ঢাকা, মঙ্গলবার   ৩০ এপ্রিল ২০২৪

লড়াইয়ের অপেক্ষায় দুই এলএম টেন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:৩৫, ১৩ ডিসেম্বর ২০২২

আর্জেন্টিনার লিওনেল মেসি, ক্রোয়েশিয়ার লুকা মদ্রিচ দুজনেই নিজ নিজ দলের পার্থক্য গড়ে দেয়া সুপারস্টার। আজ (মঙ্গলবার) রাতে কাতার বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনাল, মুখোমুখি হচ্ছে আর্জেন্টিনা ও ক্রোয়েশিয়া। মোখোমুখি হচ্ছেন দুই তারকা ফুটবলার মেসি-মদ্রিচ। 

গত বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়া যখন ফাইনালে উঠেছিল, অনেকের মতেই সেটা ছিল অপ্রত্যাশিত এবং অনন্য। এবার ক্রোয়েশিয়া আবারও ফাইনালের পথে।

অন্যদিকে আর্জেন্টিনা সৌদি আরবের বিপক্ষে অপ্রত্যাশিত এক হারের পর আরও ক্ষুরধার, আর ও শক্তিশালী।

টুর্নামেন্টের আগে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জয়ের জন্য ফেভারিট ধরা হয়েছিল। লিওনেল মেসিরা তার প্রমাণ দিয়েছেন।

সেমিফাইনালের আগে আলোচনায় আছেন মেসি ও মদ্রিচ।

লিওনেল মেসি ও লুকা মদ্রিচ - দুজন এলএম টেন, পড়েন দশ নম্বর জার্সি, দুজনই ব্যালন ডি অর জয়ী, দুজনেরই আগে বিশ্বকাপে ফাইনালে খেলে হারার অভিজ্ঞতা আছে, দুজনই নিজেদের দলের মূল ফুটবলার এবং অধিনায়ক।

দুজনের সামনেই সুযোগ আরও একবার বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলা এবং এবার না পাওয়া সোনালি শিরোপা নিজেদের করে নেয়ার।

মেসি এবার নেতৃত্ব দিচ্ছেন সামনে থেকে। গোল করছেন এবং করাচ্ছেন। প্রতিপক্ষের ফুটবলার, কোচকে সুযোগ পেলে এক হাত দেখে নিচ্ছেন। রেফারির সাথে তর্কে জড়াচ্ছেন।

মদ্রিচ একটু নিচে নেমে খেলছেন।তার খেলা ক্রোয়েশিয়ার ইঞ্জিন হিসেবে কাজ করছে।

মদ্রিচ ব্রাজিলের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে প্রায়ই রক্ষণভাগে নেমে খেলেছেন।

যে গোলে ক্রোয়েশিয়া সমতায় ফিরেছিল সেই গোলেও মদ্রিচের লম্বা পাসের অবদান ছিল।

মেসির বয়স ৩৫, মদ্রিচের ৩৭। কাতারের এই বিশ্বকাপেই তারা সম্ভবত ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ ম্যাচ খেলে ফেলবেন।

মেসির দলে থাকাটাই সুবিধা, এমনটা মনে করেন আর্জেন্টিনার ডিফেন্ডার নিকোলাস ট্যাগ্লিয়াফিকো।

আর্জেন্টিনা চলতি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠতে মোট নয় গোল করেছে, যার মধ্যে ছয়টিতে লিওনেল মেসির প্রত্যক্ষ অবদান আছে। চারটি নিজে করেছেন, দুটি করিয়েছেন। 

এর মধ্যে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে মলিনাকে দিয়ে যে গোল করালেন মেসি, বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা এসিস্ট ছিল এটা।

ট্যাগ্লিয়াফিকো মনে করেন, মেসি দলের নেতা এবং তিনিই গোটা দলের জন্য অনুপ্রেরণা।

মেসির পঞ্চম বিশ্বকাপ এটি, এবারে মেসি চাইবেন তার দেশের ফুটবল ইতিহাসে নায়ক হয়ে থাকতে।

ডিয়েগো ম্যারাডোনা ১৯৮৬ সালে বিশ্বকাপ জয়ের পর আর্জেন্টিনা আর জেতেনি। মেসির জন্য এটাই শেষ সুযোগ সম্ভবত। 

আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি গোলের তালিকায় ১০ গোল নিয়ে গ্যাব্রিয়েল বাতিস্ততার সাথে আছেন যৌথভাবে শীর্ষে মেসি।

মেসির জন্য এবার বাড়তি পাওনা আর্জেন্টিনা দারুণ একটি দল নিয়ে এবার বিশ্বকাপ খেলতে এসেছে, যারা বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন দেখছে।

মিডফিল্ডে আছেন রদ্রিগো ডি পল, দুই ধারে মলিনা ও একুনিয়া, ডিফেন্সে লিজান্দ্রো মার্টিনেজ ও পোস্টে এমিলিয়ানো মার্টিনেজ।

লুকা মদ্রিচের দল অবশ্য বিশ্বকাপ না জিতলেও এই প্রজন্মের ফুটবলারদের দেশটি মনে রাখবে বহুদিন। পরপর দুই বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়া ফাইনালের পথে।

চল্লিশ লাখেরও কম মানুষ বাস করেন ক্রোয়েশিয়ায়, তারা এখন দ্বিতীয় দেশ হিসেবে একই বিশ্বকাপে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার বিপক্ষে জয় পেতে পারে।

এর আগে জার্মানি, ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার বিপক্ষে জয় পেয়েছিল ২০১৪ সালে।

কোচ জলাটকো ডালিচ মনে করেন, ব্রাজিলের বিপক্ষে জয়ের চেয়েও বিশেষ ছিল ২০১৮ সালের সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়।

তবে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে জয় পেলে সেটা হবে সবচেয়ে সেরা, বলছেন ক্রোয়েশিয়ার কোচ।

"আমরা বিশ্বের সেরা চারটি দলের একটি এখন। টানা দুই বিশ্বকাপে আমরা এখানে এসেছি, এটা ক্রোয়েশিয়ার জন্য দুর্দান্ত সাফল্য"।

এই কোচের মতে লিওনেল মেসির দলের ওপর চাপ থাকবে বেশি।

আর্জেন্টিনার একুনিয়া ও গঞ্জালো মন্টিল সেমিফাইনালে খেলতে পারবেন না টুর্নামেন্টে দুটি হলুদ কার্ডের জন্য। আনহেল ডি মারিয়া ফিরেছেন চোট কাটিয়ে।

ক্রোয়েশিয়ার কোনও চোট বা সাসপেনশন নেই। আর্জেন্টিনা ও ক্রোয়েশিয়ার মধ্যে এটি তৃতীয় ফিফা বিশ্বকাপের ম্যাচ হতে যাচ্ছে।

এর আগে ১৯৯৮ সালে আর্জেন্টিনা এক গোলের জয় পেয়েছিল, ২০১৮ তে ক্রোয়েশিয়া ৩-০ গোলের জয় পেয়েছিল।

তবে আর্জেন্টিনার সমর্থকদের জন্য সুখকর বিষয় হতে পারে এই পরিসংখ্যান বা ইতিহাস, আর্জেন্টিনা কখনোই বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে হারেনি।

 

সূত্র: বিবিসি বাংলা

এসবি/ 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি