ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০৩ জুলাই ২০২৫

প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য হচ্ছে একটি উন্নত জাতি গঠন: তথ্যমন্ত্রী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:৪৩, ৬ ডিসেম্বর ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লক্ষ্য হচ্ছে, বস্তুগত উন্নয়নের মাধ্যমে উন্নত দেশ গঠনের পাশাপাশি একটি উন্নত জাতিও গঠন করা।

আর উন্নত জাতি গঠন করার জন্য মেধা-মূল্যবোধ, দেশাত্ববোধ, মমত্ববোধের সমন্বয় প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বস্তুগত উন্নয়নের পাশাপাশি উন্নতজাতি গঠনে মানুষের আত্মিক উন্নয়ন প্রয়োজন। এটি ছাড়া শুধু বস্তুগত উন্নয়ন দিয়ে খুব বেশিদুর এগিয়ে যাওয়া যাবে না।

আজ শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

চুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগেরে সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন।

হাছান মাহমুদ বলেন, বস্তুগত উন্নয়নের মাধ্যমে শুধু উন্নত দেশ গঠন করা সম্ভব, সুরম্য অট্টালিকা হয়। সুরম্য সেতু হয়, নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল নির্মাণ করা যায়, ফ্লাইওভার করা যায়, পাহাড়ের মাঝখান দিয়ে ফুটো করে পথে রেল চলে। উন্নত জাতি গঠন করা ভিন্ন কাজ।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে দুটি স্বপ্নের কথা বলেছিলেন। একটি হচ্ছে দিনবদল, আরেকটি হলো ডিজিটাল বাংলাদেশ। আজকে দিনবদল হয়েছে, এখন দেশের কোন শহরের অলিগলিতে কিংবা গ্রামের মেঠোপথে ‘মা আমাকে একটু বাসি ভাত দেন’ এই ডাক শোনা যায়না।

তিনি বলেন, এখন কবিতায় কুঁড়েঘর আছে বাস্তবে কুঁড়েঘর খুঁজে পাওয়া যায়না। আকাশ থেকে চট্টগ্রাম ও ঢাকা শহর চেনা যায়না। একইসাথে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নও পূরণ হয়েছে। ১৬ কোটি মানুষের দেশে ১৫ কোটি মোবাইল সিম ব্যবহারকারী রয়েছে। মোবাইল ফোনে শুধু কথা বলা যায়না, ভিডিও কল করা যায়। দেশের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে টাকা পৌঁছে যায়।

‘ভোলার মনপুরা থেকে কৃষক ভাই জমিতে দাঁড়িয়ে পোকার ছবি তুলে সদরের কৃষি অফিসারের কাছে পাঠিয়ে সরাসরি পরামর্শ নেন পোকা দমনে কোন ওষুধ দিতে হবে। দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে টেলিমেডিসিন সেবা নিচ্ছে সাধারণ মানুষ। এসব সম্ভব হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণের কারণে।’

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে রূপান্তর করার স্বপ্নের কথা বলেছেন। আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা হবে দেশকে সেই স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছানো শুধু নয়, দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন ও উন্নত জাতি গঠনের ক্ষেত্রেও স্বপ্নের ঠিকানাকে অতিক্রম করতে চাওয়া।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলছে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের পথে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ এখন স্বল্পোন্নত দেশ নয়, মধ্যম আয়ের দেশ। পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। এদেশে মাথাপিছু কৃষিজমির পরিমাণ পৃথিবীতে সর্বনিম্ন। ৫০এর দশকের মাঝামাঝি যখন লোকসংখ্যা ছিল ৪ কোটি ৭০ লাখ তখন খাদ্য ঘাটতি শুরু হয়। আজকে লোকসংখ্যা ১৬ কোটি ৭০ লাখ ছাড়িয়েছে। লোকসংখ্যা সাড়ে তিনগুণের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। মাথাপিছু কৃষি জমি কমেছে ৩০ শতাংশ। এরপরও বাংলাদেশ আজকে পৃথিবীকে অবাক করে দিয়ে খাদ্যে উদ্বৃত্তের দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। ’

গত সাড়ে দশ বছরে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় সবচেয়ে জিডিপি গ্রোথ রেট বাংলাদেশের ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রকৌশলীদের অবদান ও ভূমিকা না থাকলে এই উন্নয়ন অগ্রগতি কখনো সম্ভব হতোনা ।

তিনি বলেন, বৈশ্বিকভাবে আমরা বাঙালিরা হয়তো ধনি নই, কিন্তু মেধার দিক দিয়ে পৃথিবীর অনেক দেশ ও জাতি থেকে আমরা ধনী। পৃথিবীর অনেক দেশ ও জাতিগোষ্ঠির তুলনায় আমরা মেধাবী। ইউরোপের বাইরে প্রথম যিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান তিনি কবি গুরু রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর, গাছের যে প্রাণ আছে তা প্রথম যিনি আবিস্কার করেন তিনি বাঙালি স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু, পৃথিবীর সর্বোচ্চ ভবন শিকাগোর চিয়ার্স টাওয়ারের স্থপতি বাঙালি ড. এফ আর খাঁন।

বর্তমানেও পৃথিবীর অনেক সুরম্য অট্টালিকা নির্মাণে বাংলাদেশ থেকে পাস করা প্রকৌশলীরা যুক্ত আছেন উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের প্রকৌশলীরা শুধু দেশে মেধার স্বাক্ষর রাখছেন তা নয়, তারা বিশ্বব্যাপী মেধার স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হয়েছেন। গত ৫১ বছর ধরে চুয়েট যাদের প্রকৌশলী হিসেবে তৈরি করেছে তারা আজকে পৃথিবীব্যাপী অবদান রাখছেন বলে জানান তথ্যমন্ত্রী ।

এসি
 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি