ঢাকা, শনিবার   ০৩ মে ২০২৫

কন্যাশিশু হয়ে গেল মৃত ছেলে!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:২৮, ১৯ এপ্রিল ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

দুই দিনের একটি কন্যাশিশুর শ্বাসকষ্টসহ শারীরিক নানা জটিলতার কারণে চিকিৎসার জন্য ক্লিনিকে ভর্তি করেছিলেন মা। আশা ছিল সুস্থ সন্তানকে নিয়ে ঘরে ফিরবেন তিনি। কিন্তু পাঁচ দিনের মাথায় গত মঙ্গলবার মায়ের কোলে তুলে দেওয়া হলো মৃত শিশু। বুকে পাথর বেঁধে সন্তানের লাশ নিয়ে ঘরে ফিরলেন তিনি।

বেগমগঞ্জ উপজেলায় গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পর দাফনের সময় দেখা যায় ছেলে শিশুর লাশ। তাতেই গণ্ডগোলটি ধরা পড়ে। তবে অনেক নাটকীয়তার পর মেয়েকে ফিরে পান মা রোকসানা আক্তার। এমন ঘটনার জন্ম দিয়েছে চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানার গোলপাহাড় মোড়ের চাইল্ড কেয়ার ক্লিনিক। 

বেসরকারি এ ক্লিনিকের বিরুদ্ধে নবজাতক নিয়ে লুকোচুরির অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে শিশুটি বেসরকারি রয়েল হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছে।     

জানা যায়, গত ১৩ এপ্রিল প্রথম সন্তানের জন্ম দেন রোকসানা আক্তার। অসুস্থতার কারণে ওইদিনই তিনি কন্যাশিশুটিকে প্রথমে নোয়াখালীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে নগরীর গোলপাহাড়ের চাইল্ড কেয়ার ক্লিনিকে নিয়ে ভর্তি করা হয়। গত মঙ্গলবার সকালে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করে তুলে দেওয়া হয় মায়ের হাতে। পরে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে মৃত শিশুটিকে দাফনের আগে গোসল করানোর সময় তারা দেখতে পান ছেলের লাশ। তারপর ফের তারা ওই রাতেই মৃত শিশুকে নিয়ে আবার চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দেয়। রাত ১২টার দিকে চাইল্ড কেয়ার হাসপাতালে পৌঁছায় তারা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের ভুল বুঝতে পারে। ওই ছেলে নবজাতকটি ছিল আরেকজনের। পরে মৃত ছেলেটিকে তাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়। রোকসানার কন্যাসন্তানটি বেঁচে আছে।

রোকসানা আক্তার বলেন, শিশুটির লাশ নিয়ে আমরা সারারাত অ্যাম্বুলেন্সে বসেছিলাম থানার সামনে। বুধবার ভোরে মেয়ে পাওয়ার কথা জানানো হয়। পরে সকালে একটি অ্যাম্বুলেন্সে এসে ছেলের লাশ নিয়ে যায়, পরে আমার মেয়েকে ফেরত দেয় চাইল্ড কেয়ার ক্লিনিক।  

ওই ঘটনায় দুই পক্ষই হাসপাতালের ওপর ক্ষুব্ধ। এমন ঘটনার পর বুধবার রোকসানা চাইল্ড কেয়ার হাসপাতাল থেকে শিশুটিকে বেসরকারি অন্য একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। 

তিনি আরও বলেন, চাইল্ড কেয়ার নাম দিলেও সেটি টাকা বানানোর মেশিন ছাড়া কিছু নয়। আমার সঙ্গে যা হয়েছে তা যেন আর কোনও মায়ের সঙ্গে না হয়।

এ ঘটনায় চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, এ ঘটনায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালককে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছি। তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।    

চাইল্ড কেয়ার ক্লিনিকের পরিচালক ডা. ফাহিম হাসান রেজা বলেন, ভুল বোঝাবুঝির কারণে ঘটনাটি ঘটেছে। পরে আমরা প্রকৃত ঘটনা জানতে পেরে যার মেয়ে তাকে ফেরত দিয়েছি।

একে//এসি  

 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি