ঢাকা, রবিবার   ০৬ জুলাই ২০২৫

ক্যারিবীয়ান অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় ‘ইরমা’র তাণ্ডবে নিহত ১৪

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:০০, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ১৬:১৪, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭

Ekushey Television Ltd.

ঘূর্ণিঝড় ইরমা ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে ক্যারিবীয়ান অঞ্চলে। ঘূর্ণিঝড়টির আঘাতে এই অঞ্চলে ১৪জন নিহত হওয়া খবর পাওয়া গেছে। খবর বিবিসি।

ঘূর্ণিঝড়টি এখন আটলান্টিক মহাসাগরের দ্বীপ রাষ্ট্র হাইতি এবং টুর্ক্স ও ককেস দ্বীপপুঞ্জের দিকে ধেয়ে আসছে। ক্যারাবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পর দ্বীপরাষ্ট্র হাইতি এবং নিচু ভূমির দ্বীপপুঞ্জ টুর্ক্স ও ককেস এর দিকে ধেয়ে যাচ্ছে এই হারিকেন।

দরিদ্রতায় জর্জরিত হাইতিতে বিগত ২০১০ সালের ক্ষয়ক্ষতির ধকল কেটে উঠতে না উঠতেই হারিকেন ইরমা আঘাত হানতে যাচ্ছে। অন্যদিকে, ইরমা ৬মিটার বা ২০ফুট উচু ঢেউ নিয়ে টুর্ক্স ও ককেস-এ আঘাত হানবে বলে জানিয়েছে আমেরিকান আবহাওয়া অধিদপ্তর। এত উচ্চ ঢেউ সম্পন্ন হারিকেন স্বাভাবিকের থেকে অনেক ভয়ংকর।

বিবিসি এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এ অঞ্চলে এখন পর্যন্ত সব থেকে বেশি ভয়াবহ রুপ পাওয়া হারিকেন হচ্ছে হারিকেন ইরমা। এটি ক্যাটাগরি-৫ এর একটি হারিকেন। প্রতি ঘণ্টায় ১৮৫ মাইল বা ২৯০ কিলোমিটার গতিবেগে ধেয়ে আসছে হারিকেন ইরমা।

রেড ক্রস বলছে, ইরমার তাণ্ডবে ইতোমধ্যে ১.২মিলিয়ন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যা মোট ২৬মিলিয়ন মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বিভিন্ন ধরনের রোগ সংক্রমনের আশংকা করা হচ্ছে। নেদারল্যান্ড, ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলতে ত্রাণবাহী জাহাজ পাঠিয়েছে। তবে বৈরি আবহাওয়ার কারণে তা পৌছাতে সমস্যা হচ্ছে। স্থানীয় বন্দর এবং বিমানবন্দরগুলোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

এর আগে এন্টিগুয়া ও বারবুডায় আঘাতের মধ্যে দিয়ে তাণ্ডব শুরু করে ইরমা। বারবুডার প্রধানমন্ত্রী গ্যাস্টন ব্রাউন দেশটিকে বর্তমানে “প্রায় বাস অযোগ্য” বলে উল্লেখ করেন। এরপর আঘাত হানে সেন্ট মার্টিন এবং সেন্ট বার্টস দ্বীপে। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধার দিকে হাইতি এবং টুর্ক্স ও ককেস এ ইরমা আঘাত হানতে পারে বলে জানিয়েছে মার্কিন আবহাওয়া অধিদপ্তর। এরপর এটা কিউবায় আঘাত হানবে। সবশেষে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা রাজ্যে আঘাত হানবে ইরমা।

ইতোমধ্যে হাইতিতে ঝড় শুরু হয়েছে ইরমার প্রভাবে। বেশকিছু ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হাইতির রাজধানী পোর্ট অব প্রিন্সে ঝড়ো বাতাসের সাথে বৃষ্টিও হচ্ছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট জোভেনেল ময়স বলেন, “আঘাতপ্রাপ্ত হতে যাওয়া সম্ভাব্য স্থানের বাসিন্দাদের আমরা নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বলেছি। যদি তারা না সরেন তাহলে ঝড়ের তাণ্ডবে তারা স্রেফ উড়ে যাবেন।”

এদিকে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে টুর্ক্স ও ককেসেও। ৩৫ হাজার লোক বাস করা এই দ্বীপপুঞ্জের সর্বোচ্চ উচ্চতা ৫০মিটার। দ্বীপপুঞ্জের গভর্নর জন ফ্রীম্যান বলেন, “নিচু দ্বীপগুলো থেকে আমরা বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়েছি। আমাদের আশ্রয়গুলোকে প্রস্তুত করছি। নিচু এলাকার মানুষেরা সবথেকে ঝুঁকিতে আছেন।”

দেশটির দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক ভার্জিনিয়া ক্লেভারেক্স বিবিসি’কে বলেন, “দ্বীপ এলাকাগুলো হারিকেনের প্রভাবে হওয়া জ্বলচ্ছাসে তলিয়ে যেতে পারে। আমরা সবাইকে মনে করিয়ে দিচ্ছি যে এটা ক্যাটাগরি-৫ হারিকেন যা এই অঞ্চলের ইতিহাসে সবথেকে ভয়াবহ হারিকেন।”

অন্যদিকে ইরমা মোকাবেলায় প্রস্তুত হচ্ছে ফ্লোরিডাও। আগামী রবিবার ক্যাটাগরি-৪ হয়ে ফ্লোরিডায় আঘাত হানবে এই হারিকেন। সাথে থাকবে জড়, বন্যা ও জ্বলচ্ছাস। ফ্লোরিডার গভর্নর রিক স্কট বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকে বলেন, “আপনারা যদি হারিকেনটির আকার দেখেন তাহলে বুঝবেন এটা কতটা ভয়াবহ। আমাদের পুরো রাজ্যের থেকে এটি আয়তনে বড়।”

মার্কিন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “আমি এটাই বলতে পারি যে, এমন পরিস্থিতে যতটুকু প্রস্তুতি নেয়া যায় ফ্লোরিডা তা নিয়ে রেখেছে। এখন প্রশ্ন হল কী হয়?” ইতোমধ্যে স্থানীয় বাসিন্দাদের এবং পর্যটকদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেবার কাজ শুরু হয়েছে। বিমান বন্দরে বিমান চলাচল স্থগিত রাখা হয়েছে তবে বাণিজ্যিক বিমান শনিবার স্থানীয় সময় বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলবে।”

হারিকেন ইরমা শেষ হবার আগেই এর পিছনে আন্টলান্টিক মহাসাগরে আরেকটি হারিকেনের সৃষ্টি হয়েছে। এখন পর্যন্ত ক্যাটাগরি-৩ এর আকার পেয়েছে হারিকেন “জোস।” ইরমার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতেই আঘাত হানতে পারে হারিকেন জোস।

এসএইচ/টিকে


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি