ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০২ মে ২০২৪

আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের লক্ষ্য করে বিজিপির গুলি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:২৯, ২৬ আগস্ট ২০১৭ | আপডেট: ২৩:১৪, ২৬ আগস্ট ২০১৭

রাখাইন রাজ্যে অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশ সীমান্তে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীরা। শনিবার দুপুরে এই গুলিবর্ষণের খবর পাওয়া গেছে। ঘটনায় সীমান্তে সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে বলে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি সূত্রে জানা গেছে।

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তমব্রু এলাকায় শূন্য রেখায় আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের লক্ষ্য করে সীমান্তের ওপার থেকে গুলি চালায় মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)।

বিজিবির কক্সবাজার ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান বলেন, বেলা সোয়া ১টার দিকে তারা তিন থেকে চার রাউন্ড গুলি ছোড়ে। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে এক রাতে ৩০টি পুলিশ পোস্টে হামলার ঘটনার পর উত্তেজনা আর শঙ্কার মধ্যে কক্সবাজার ও বান্দরবান সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টায় রয়েছে।

কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী সীমান্ত দিয়ে শুক্রবার বাংলাদেশে প্রবেশের পর নাফ নদীর প্রায় চার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীরে বসে আছে সহায় সম্বলহীন কয়েক হাজার মানুষ। তারা যাতে কক্সবাজারের ভেতরে ঢুকতে না পারে সেজন্য সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি। আগের রাতে অনুপ্রবেশের চেষ্টার সময় আটক ১৪৬ জনকে ফেরত পাঠানো হয়েছে মিয়ানমারে।

মিয়ানমার সরকারের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতের ওই হামলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১২ সদস্যসহ অন্তত ৭১ জন নিহত হয়েছে।

সহিংস এ পরিস্থিতির মধ্যে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা এক রোহিঙ্গা নারী দাবি করেছেন, সেখানকার সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে রাতের আঁধারে কালো আর মিলিটারির পোশাক পরা ব্যক্তিরা গুলি চালিয়েছে। গুলি আর বোমা বর্ষণের একপর্যায়ে প্রাণভয়ে নাফ নদী দিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে চলে আসে অনেক নারী-পুরুষ।

মিয়ানমার থেকে আসা এক বয়স্ক ব্যক্তি জানান, ঘটনার দিন রাত ১২টার পর কিছু সময় বিরতি ছিল। পরে রাত ৩টা থেকে আবারও গোলাগুলি শুরু হয়, চলে ভোর পর্যন্ত। এরপরও থেমে থেমে গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ফলে অন্য সবার মতো প্রাণভয়ে পালিয়েছেন তাঁরা।

গুলিবর্ষণকারী সৈন্যরা কেমন পোশাকে এসেছিলেন জানতে চাইলে মধ্যবয়সী এক রোহিঙ্গা নারী জানান, কিছু এসেছিল কালো পোশাকে। আর কারো কারো পরনে ছিল মিলিটারির (সেনাবাহিনী) পোশাক।

সীমান্তে অবস্থান করা আরেক নারী বলেন, হামলাকারীরা গুলি করছিল। নারীদের অত্যাচারও করছিল। এ ছাড়া পুরুষদের ধরে নিয়ে গিয়ে গুলি করছিল। এই ভয়ে সব রোহিঙ্গা পুরুষরা পালিয়ে যায়। ফলে শিশু আর বৃদ্ধদের নিয়ে বিপদে পড়ে নারীরা। ছিল না খাবারের সংস্থান। পানির মধ্যে বহু গুলি খাওয়া লাশ ভাসতে দেখেছেন বলেও জানালেন তিনি। একপর্যায়ে কোনো রকমে পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন।

আরকে/ডব্লিউএন

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি