল।

তবে দ্য লেডি অফ হ্যাভেনের নির্মাতারা এবং বাক স্বাধীনতা প্রচারকরা বলছেন যে, এটি একটি ‘বিপজ্জনক’ উদাহরণ হিসেবে স্থাপন করল।

সিনেমাটি ভিউ, শোকেস এবং সিনেওয়ার্ল্ড সিনেমায় দেখানোর কথা ছিল। পরবর্তীতে স্টাফ এবং গ্রাহকদের নিরাপত্তার উদ্বেগ উল্লেখ করে সিনেওয়ার্ল্ড সব ধরনের প্রদর্শন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

পর্দায় এবং শিল্পকলায় ইসলামী নবীদের চিত্রায়ন দীর্ঘদিন ধরে বিতর্কিত। দ্য লেডি অফ হ্যাভেন চলচ্চিত্র নির্মাতারা বলছেন যে ইসলামিক ঐতিহ্য অনুসারে, তারা একজন পবিত্র ব্যক্তিকে একজন মানুষের দ্বারা প্রতিনিধিত্ব না করার জন্য অনেক চেষ্টা করেছেন। ফাতিমার ভূমিকায় কোনও অভিনেত্রী ছিলেন না। পরিবর্তে, পারফরম্যান্সটি সিজিআই, আলো এবং ভিজ্যুয়াল এফেক্টের মিশ্রণের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে।

কিন্তু চলচ্চিত্রটির সমালোচনা মূলত, ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত মুহাম্মদের সাথী আবু বকর এবং উমর ইবন আল-খাত্তাবসহ আরও বেশ কয়েকটি চরিত্রের চিত্রায়নকে কেন্দ্র করে।

দ্য লেডি অফ হ্যাভেন এর নির্বাহী প্রযোজক মালিক শ্লিবাক গণমাধ্যমে বলেন,সিনেমাটি ফাতিমার ‘জীবন, তার সংগ্রাম, তিনি যে যাত্রার মধ্য দিয়ে গেছেন’ তার গল্প। আমরা বিশ্বাস করি, উগ্রবাদ, মৌলবাদ ও দুর্নীতির মতো বিষয়গুলো কীভাবে মোকাবেলা করতে হয়, তা জানার জন্য তিনি আজ আমাদের জন্য ইতিহাসের সেরা ব্যক্তিত্ব। এবং আমরা অনুভব করেছি যে এই গল্পটি বিশ্বের কাছে তুলে ধরা গুরুত্বপূর্ণ।

শ্লিবাক আরও বলেন, লোকেরা ফিল্মটির সমালোচনা করতে এবং তাদের নিজস্ব মতামত রাখার ক্ষেত্রে স্বাধীন। তবে প্রতিবাদকারীরা তাদের সীমানা অতিক্রম করেছে এবং এটি ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির লোকেদের সেন্সর করার প্রচেষ্টা।

প্রসঙ্গত, ইংল্যান্ডে মুক্তির পর, দ্য লেডি অফ হ্যাভেন ব্ল্যাকবার্ন, ব্র্যাডফোর্ড, ব্রিস্টল, বার্মিংহাম, বোল্টন, কার্ডিফ, কভেন্ট্রি, ডার্বি, গ্লাসগো, লিডস, লিসেস্টার, লিভারপুল, ম্যানচেস্টার, মিল্টন কেইনস এবং লন্ডনের বিভিন্ন স্থানে সিনেওয়ার্ল্ড, ভিউ এবং শোকেস সিনেমায় প্রদর্শিত হওয়ার কথা ছিল ।

সিনেওয়ার্ল্ড নিশ্চিত করেছে যে তারা বিক্ষোভের পর চলচ্চিত্রটি সব জায়গা থেকে সরিয়ে নিয়েছে। তারা আরও বলেছেন ‘দ্য লেডি অফ হ্যাভেনের স্ক্রিনিং সম্পর্কিত সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর কারণে, আমরা আমাদের কর্মী এবং গ্রাহকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য দেশব্যাপী চলচ্চিত্রটির আসন্ন প্রদর্শনী বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

সূত্র : ইন্ডিপেন্ডেট
এমএম/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি