আজ ভোট
প্রকাশিত : ০০:০০, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ | আপডেট: ১৩:০৪, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮
আজ রোববার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। সারা দেশে ২৯৯ আসনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এ ভোটগ্রহণ। অনেকেই মনে করেছিল জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন থেকে সরে যেতে পারে। কিন্তু সব দলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
গাইবান্ধা-৩ আসনের ভোট স্থগিত করা হয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী মারা যাওয়ায়। ফলে আজ ২৯৯ আসনে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। এবারের নির্বাচনে বিভিন্ন জরিপে আওয়ামী লীগ এগিয়ে রয়েছে। আওয়ামী লীগ নির্বাচনে জয়লাভ করবে বলে বিভিন্ন সংস্থার জরিপে উঠে এসেছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমেও এমন সংবাদ হয়েছে।
এরই মধ্যে ভোটকেন্দ্র এবং নির্বাচনি এলাকায় কাজ শুরু করেছে সেনাবাহিনী ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স। সব মিলিয়ে নিয়োজিত ফোর্সের সদস্য সংখ্যা ছয় লাখ ৮ হাজার।
সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেছেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারাদেশে সেনাবাহিনীর ৫০ হাজার সদস্য মোতায়েন রয়েছে। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে আরও সেনাসদস্য নিয়োজিত করার জন্য স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে।’
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ঢাকাসহ সারাদেশে আরও একশ’ ১১ প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ভোটের মাঠে ১ হাজার ১২৭ প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়।
নৌবাহিনী ৪৮ প্লাটুন, কোস্ট গার্ড ৪২ প্লাটুন, র্যাব ৬০০ প্লাটুন ও মোবাইল ও স্টাইকিং ফোর্স প্রায় দুই হাজার প্লাটুন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, এবারের নির্বাচনে এক হাজার ৮৬১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নিবন্ধিত ৩৯টি রাজনৈতিক দলের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী এক হাজার ৭৩৩ জন। স্বতন্ত্র প্রার্থী ১২৮ জন।
মোট ৪০ হাজার ১৮৩টি কেন্দ্রে ভোট দিবেন ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৭ জন ভোটার। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ কোটি ২৫ লাখ ৭২ হাজার ৩৬৫ জন এবং নারী ভোটার ৫ কোটি ১৬ লাখ ৬৬ হাজার ৩১২ জন।
তবে, দেশের প্রায় ২২ শতাংশ ভোটারের বয়স ১৮ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে। এসব তরুণের বড় অংশ, প্রায় ১ কোটি ২৩ লাখ এবারই প্রথম ভোট দেবেন।
ইসি সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানান, নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসার ৪০ হাজার ১৮৩ জন, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ২ লাখ ৭ হাজার ৩১২ জন এবং পোলিং অফিসার ৪ লাখ ১৪ হাজার ৬২৪ জন দায়িত্ব পালন করবেন।
নির্বাচনি মাঠে সব মিলিয়ে ৬ লাখ ৮ হাজার নিয়োজিত ফোর্স দায়িত্ব পালন করবেন। এর মধ্যে এক হাজার ৩২৮ জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৬৪০ জন। এছাড়া দেশি ৮১টি সংস্থার ২৫ হাজার ৯০০ জন এবং বিদেশি সংস্থার ৩৮ জন পর্যবেক্ষক কাজ করবেন।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্রে জানা গেছে, ২৯৯ আসনের চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বীর যে তালিকা করেছে, তাতে দেখা যায়—মহাজোটের প্রধান শরিক আওয়ামী লীগ লড়ছে ২৬০টি আসনে। দলটি শরিকদের সঙ্গে নৌকা নিয়ে লড়ছে ২৭২টি আসনে। বাকি আসনে শরিকেরা নিজেদের প্রতীক নিয়ে লড়ছে। শুক্রবার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ মহাজোটের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করার জন্য তার দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। মহাজোটের বাইরে জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের সরে দাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন এরশাদ শুক্রবার।
প্রথমবারের মতো ঢাকা-৬ ও ১৩ আসনসহ রংপুর-৩, খুলনা-২, সাতক্ষীরা-২ এবং চট্টগ্রাম-৯ আসনে ২১ লাখ ২৪ হাজার ৫৫৪ জন ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দিবেন।
সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সবাইকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা।
তিনি বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বিরা যাতে কোনোভাবেই আক্রান্ত না হয়, সেদিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে।
নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের উদ্বেগ উড়িয়ে দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা।
এদিকে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা শনিবার বিকাল ৩টায় নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘এজেন্টরা প্রার্থীর প্রতিনিধিত্ব করেন। তারা তাদের স্বার্থে কাজ করেন। নির্বাচনের ফল হাতে না পাওয়ার আগে কোনও অবস্থাতে তারা কেন্দ্র ত্যাগ করবেন না। কেউ যদি অবৈধভাবে এজেন্টকে কক্ষ ত্যাগ করতে বলে, তাহলে ম্যাজিস্ট্রেট বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নিতে হবে।’
এসএইচ/
আরও পড়ুন