ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪

শুভ জন্মদিন রুনা খান

‘অভিনেত্রী হয়েই মুগ্ধতা ছড়াতে চাই’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:২৫, ১১ জানুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ২৩:০৩, ১১ জানুয়ারি ২০১৮

রুনা খান। প্রতিশ্রুতিশীল একজন অভিনেত্রী। দক্ষ অভিনয়শৈলীর মাধ্যমে দর্শকদের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন তিনি। শুধু টিভি পর্দায়ই নন, মঞ্চেও সরব অভিনেত্রী। নিয়মিত কাজ করছেন সেখানেও। টিভি মঞ্চের পাশাপাশি রুনা খান এখন নিয়মিত অভিনয় করছেন চলচ্চিত্রেও। শুধু দর্শকরাই নন, তার অভিনয়ের প্রশংসা করেন তার সহকর্মীরাও। বিভিন্ন নাটকে তার সঙ্গে যায় এমন সব চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে রুনার বিকল্প সাধারণত কাউকে ভাবাই হয় না। জাত অভিনেত্রী হিসেবে নির্মাতাদের কাছে তার বেশ কদরও রয়েছে। রুনা যখন অভিনয় করেন তখন চরিত্রের গভীরে প্রবেশ করেন। আর এজন্য দর্শকরাও তার অভিনয়ে মুগ্ধ হন।

আজ অভিনেত্রী রুনা খানের জন্মদিন। দীর্ঘ এই পথচলায় একুশে টেলিভিশন (ইটিভি) ইটিভি অনলাইনের পক্ষ থেকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। প্রিয় অভিনেত্রীর জন্মদিন উদযাপন ও কর্মব্যস্ততা জানতে একুশে টিভি অনলাইন মুখোমুখি হয়েছে রুনা খানের। তার সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন- সোহাগ আশরাফ

 

ইটিভি অনলাইন : শুভ জন্মদিন। কেমন আছেন?

রুনা খান : ধন্যবাদ। ভালো আছি।

ইটিভি অনলাইন : জন্মদিনে আজ কি আয়োজন থাকছে?

রুনা খান : আসলে ঘটা করে জন্মদিন উদযাপন করার মত তেমন কিছুই আমি এখনও হইনি। তবে হ্যাঁ, এটা আমার জন্য, আমার পরিবারের জন্য একটা ভালো দিন। আমি আজকের দিনটা আমার পরিবারের সঙ্গেই কাটাবো। আমার মা-বাবা, সন্তান ও সন্তানের বাবার সঙ্গেই আনন্দে কাটবে দিনটা।

ইটিভি অনলাইন : আজ কি কোন শুটিং আছে?

রুনা খান : না আজ কোন শুটিং নেই। আজকের দিনটা শুধুই পরিবারের।

ইটিভি অনলাইন : আপনি একজন জনপ্রিয় টেলিভিশন অভিনেত্রী। সাধারণ দর্শকদের কাছে ছোটপর্দার অভিনেত্রী হিসেবেই অধিক পরিচিত। তবে বর্তমানে আপনাকে দর্শক বড় পর্দায় দেখতে পাচ্ছে। অনুভুতি কেমন?

রুনা খান : বড় পর্দায় নিজেকে দেখতে পারাটা অত্যান্ত আনন্দের। এটা সব অভিনেতা-অভিনেত্রীর ক্ষেত্রে একই। অন্ধকারের মধ্যে বসে হল ভর্তি দর্শকরা যখন একটা সিনেমা দেখেন আর সেখানে নিজেকে দেখতে পারার অনুভুতিটা মুখে বলে বোঝানো যাবে না। এটা অনুভব করার ব্যাপার। তবে আমার কাছে বড় পর্দা বা ছোট পর্দা যেটাই হোকনা কেনো মূখ্য বিষয় হচ্ছে অভিনয়। অভিনয় করার সুযোগটা যেখানে আছে আমি সেখানেই থাকতে চাই। সেটা হোক টেলিভিশন নাটক, হোক মঞ্চ অথবা চলচ্চিত্র।

ইটিভি অনলাইন : তিন মাধ্যমেই দর্শক আপনাকে দেখছে। কিন্তু আপনি কোন মাধ্যমে স্বাচ্ছন্দবোধ করেন?

রুনা খান : ওই যে বললাম, আমার কাছে মূখ্য বিষয় হচ্ছে অভিনয়। যে মাধ্যমের কথাই বলি না কেনো আমার কাজটাতো একটাই। আর সেটা হচ্ছে অভিনয়। যে তিন মাধ্যমের কথা বললেন- কাজের ক্ষেত্রে এ তিন মাধ্যমের প্রস্তুতি, পরিবেশ ও প্রেক্ষাপট হয়তো ভিন্ন ভিন্ন থাকে কিন্তু কাজ তো একটাই। অভিনয় পারি কি পারি না, হয় কি হয় না সেটা পরের বিষয়। অভিনয়ের সঙ্গে থাকতে ভালোবাসি। অভিনেত্রী হয়েই মুগ্ধতা ছড়াতে চাই। আমার কাছে সব মাধ্যই আনন্দের।

ইটিভি অনলাইন : আপনার বর্তমান ব্যস্ততা সম্পর্কে একটু জানতে চাই।

রুনা খান : বেশ কিছু নাটকের শুটিং শেষ করলাম। এর মধ্যে কিছু একক নাটকও রয়েছে। কিছু ধারাবাহিকে কাজ করছি। নতুন একটি চলচ্চিত্রে কাজের ব্যপারে কথা চলছে। তবে এটা প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে হয়তো এ সিনেমাতেও কাজ করবো।

ইটিভি অনলাইন : সম্প্রতি আপনার অভিনিত ‘গহীন বালুচর’ সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। কেমন সাড়া পেলেন?

রুনা খান : অনেক ভালো সাড়া পেয়েছি। আসলে ভালো সিনেমা মুক্তি পেলে দর্শক দেখেন। দর্শক চায় পরিবারের সবাই মিলে হলে গিয়ে সিনেমা দেখতে। ভালো ভালো সিনেমা মুক্তি পাওয়ার কারণে ইদানিং সেই দৃশ্য আমরা আবারও দেখতে পাচ্ছি। ‘গহীনে বালুচর’ সম্প্রতি মুক্তিপাওয়া ভালো সিনেমাগুলোর মধ্যে অন্যতম। অনেকদিন পর দর্শক গ্রাম-বাংলার সিনেমা উপভোগ করলো।

ইটিভি অনলাইন : অনেকেই বলছেন বাংলাদেশের সিনেমার একটা সুন্দর সময় যাচ্ছে। ভালো ভালো সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে। বিষয়টাকে কিভাবে দেখছেন?

রুনা খান : আমি কোন একটি নিদৃষ্ট সিনেমার নাম ধরে বলতে চাই না। গত কয়েক বছর ধরে বেশ কিছু ভালো সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। আমার কাছে মনে হয় আমাদের চলচ্চিত্রে একটা উৎসব চলছে। একটা সময় আমরা গল্প শুনেছি- পরিবারের সবাই মিলে সিনেমা দেখতে হলে যেতেন। সব শ্রেণীর মানুষ ওই সময় সিনেমা হলে যেতো। মাঝে সেই জায়গাটা থেকে আমরা সরে এসেছিলাম। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে বেশ কিছু ভালো সিনেমার মধ্য দিয়ে সব শ্রেণীর দর্শকদের আবারও হলে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। এখানে আমি নাম ধরেই বলতে পারি- ‘আয়নাবাজি’, ‘অজ্ঞাতনামা’, ‘ঢাকা অ্যাটাক’, ‘হালদা’, ‘ডুব’, ‘গহীন বালুচর’। এ সিনেমাগুলো দর্শক পছন্দ করেছে। সব শ্রেণীর মানুষ পরিবার সহ হলে গিয়ে সিনেমাগুলো দেখেছে। আমরা যে কাজগুলো করি তার শেষ কথা হচ্ছে দর্শক। তারা যদি হলে আসেন, তারা যদি কাজটা দেখেন তাহলেই আবার নতুন করে নতুন চলচ্চিত্র বানানো সম্ভব।

ইটিভি অনলাইন : একটা ভালো সিনেমা কি কি বিষয়ের উপর নির্ভর করে হয়? আমরা কি বাজেটের জন্য ভালো সিনেমা নির্মাণ করতে পারি না, নাকি মেধার কারণে?

রুনা খান : আসলে একটা ভালো সিনেমার প্রধান শক্তি হচ্ছে ‘একটা ভালো গল্প’। গল্পটা যদি ঠিকঠাক থাকে আর সেই গল্পটা যদি নির্মাতা সঠিক ভাবে দর্শকদের সামনে উপস্থাপন করতে পারেন তাহলেই একটা ভালো কিছু হয়। এ ক্ষেত্রে শিল্পীদের ভূমিকাও কম নয়। চরিত্রের সঙ্গে নিজেকে ঠিকঠাক তুলে ধরতে পারলে সুন্দর একটি সিনেমা উপহার দেওয়া সম্ভব।

আর বাজেটের কথা যদি বলি- বাজেট অবশ্যই প্রয়োজন। তবে কম বাজেটেও ভালো সিনেমা নির্মাণ করা সম্ভব। অনেকেই আছেন যারা পাশ্ববর্তী দেশের সঙ্গে তুলোনা করেন। আমি কখনও আমাদের দেশের চলচ্চিত্রের সঙ্গে তাদের তুলোনা করি না। আর করবও না। কারণ আমরা আঠারো কোটি মানুষের দেশ। ওরা একশ’ কোটির দেশ। সেখানে ওদের বাজেট বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমাদের নির্মাতারা কম বাজেটেও অনেক ভালো সিনেমা নির্মাণ করার ক্ষমতা রাখেন। দর্শক হিসেবে আমি যদি বলি আমার দেখা গত দশ বছরের শ্রেষ্ঠ বাংলা সিনেমা হচ্ছে ‘অজ্ঞাতনামা’। আমি নিজে অভিনয় করেছি হালদা, গহীন বালুচরে। কিন্তু আমি এ দুটি সিনেমার কথা বলছি না। আমার দেখা চলচ্চিত্রের মধ্যে সেরাটি হচ্ছে ‘অজ্ঞাতনামা’। আমি যদি ভুল না করে থাকি- গত দশ বছরে যতোগুলো বাংলা সিনেমা হয়েছে, যতোগুলো ভালো সিনেমা মুক্তি পেয়েছে তাদের মধ্যে সব চেয়ে কম বাজেটের সিনেমা হচ্ছে অজ্ঞাতনামা। বাজেট অবশ্যই একটা ব্যপার। তবে এটাই শেষ কথা নয়। ওই যে বললাম- একটা সিনেমার নায়ক হচ্ছে সেই সিনেমার গল্প। এরপর নির্মাতার মেধা। শিল্পীর অভিনয়। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে দুর্দান্ত কিছু করা যায়।

ইটিভি অনলাইন : আপু অনেক ধন্যবাদ। আবারও জন্মদিনে একুশে টিভির পক্ষ থেকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইলো। এতো ব্যস্তার মাঝে আমাদের সময় দেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ভালো থাকবেন।

রুনা খান : একুশে টেলিভিশন পরিবার ও সকল দর্শক এবং পাঠকদেরও ধন্যবাদ।

এসএ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি