ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪

দুটি ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি, কত ঝুঁকিতে বাংলাদেশ? (ভিডিও)

মফিউর রহমান, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৪৯, ২৪ মে ২০২৩

এ মাসে বাংলাদেশ অভিমুখে আর কোনো ঘূর্ণিঝড় আসার আশঙ্কা করছেন না আবহাওয়াবিদরা। তারা বলছেন, নিরক্ষ রেখার কাছে দুটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলেও উত্তর গোলার্ধের ঝড় দক্ষিণে যাবে না, আর দক্ষিণ গোলার্ধের ঝড়ও উত্তরে আসবে না। তাই ভারত মাহাসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘ফাবিন’ নিয়েও শঙ্কা নেই।

সাধারণত অক্টোবর-নভেম্বর এবং মার্চ থেকে মে পর্যন্ত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় হয়ে থাকে। অঞ্চলভেদে এ ঝড়ের নাম সইক্লোন, টাইফুন বা হারিকেন। ভৌগলিকভাবে পৃথিবীর ৩০ ডিগ্রি উত্তর এবং ৩০ ডিগ্রি দক্ষিণ অক্ষাংশের মধ্যবর্তী অঞ্চলসমূহ গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চল। বছরে এ অঞ্চলে গড়ে ৮০টি ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হয়।  

একই সময়ে উত্তর-দক্ষিণ উভয় গোলার্ধে সৃষ্টি হতে পারে একাধিক ঘুর্ণিঝড়। ঘূর্ণন গতি আলাদা হওয়ায় উত্তরের ঝড় দক্ষিণে বা দক্ষিণের ঝড় উত্তরে যায় না। 

এখন ভারত মহাসাগরের দক্ষিণ গোলার্ধে ‘ফাবিন’ এবং উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরে ‘মাওয়ার’ নামে দুটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছে। ফাবিন দক্ষিণ গোলার্ধে হওয়ায় এর গতি ঘটির কাঁটার অভিমুখে। তাই এটি বঙ্গোপসাগর পার হয়ে আসবে না। যাবে দক্ষিণ দিকে। এর উৎপত্তি স্থলের আশপাশে কোন দেশ না থাকায় এটি সাগরেই বিলিন হয়ে যাবে বলছেন আবহাওয়াবিদরা। 

বাংলাদেশ আবহওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুর রহমান খান বলেন, “ফাবিন তৈরি হয়েছে দক্ষিণ গোলার্ধে, এটা নিয়ে অতো মাথাব্যাথা নেই আমাদের। দক্ষিণ গোলার্ধের কোনো সৃষ্টি আমাদের উত্তর গোলার্ধে আসেনি।”

এদিকে, উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মাওয়ার’ গুয়াম দ্বীপ, রোটা দ্বীপপুঞ্জ এবং স্পেন উপকূলের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। এটি উত্তর গোলার্ধের হওয়ায় এর ঘূর্ণন গতি ঘড়ির কাঁটার বিপরিত দিকে। 

ঘুর্ণিঝড় সৃষ্টি হয় যখন সাগরের তাপমাত্রা ২৬ থেকে ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি থাকে। তবে বর্ষা ও শীতকালে তাপমাত্রা কম থাকায় এসময়ে ঘূর্ণিঝড়ের প্রবণতা দেখা যায় না।   

মো. আব্দুর রহমান খান বলেন, “মে মাসের পর সাইক্লোন হওয়ার হার খুবই কম। কারণ তার যে প্যারামিটারগুলো লাগবে জেনেসিস তৈরি করার জন্য সেগুলো আর পায় না। সাইক্লোনে রূপ নেওয়ার সম্ভাবনা নেই। এ সময়ে নিম্নচাপ হতে পারে, আপাতত সাইক্লোন হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।”

এছাড়াও গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলসমূহে কালবৈশাখির মতো ঝড় বা টর্নেডো হতে পারে। এটির উৎপত্তি নদী বা স্থলভাগে হয়ে থাকে। সাধারণত সকাল বা বিকালের দিকে আঘাত হানে কালবৈশাখী। এর স্থায়িত্ব হয় ১ থেকে ২ ঘন্টা। 

কালবৈশাখি ঝড়ে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়। বজ্রপাত হয় বিধায় ঘটে প্রাণহানিও। তাই কৃষকদের ফসল রক্ষার পাশাপাশি নিজেদেরও নিরাপত্তায় সচেতন থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন আবহাওয়াবিদরা। 

আবহাওয়াবিদ  মো. আব্দুর রহমান খান বলেন, “পাকা ধানের উপর দিয়ে কালবৈশাখী বয়ে যায় তাহলে ধানগুলো ফেলে দিবে, গাছপালাগুলো ভেঙে ফেলবে, টিনের ঘর বা কাঁচাঘরগুলো উড়িয়ে ফেলবে। এ মাসের ২৬-২৭ তারিখের মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে কালবৈশাখী হতে থাকবে।”

ঘূর্ণিঝড় বা কালবৈশাখি যেকোন ঝড়ের বিষয়ে স্থানীয় আবহাওয়া অফিসের সতর্ক সংকেত মানার কথাও বলেন আবহাওয়াবিদরা। 

এএইচ


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি