ঢাকা, শুক্রবার   ১৭ মে ২০২৪

রাশিয়া ইস্যুতে ট্রাম্পের সাবেক উপদেষ্টার ১৪ দিনের জেল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:২৪, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাবেক উপদেষ্টা জর্জ পাপাডোপোলাসকে ১৪ দিনের কারাবাসের সাজা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের আদালত। ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ান সংশ্লিষ্টতার ইস্যুতে এফবিআই’কে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার জন্য এই সাজা হয় জর্জের।

মার্কিন নির্বাচনে রাশিয়ান হস্তক্ষেপের বিতর্কে ট্রাম্পের সহযোগিদের মধ্যে সর্বপ্রথম আটক হন জর্জ পাপাডোপোলাস। সেই নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে বৈদেশিক নীতি বিষয়ক পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন জর্জ। নির্বাচনের পর রাশিয়া বিতর্ক উঠে আসলে তাকে আটক করে দেশটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই।

যা করেছিলেন জর্জ পাপাডোপোলাস

মামলার নথি অনুযায়ী, জর্জ আদালতকে জানান, ট্রাম্পের বৈদেশিক নীতি বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর জোসেফ মিফসুদ নামের এক মাল্টিজ অধ্যাপকের সাথে সাক্ষাৎ হয় তার। এই অধ্যাপক জর্জকে জানান যে, তার কাছে হিলারি ক্লিনটন সম্পর্কে বেশকিছু ‘আবর্জনা’ আছে। হিলারির বিপক্ষে হাজারো ই-মেইল আছে যা নির্বাচনে হিলারিকে বিপদে ফেলতে পারে বলে জানান ঐ অধ্যাপক। হিলারি ক্লিনটন নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক দলের হয় ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলেন।

এই ঘটনার পরপরই জর্জ ট্রাম্প, অন্য আরেক রিপাবলিকান সিনেটর এবং ট্রাম্পের নির্বাচনী দলকে জানান যে, তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্রাদিমির পুতিনের সাথে ট্রাম্পের সাক্ষাৎ করানোর ‘ব্যবস্থা’ করতে পারেন।

মামলায় সাজা ঘোষণার আগে এক লিখিত বক্তব্যে জর্জ দাবি করেন, রুশ প্রেসিডেন্টের সাথে এই সাক্ষাতের বিষয়ে ‘অনেকটাই ইতিবাচক’ ছিলেন ট্রাম্প। বিষয়টি নিয়ে আরও চিন্তাভাবনা করার জন্য সেসময়ের রিপাবলিকান সিনেটর এবং বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নী জেনারেল জেফ সেশনকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন ট্রাম্প। গতকাল শুক্রবার সিএনএন’কে দেওয়া এক সাক্ষাতকারেও এমনটাই বলেন জর্জ।

তবে জর্জের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন বলে গত নভেম্বরে মার্কিন কংগ্রেসকে জানিয়েছেন জেফ সেশনস। এছাড়াও রাশিয়ান সরকারের সাথে সরাসরি যোগাযোগ আছে এমন এক নারী ও অন্য আরেক পুরুষ ব্যক্তির সাথেও সাক্ষাৎ করেছিলেন জর্জ পাপাডোপোলাস।

যেভাবে ফাঁস হলো

লন্ডনে একটি পাবে মদ্যপ অবস্থায় অস্ট্রেলিয়ান এক কূটনৈতিককে এই পুরো কাহিনী বলে দেন জর্জ পাপাডোপোলাস। আর অস্ট্রেলিয়ান ঐ কূটনৈতিক সব ফাঁস করে দেন এফবিআই কর্মকর্তাদের কাছে। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে, রাশিয়ানদের সাথে সাক্ষাৎ নিয়ে জর্জকে এফবিআই প্রশ্ন করলে তদন্তকারীদের মিথ্যা ও ভুল তথ্য দেন ৩১ বছর বয়সী ট্রাম্পের সাবেক এই উপদেষ্টা।

জর্জ দাবি করেন, রুশদের সাথে তার সাক্ষাৎ ট্রাম্পের উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আগে হয়েছিলো। কিন্তু পরবর্তীতে তদন্তে প্রমাণিত হয় যে, ট্রাম্পের উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পরই এসব সাক্ষাৎ করেন তিনি। আর তদন্ত দলকে এমন মিথ্যা ও ভুল তথ্য দেওয়ার জন্যই সাজা হয় জর্জের।

পুরো সাজা

মামলার রায়ে ১৪ দিন সাজা হলেও এর সাথে জর্জকে দেখাতে হয়েছে যে, বিগত ১২ মাস কর্তৃপক্ষের নজরদাড়িতে জামিনে মুক্ত ছিলেন তিনি। এছাড়াও সাড়ে নয় হাজার মার্কিন ডলারের আর্থিক জরিমানা এবং দুইশ ঘন্টা সমাজ সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করবেন এমন শর্তে কম মেয়াদে কারাবাসের সাজা হয় জর্জের।

যে যা বললেন

আদালতে নিজেকে একজন ‘দেশপ্রেমিক আমেরিকান’ হিসেবে দাবি করেন জর্জ। তবে একটি ‘মিথ্যা’ বলার দোষ স্বীকার করেন তিনি। এই ঘটনায় তার জীবন পুরো ‘শেষ’ হয়ে গেছে উল্লেখ করে নিজেকে শুধরানোর জন্য ‘দ্বিতীয় সুযোগ’ এর আবেদন করেন তিনি।

আর জর্জকে ‘বোকা’ বলে উল্লেখ করেছেন তার আইনজীবী থমাস ব্রিন। তবে রুশ সংশ্লিষ্টতার ইস্যুতে তদন্ত দলকে সবথেকে ট্রাম্প সবথেকে বেশি ‘বিভ্রান্ত’ করেছেন বলে সাংবাদিকদের বলেন থমাস।

অন্যদিকে জর্জের এই সাজা হওয়ার পর টুইট করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই তদন্তে ২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ হয়েছে উল্লেখ করে ব্যঙ্গাত্মক এক টুইটে তিনি লেখেন, “২৮ মিলিয়নের জন্য ১৪ দিন – প্রতিদিন দুই মিলিয়ন- কোন ঝগড়া নয়। আমেরিকার জন্য এক মহান দিন”।

সূত্রঃ বিবিসি

//এস এইচ এস//

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি