ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪

আমরাও ডব্লিউএইচও’কে পরিত্যাগ করব : বোলসোনারো

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:৩২, ৬ জুন ২০২০

করোনা ভাইরাস ইস্যুতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা- ডব্লিউএইচও’র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো। মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতোই সংস্থাটিতে ‘মতাদর্শগত পক্ষপাতী’ বলে উল্লেখ করে এর কার্যক্রম ব্রাজিল থেকে সরিয়ে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন তিনি।

প্রেসিডেন্ট প্যালেসের বাইরে সাংবাদিকদের বোলসোনারো বলেন, ‘আমি এই মুহূর্তে আপনাদের বলছি, যুক্তরাষ্ট্র ডব্লিউএইচওকে ত্যাগ করেছেন। ভবিষ্যতের জন্য আমরাও বিষয়টা পর্যালোচনা করছি। ডব্লিউএইচও হয় মতাদর্শগত পক্ষপাতহীনভাবে কাজ করবে, আর না হয় আমরা তাদের পরিত্যাগ করব।’

অতি ডানপন্থী বোলসোনারোকেও টাম্পের সঙ্গে তুলনা করে থাকেন। করোনা নিয়ে দুজনের মতাদর্শ একই রকম। শুরু থেকেই ট্রাম্পের মতো করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে গুরুত্ব দিচ্ছেন না ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট। এমনকি লকডাউনের ঘোর বিরোধী তিনি।

ট্রাম্পের মতো, বোলসোনারোরও দাবি, কভিড-১৯ চিকিৎসায় দারুণ কার্যকরী ক্লোরোকুইন ও হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন জাতীয় ওষুধ। ওই ওষুধ ব্যবহারে এখনো পিছু যায়নি তার প্রশাসন।

করোনাভাইরাস ইস্যুতে টানাপোড়েন এবং চীন ঘেঁষার অভিযোগ এনে এক সপ্তাহ আগে  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। জানান, ডব্লিউএইচওকে অর্থ বরাদ্দ না দিয়ে এসব অর্থ যেসব দেশ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে সেসব দেশকে দিয়ে দেবেন তিনি।

ট্রাম্পের সুরে এবার জাতিসংঘের অধিভুক্ত সংস্থাটির ক্ষোভ প্রকাশ করলেন ব্রাজিল প্রেসিডেন্ট। বোলসোনারোর সরকারির প্রতি ডব্লিউএইচও’র বিরোধ বাঁধে করোনা চিকিৎসায় হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহার নিয়ে।

করোনায় দিশেহারা লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। যেখানে প্রতিনিয়ত ভয়ানক রূপ নিচ্ছে ভাইরাসটি। সময়ের সাথে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ, ভারি হচ্ছে স্বজন হারাদের মিছিল।  

আক্রান্তে দ্বিতীয সর্বোচ্চ দেশটি একদিন আগেই প্রাণহানিতে মৃত্যুপুরী ইতালিকেও ছাড়িয়ে গেছে। কার্যকরি ভ্যাকসিন বা টিকা এখন পর্যন্ত হাতে না পাওয়ায় চরম বিপর্যয়ে পড়েছে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম দেশ ব্রাজিল। এতে ভেঙে পড়েছে দেশটির চিকিৎসা ব্যবস্থা। যাতে হুমকির মুখে পড়েছে লাতিন আমেরিকার অন্যান্য অঞ্চল ও দেশগুলোকে।  

অন্যদিকে, জেঁকে বসা ভাইরাসটির এমন ভয়াবহ চিত্রে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছেন প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো। এর জন্য গণমাধ্যমকে দায়ী করেছেন তিনি। 

এদিকে, ব্রাজিলের এই করুণাবস্থা চরম সংকটে ফেলেছে সহগোত্রীয় দেশগুলোকে। বিশেষ করে মেক্সিকো, পেরুতে হু হু করে বাড়ছে আক্রান্ত, দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি। চিলি, এল সালভেদর, গুয়েতেমালা ও নিকারগুয়া, আর্জেন্টিনা ও পানামার মতো দেশগুলাতেও সংখ্যাটা কম নয়। 

ব্রাজিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বিশ্বখ্যাত জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ৩০ হাজার ১৩৬ জনের দেহে মিলেছে করোনা সংক্রমণ। এতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৬ লাখ ৪৬ হাজার ৬ জনে দাঁড়িয়েছে। নতুন করে প্রাণ গেছে ১ হাজার ৮ জনের। এ নিয়ে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ৩৫ হাজার ৪৭ জনে ঠেকেছে। 

সময়ের সাথে আক্রান্তের হার পাল্লা দিয়ে বাড়লেও সে তুলনায় কম সুস্থতার সংখ্যা। তারপরও লাতিন আমেরিকার দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৩ লাখের বেশি মানুষ করোনা থেকে পুনরুদ্ধার হয়েছেন। 

আক্রান্ত ও প্রাণহানির এমন হারে বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থার আশঙ্কার চেয়ে জটিল অবস্থা দেখছে ব্রাজিল। সংস্থাটি গতমাসের শেষের দিকে বলেছিল, ‘চলমান অবস্থা অব্যাহত থাকলে আগামী আগস্টের মধ্যে লাতিন আমেরিকার দেশটিতে মৃতের সংখ্যা সোয়া লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে। শুধু তাই নয়, এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশেও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে করোনা।’

কিন্তু বাস্তবচিত্র আরও ভয়াবহ। আগামী আগস্ট মাস আসতে আসতে প্রাণহানি দেড় লাখ ছাড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন দেশটির বিশেষজ্ঞরা। 
এসএ


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি