ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪

মৃত্যুর আগে নোটে যা লিখেছিলেন পৃথিবীখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৫২, ২৭ জানুয়ারি ২০২০ | আপডেট: ১৩:১৫, ২৭ জানুয়ারি ২০২০

পৃথিবীর বিখ্যাত ব্লগার, লেখক ও ফ্যাশন ডিজাইনার কিরজেইডা রডরিগুয়েজ। মাত্র ৪০ বৎসর বয়সে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। কিরজেইডা রডরিগুয়েজ ছিলেন শত শত কোটি টাকার মালিক। তিনি সব সম্পদ পৃথিবীতে রেখে খালি হাতে পরলোকগমন করেছেন। 

পৃথিবীর আরেক বিখ্যাত ব্যাক্তি স্টিভ জবস ছিলেন টেকনোলজির আইকন। তেমনি কিরজেইডা ছিলেন ফ্যাশন দুনিয়ার আইকন। দুজনের শরীরেই ক্যান্সার ঘর বাঁধে, দুজনেরই অকাল মৃত্য হয় এবং দুজনেই প্রচুর ধনসম্পদ রেখে যান। স্টিভ জবসের মতো কিরজেইডা ক্যান্সরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর আগে জীবনটাকে গভীরভাবে অনুভব করেছেন। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে তিনি একটি নোট লিখেন- 

১.পৃথিবীর সবচেয়ে দামী ব্রান্ডের গাড়িটি আমার গ্যারাজে পড়ে আছে। কিন্তু আমাকে বসে থাকতে হয় হুইল চেয়ারে।

২. সব রকমের ডিজাইনের কাপড়, জুতো, দামি জিনিসে আমার গৃহ ভরপুর। কিন্তু আমার শরীর ঢাকা থাকে হাসপাতালের দেয়া সামান্য একটা চাদরে।

৩. ব্যাংক ভর্তি আমার টাকা। কিন্তু সেই টাকা এখন আর আমার কোনো কাজে লাগে না।

৪. প্রাসাদের মতো আমার গৃহ কিন্তু আমি শুয়ে আছি হাসপাতালের টুইন সাইজের একটা বিছানায়।

৫. এক ফাইভ স্টার হোটেল থেকে আরেক ফাইভ স্টার হোটলে আমি ঘুরে বেড়াতাম। কিন্তু এখন আমার সময় কাটে হাসপাতালের এক পরীক্ষাগার থেকে আরেক পরীক্ষাগারে।

৬. শত শত মানুষকে আমি অটোগ্রাফ দিয়েছি- আর আজ ডাক্তারের লেখা প্রেসক্রিপশানটাই আমার অটোগ্রাফ।

৭. আমার চুলের সাজের জন্য সাতজন বিউটিশিয়ান ছিলো-আজ আমার মাথায় কোনো চুলই নেই।

৮. ব্যক্তিগত জেটে আমি যেখানে খুশী, সেখানেই উড়ে যেতে পারতাম। কিন্তু হাসপাতালের বারান্দায় যেতেও এখন আমার দুজন মানুষের সাহায্য নিতে হয়।

৯. পৃথিবীব্যাপী ভরপুর নানা খাবার থাকলেও দিনে দুটো পিল আর রাতে কয়েক ফোঁটা স্যালাইন আমার খাবার।

এই গৃহ, এই গাড়ী, এই জেট, এই আসবাবপত্র, এতো এতো ব্যাংক একাউন্ট, এতো সুনাম আর এতো খ্যাতি এগুলোর কোনো কিছুই আমার আর কোনো কাজে আসছে না। এগুলোর কোনো কিছুই আমাকে একটু আরাম দিতে পারছে না।

শুধু দিতে পারছে- ‘প্রিয় কিছু মানুষের মুখ, আর তাদের স্পর্শ।’
মৃত্যুর চেয়ে চরম সত্যি আর কিছু নেই।

সুতরাং বিত্ত, বৈভব এসব নাই বলে যেন আপনার/আমার অনুশোচনা না হয় এবং এসব না থাকায় কেউ কাউকে যেন অবজ্ঞা না করে। বরং আপনার যা আছে তাই যেন আপনাকে সুখী করে। মাথার ওপর যদি একটা ছাদ থাকে তাই যথেষ্ট। ছাদের নীচে কত দামী আসবাবপত্র আছে সেটা মূখ্য নয়। দামী গাড়ী, দামী যেকোনো বাহনের চেয়ে নিজের পা দুখানা যদি সচল থাকে সেটাই আসল ব্যাপার। আর বস্তুগত জিনিস যত মূল্যবান হোক না কেন- তার কোনো মূল্য নেই যদি ভালোবাসা, মায়া, মমতা, পারষ্পরিক সহমর্মিতা না থাকে। 

আপন মানুষগুলোকে কোনোদিন অবহেলা, তুচ্ছ করতে নেই। বরং যত বেশি পারো তাদের সঙ্গ উপভোগ কর। কারণ- এমন একটি সময় আসবে যেদিন টাকা-পয়সা, ধন-দৌলতের চেয়ে তাদেরকেই বেশি দরকার হবে। আর একদিন হঠাৎ করে দেখবে তাদেরও কেউ কেউ আর নেই-ওরাও এক অন্য দুনিয়ায় চলে গেছে।

এমবি/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি