ঢাকা, রবিবার   ১৩ জুলাই ২০২৫

সু চি’র জগন্য আচরণে হতাশ আনোয়ার ইব্রাহিম  

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:০৪, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

মালয়েশিয়ার পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম রোহিঙ্গাদের নিয়ে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি’র আচরণে গভীর হতাশা প্রকাশ করেছেন। হংকং-এ যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল ব্লুমবার্গকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আনোয়ার বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রতি সু চি’র আচরণে তিনি মর্মাহত। এ ধরনের আচরণকে `জঘন্য` আখ্যা দিয়েছেন আনোয়ার।   

মিয়ানমার সেনাবাহিনী গত বছরের আগস্টে রাখাইনে পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা শুরু করে রোহিঙ্গাদের ওপর। নিপীড়নের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে সাত লাখ রোহিঙ্গা। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ওই অভিযানে জাতিগত নিধনযজ্ঞের আলামত পেয়েছে। একে গণহত্যার শামিল বলেছে জাতিসংঘ। মিয়ানমারে সেনা অভিযানের বিষয়ে নীরব থাকায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমালোচনার মুখে পড়েন দেশটির ডি ফ্যাক্টো সরকারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা ও নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী নেত্রী অং সান সু চি। ওই নীরবতার অভিযোগে এরই মধ্যে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও সংগঠন তাকে দেওয়া সম্মাননা বাতিল করেছে।

ভাগাভাগি করে প্রধানমন্ত্রিত্ব করাজনিত সমঝোতার অংশ হিসেবে এক দুই বছরের মধ্যেই আনোয়ার ইব্রাহিমের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন মালয়েশিয়ার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর) হংকংয়ে ব্লুমবার্গ টেলিভিশনকে সাক্ষাৎকার দেন আনোয়ার। সেসময় রোহিঙ্গা প্রশ্নে সু চি’র নীরব ভূমিকা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন মালয়েশিয়ার পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।

আনোয়ার বলেন, ‘এসব দিনগুলোতে সু চি’র আচরণে আমি মর্মাহত হয়েছি। বৌদ্ধ, মুসলিম, খ্রিস্টান নির্বিশেষে সবাই তাকে সমর্থন দিয়েছে। তাহলে কেন তিনি সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডকে দেখেও না দেখার ভান করছেন?’

রোহিঙ্গা প্রশ্নে সু চি’র আচরণকে ‘জঘন্য`’ আখ্যা দেওয়াটাকে সবচেয়ে যথার্থ বলে মনে করেন আনোয়ার। ‘হত্যা বন্ধ কর’ এতোটুকু বলার জন্যও সু চি প্রস্তুত ছিলেন না উল্লেখ করে আক্ষেপ জানান মালয়েশিয়ার এ হবু প্রধানমন্ত্রী।

ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়, শান্তিতে নোবেলজয়ী সু চিকে এভাবে আক্রমণ করে কথা বলাটা তার প্রতি আনোয়ার ইব্রাহিমের ব্যক্তিগত অভিমানেরই বহিঃপ্রকাশ। কারণ, কিছু ক্ষেত্রে তাদের দুজনের মিল ছিল। এশিয়ার খ্যাতনামা রাজবন্দিদের মধ্যে তারা দুইজনও অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। বার বারই তারা দেশের সরকার পক্ষের দমন-পীড়নের শিকার হয়েছেন। এ বছর মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত নির্বাচনের আগ পর্যন্ত কারাগারে ছিলেন আনোয়ার। নাজিব রাজাকের দল বারিসান ন্যাশনালের ছয় দশকের শাসনের অবসান ঘটিয়ে আনোয়ার ও মাহাথিরের জোট ক্ষমতায় আসার পর গত মে মাসে মুক্তি পান তিনি।

২০১২ সালে একটি নির্বাচনে জয় পাওয়ার জন্য সু চিকে অভিবাদন জানিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন আনোয়ারের স্ত্রী ও মালয়েশিয়ার বর্তমান উপ প্রধানমন্ত্রী ওয়ান আজিজাহ ওয়ান ইসমাইল। রোহিঙ্গাদের সহায়তায় কাজ করার জন্য সু চি’র প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি।

ব্লুমবার্গ জানায়, সু চি সম্পর্কে আনোয়ার ইব্রাহিমের মন্তব্য নিয়ে তার মুখপাত্র জ হটে’র সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করা যায়নি।

এসি  

 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি