ঢাকা, রবিবার   ২৮ এপ্রিল ২০২৪

বারী সিদ্দিকীর জন্মদিন আজ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৪৪, ১৫ নভেম্বর ২০১৮ | আপডেট: ১১:২২, ১৫ নভেম্বর ২০১৮

বাংলাদেশের খ্যাতিমান সংগীত শিল্পী, গীতিকার ও বংশী বাদক বারী সিদ্দিকীর জন্মদিন আজ। ১৯৫৪ সালের ১৫ নভেম্বর নেত্রকোনায় জন্ম গ্রহণ করেন এই লোক ও মরমী ধারার গায়ক।
বারী সিদ্দিকীর বাবা প্রয়াত মহরম আলী ও মা প্রয়াত জহুর-উন-নিসা। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে বারী সিদ্দিকীই ছিলেন সবার ছোট। ছোটবেলায় বয়স যখন তিন কিংবা চার হবে সেই বয়সেই মা’র কাছে তার প্রথম শুনা গান ছিলো ‘শ্বাশুড়িরেও কইয়ো গিয়া’। সেই গানের সুরই বারী’র মনে গেঁথে যায় ছোটবেলায়। যদিও তার পরিবার গানের পরিবার ছিলো না। কিন্তু সৌখিন গানের পরিবার ছিলো তার। বারীর নানা শেখ সাবির সরদ বাজাতেন। আর তার নানীর কাছ থেকেই মা গান শিখেছিলেন টুকটাক। বারীর বয়স যখন পাঁচ তখন বড় ভাইয়ের বাঁশিতে ফু দেয়া তার মধ্যে অন্যরকম আগ্রহের সৃষ্টি করে বাঁশি শেখার প্রতি। বারীর নানারা দুই ভাই ছিলেন। তার নানার একটা সঙ্গীতের দল ছিল। নব্বইয়ের দশকে ভারতের পুনে গিয়ে পণ্ডিত ভিজি কার্নাডের কাছে তালিম নেন। দেশে ফিরে এসে লোকগীতির সাথে ক্লাসিক মিউজিকের সম্মিলনে গান গাওয়া শুরু করেন।
বারীর বাবা গানের সাথে জড়িত না থাকলেও গান বাজনা তার পছন্দের ছিলো। বারী তার বাঁশি শেখা এবং গান শেখার দুটোরই উৎসাহ পেয়েছেন তার মায়ের কাছ থেকে। মার কাছ থেকে জীবনে তিনি প্রথম যে গানটির সুর বাঁশিতে তুলে নিয়েছিলেন সেই সুরটিই তিনি পরবর্তীতে হুমায়ূন আহমেদ’র ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ চলচ্চিত্রে ব্যবহার করেছিলেন। সেটি ছিলো শ্যাম বিচ্ছেদের একটি সুর। কলিটা ছিলো এরকম ‘আস্ট আঙ্গুল বাঁশের বাঁশি/মধ্যে মধ্যে ছ্যাদা/ নাম ধরিয়া ডাকে বাঁশি/ কলংকিনী রাধা/।
চলচ্চিত্রের গানে আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা পাবার পরপরই বাজারে তার দুটি একক অ্যালবাম আসে। একটি ‘দুঃখ রইলো মনে’ এবং অন্যটি ‘অপরাধী হইলেও আমি তোর’। দুটি অ্যালবাই লুফে নেয় শ্রোতারা।
তিনি একজন বংশীবাদক হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাঁশি বাজিয়ে শ্রোতা দর্শককে মুগ্ধ করেছেন। ১৯৮০ সালে বারী সিদ্দিকী পেশাগতভাবে বাঁশি বাজানো শুরু করেন। ১৯৮৬ সালে প্রথম বিটিভিতে ‘সৃজন’ অনুষ্ঠানে বাঁশি বাজান। বারী সিদ্দিকী ‘মাটির পিঞ্জিরা’ নামের একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন। এটি নির্মাণ করেছিলেন। পরবর্তীতে তিনি ফেরারি অমিতের নির্দেশনায় ‘পাগলা ঘোড়া’ নাটকেও অভিনয় করেছিলেন। তবে অভিনয় করতেন নিতান্তই অনুরোধে এবং শখের বশে।
বিখ্যাত গান- শুয়া চান পাখি, ‘আমার গায়ে যত দুঃখ সয়’, ‘সাড়ে তিন হাত কবর’, ‘পুবালি বাতাসে’, ‘তুমি থাকো কারাগারে’, ‘রজনী’, ‘আমার গায়ে যত দুঃখ সয়’, ‘ওলো ভাবিজান নাউ বাওয়া’, ‘মানুষ ধরো মানুষ ভজো প্রভৃতি গানের জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত।
বারী সিদ্দিকী ছিলেন মূলত গ্রামীণ লোকসঙ্গীত ও আধ্যাত্মিক ধারার শিল্পী। সঙ্গীতকে ভালোবেসে জীবনভর গানের সঙ্গেই ছিলেন। ২০১৭ সালের ২৪ নভেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।


এসএ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি