ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৪ মে ২০২৪

‘হাওয়া’র প্রদর্শন নিষিদ্ধ চেয়ে আইনি নোটিশ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:৩১, ২২ আগস্ট ২০২২

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠায় ‘হাওয়া’ সিনেমার প্রদর্শন নিষিদ্ধ চেয়ে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের চেয়ারম্যান, তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মকবুল হোসেন এবং সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান মুহ. সাইফুল্লাহকে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার সোমবার (২২ আগস্ট) এই নোটিশ পাঠান।

নোটিশে বলা হয়, সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পেয়ে ২৯ জুলাই দেশের প্রেক্ষাগৃহগুলোতে মুক্তি পাওয়া মেজবাউর রহমান সুমন পরিচালিত ‘হাওয়া’ সিনেমায় ট্রলারে থাকা একটি খাঁচায় শালিক পাখি বন্দি অবস্থায় দেখা যায়। একপর্যায়ে সেটিকে হত্যা করে খাওয়ার দৃশ্য দেখানো হয়েছে।

‘হাওয়া’ সিনেমার কয়েকটি দৃশ্য রয়েছে—যা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন, ২০১২-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত এ ধরনের অপরাধের ফলে সাধারণ মানুষ পাখি শিকার, খাঁচায় পোষা ও হত্যা করে খাওয়ায় উৎসাহিত হবে। এই দৃশ্য ধারণের জন্য বন বিভাগের কোনও অনুমতিও নেওয়া হয়নি। বন্যপ্রাণী হত্যা এবং খাওয়ার দৃশ্য দেখে মানুষ মনে করতে পারেন যে এটা করা যায়। তারা এগুলো দেখে উৎসাহিত হতে পারেন। সিনেমা নাটকে ধূমপানের দৃশ্যে যেমন লেখা থাকে যে এটা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, কিন্তু ‘হাওয়া’ সিনেমার ওই অংশে এই ধরনের কোনও বার্তা ছিল না।

ইতোমধ্যে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের চার কর্মকর্তা ‘হাওয়া’ সিনেমাটি দেখে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২-এর ধারা ৩৮(১), ৩৮(২), ৪০ ও ৪৬ লঙ্ঘনের সত্যতা পেয়ে গত ১৭ আগস্ট বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।

এছাড়া ‘হাওয়া’ সিনেমায় বেশ কয়েকটি খুনের দৃশ্য রয়েছে, যা অতি ভয়ংকর তথা ভায়োলেন্স পূর্ণ। এছাড়া পুরো ‘হাওয়া’ সিনেমায় নারী চরিত্রকে নেতিবাচক হিসেবে তুলে ধরার পাশাপাশি অসংখ্য অশ্লীল গালি ব্যবহার করা হয়েছে। যা পরিবারের সদস্যদের, বিশেষ করে অপ্রাপ্ত বয়স্কদের দেখা মোটেও উচিত নয়। এহেন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে শিশু-কিশোররা, তরুণ-তরুণীরা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হতে পারে। যা সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। অথচ ‘হাওয়া’ সিনেমার কোথাও ‘অপ্রাপ্ত বয়স্কদের দেখা নিষেধ’ এই কথাটিও উল্লেখ নাই। এ ধরনের চলচ্চিত্র শুধু বাংলাদেশেই নয়, বহির্বিশ্বেও প্রচার, সম্প্রচার ও প্রদর্শন হলে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণার জন্ম দেবে।

নোটিশে আরও বলা হয়েছে, ‘হাওয়া’ সিনেমাটিতে ভায়োলেন্সপূর্ণ খুনের দৃশ্য, অশ্লীল গালি এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২-এর ধারা ৩৮(১), ৩৮(২), ৪০ ও ৪৬ লঙ্ঘন হলেও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড সদস্যরা পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমনকে হাওয়া সিনেমার বিতর্কিত দৃশ্যগুলো কর্তন বা আইন লঙ্ঘনের চিত্র সংস্কার করতে বলেনি। বরং হাওয়া সিনেমাটিকে দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে ছাড়পত্র প্রদান করে বাংলাদেশের প্রচলিত আইন লঙ্ঘনে এবং সমাজে নেতিবাচক প্রভাব তৈরিতে উৎসাহ প্রদান করে সমঅপরাধ সংঘটিত করেছেন।

তাই নোটিশ প্রাপ্তির ৭ দিনের মধ্যে হাওয়া সিনেমাটির ছাড়পত্র বাতিল করে বাংলাদেশে এবং বাংলাদেশের বাইরে প্রচার, সম্প্রচার ও প্রদর্শন সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পাশাপাশি সেন্সরবোর্ড পুনর্গঠন করে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের সদস্য, আইনজীবী ও পরিবেশবিদদের সেন্সরবোর্ডের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে কোনও সিনেমার ছাড়পত্র দেওয়ার আগে চলচ্চিত্রটিতে যেন ভায়োলেন্সপূর্ণ খুনের দৃশ্য, অশ্লীল গালি এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২-এর কোনও ধারার লঙ্ঘন না হয়, সেই ব্যাপারে বিশেষভাবে দৃষ্টি রাখতে বলা হয়েছে।
এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি