ঢাকা, সোমবার   ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ঈদের দিনসহ বৃষ্টি থাকবে ৩ দিন

প্রকাশিত : ১৪:৩১, ৪ জুন ২০১৯ | আপডেট: ১৬:০৩, ৪ জুন ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি থাকতে পারে আরো তিনদিন।

আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল অতিক্রম করে পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর-পূর্ব বঙ্গপোসাগরে অবস্থান করছে। তাই আজকে যে বৃষ্টি শুরু হয়েছে তা আরো তিনদিন থাকবে। আর তেমনটি হলে ঈদের নামাজের জামাত এবং ঈদের ঘোরাঘুরিতে বিঘ্ন ঘটতে পারে সাধারণ মানুষের।

আগামীকাল বুধবার সূর্যদোয় হবে ভোর ৫টা ১১মিনিটে। প্রাক-মৌসুমের বৃষ্টিপাত সাধারণত শেষরাত বা ভোরের দিকেই বেশি হয়ে থাকে।

এছাড়া বিকালে এবং রাতের প্রথম অংশেও এ ধরনের বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। তবে সুখবর হচ্ছে- এ সময়ের বৃষ্টি একটানা নয়, থেমে থেমে হয়ে থাকে। আবহাওয়া বিভাগ (বিএমডি) এসব তথ্য জানিয়েছে।

এদিকে পশ্চিমা লঘুচাপের রেশ না কাটতেই বর্ষা মৌসুম হাজির হচ্ছে। প্রাথমিক পূর্বাভাস অনুযায়ী ৮ জুনের দিকে এর প্রবেশ ঘটতে পারে টেকনাফ উপকূলে। এরপর নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, ঢাকা হয়ে ধীরে ধীরে সারা দেশে বিস্তৃত হবে। এরপর প্রাক-মৌসুমের মতো আর থেমে থেমে বৃষ্টি হবে না। বর্ষার বৃষ্টির চরিত্র হচ্ছে- যখন হবে একটানা। মুষলধারে। সেই হিসাবে বাড়ি যাওয়ার মতো ফিরতি পথেও সঙ্গী হতে পারে ঝড়-বাদল।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে বুধবার ঈদুল ফিতর উদযাপিত হতে পারে বাংলাদেশে। আজ চাঁদ না উঠলে সেক্ষেত্রে ৬ জুন ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হবে।

আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ বলছেন, ২৪ ঘণ্টায় প্রায় সারা দেশেই বৃষ্টিপাত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের রেকর্ড বগুড়ায় ১৩৪ মিলিমিটার। এই সময়ে ঢাকায় ২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টিপাতের এ প্রবণতা ৬-৭ জুন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, মৌসুম (বর্ষা) আগমনের আগে প্রকৃতি অনেক অস্থির থাকে। এ সময় আউলা বাতাস প্রবাহিত হয়। অর্থাৎ, কখনও দক্ষিণ-পশ্চিম থেকে আবার কখনও উত্তর-পশ্চিম থেকে প্রবাহিত হয়। বাতাসের দিকের স্থিরতা না থাকায় প্রকৃতি অস্থির আচরণ করে। এ কারণে স্বল্পসময়ের জন্যও অস্থির হয়ে যেতে পারে প্রকৃতি।

এমন একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় গতকাল সোমবার সকালের দিকে। ওই অবস্থায় বিএমডি ৪ ঘণ্টার জন্য একটা পূর্বাভাস জারি করে। তাতে বলা হয়, সকাল ১০টা থেকে পরবর্তী ৩/৪ ঘণ্টার মধ্যে কুমিল্লা, নোয়াখালী, সিলেট, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের ওপর দিয়ে কোথাও কোথাও অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

আরেক বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি ৬ অঞ্চলের জন্য ৭ ঘণ্টার একটি পূর্বাভাস প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ময়মনসিংহ, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০-৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি বা বজ্রসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ২ নম্বর নৌ হুশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এছাড়া দেশের অন্যত্র পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি বা বজ্র -বৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে সোমবার সকাল ৯টায় বিএমডি ২৪ ঘণ্টার একটি পূর্বাভাস জারি করে। এতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা, ময়মনসিংহ, রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টিপাতের এই প্রবণতা ৩ দিন অব্যাহত থাকতে পারে।

গত মাসে ১-২ মে, ৬-১৪ মে, ১৬-২২ মে এবং ২৬-২৯ মে দেশের বিভিন্ন স্থানে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। ১০ ও ১১ মে মাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় রাজশাহীতে ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নৌ নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালক মো. আবু জাফর হাওলাদার বলেন, ঈদ সামনে রেখে সাধারণত যাত্রীদের চলাচল বেশি থাকে। কোনো কোনো জাহাজে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনের প্রবণতাও আছে। এসব দিক বিবেচনায় আমরা সতর্ক ও তৎপর আছি। একদিকে আবহাওয়া বিভাগের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে।

স্বল্পসময়ের নোটিশেও যদি কোনো বৈরী আবহাওয়ার বার্তা থাকে, তা সব নদীবন্দরের মাধ্যমে নৌপথগামী জাহাজগুলোয় তাৎক্ষণিকভাবে জানিয়ে দেয়া হয় যেন তারা নিরাপদ আশ্রয়ে থাকে। এছাড়া অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই বন্ধে ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রাখা আছে।

তিনি আরও বলেন, ২ নম্বর নৌ হুশিয়ারি সংকেত জারি করা হলে সর্বনিম্ন ৬৫ ফুটের আকারের কোনো নৌযান চলাচল করবে না। এটা সার্বক্ষণিক আদেশ হিসেবে জারি আছে। তবে ২ নম্বর সতর্কসংকেত থাকলেও আবহাওয়া বৈরী হয়ে পড়লে সব ধরনের নৌযানই চলাচল বন্ধ করে দেই।

বন্যার আশঙ্কা সিলেট-পার্বত্য অঞ্চলে : এদিকে ৩০ মে বিএমডি আবহাওয়ার এক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, জুনের প্রথমার্ধে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু (বর্ষা) বিস্তার লাভ করতে পারে। বঙ্গোপসাগরে ১ থেকে দুটি মৌসুমি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এ মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হবে। তবে মৌসুমি বৃষ্টিপাতের কারণে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কিছু স্থানে স্বল্পমেয়াদে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।

এনএম/

 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি