‘কাটছে মাটি, বানাচ্ছে ইট, ভাঙছে নদী’
প্রকাশিত : ১১:৩০, ২১ অক্টোবর ২০২১
আড়াই হাজার ইটের ভাটায় বিপর্যস্ত পরিবেশ। কার্বণ নি:সরণে আক্রান্ত বায়ুমণ্ডল। কাঠ-কয়লার পরিবর্তে তাই বিকল্প উপায়ে ইট তৈরির পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
কাটছে মাটি, বানাচ্ছে ইট, ভাঙছে নদী কিংবা পাহাড় টিলা। অনেকদিন ধরে এভাবেই চলছে মাটিক্ষয়। যার প্রভাব পড়েছে প্রাত্যহিক জীবনে।
নগর উন্নয়নের পাশাপাশি পরিবর্তনের ছোঁয়া খোদ গ্রামসভ্যতায়। উঠছে ভবন, তৈরি হচ্ছে শিল্প-কারখানা। এসব নির্মাণে গেল ক’বছরে মাত্রাতিরিক্তভাবে বেড়েছে ইটের চাহিদা।
নিষেধ থাকলেও ইট তৈরিতে কাটা হচ্ছে কৃষিজমির মাটি। ইট পোড়াতে ব্যবহার হচ্ছে কাঠ আর কয়লা।
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সোবহান বলেন, “ইট তৈরির করার জন্য কৃষি ভূমি কমে আসছে। যেটা আমাদের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য বড় ধরনের হুমকি হিসেবে দাঁড়াবে। দ্বিতীয়ত হচ্ছে কাঠ দিয়ে ইট পোড়ালে বনজঙ্গল ধ্বংস হয়েছে। এখন কয়লা দিয়ে পোড়ানো হচ্ছে, এই কয়লা অত্যন্ত নিম্নমানের।”
গবেষণা বলছে, দেশের ভাটাগুলো বছরে আড়াই হাজার কোটির মতো ইট তৈরি করে। এর ১ হাজার ৭০০ কোটি ব্যবহার হয় অভ্যন্তরীণ ভবন ও সড়ক উন্নয়নে। বাকি ৮০০ কোটি ইট রফতানি হয় পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে।
হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট বলছে, দেশের ইটভাটাগুলোতে বছরে পোড়ে ২০ লাখ টন কাঠ। কয়লা ব্যবহার হয় আরও ২০ লাখ টন। এর থেকে বছরে কার্বণ নিঃসরণ হয় প্রায় ৯০ লাখ টন।
হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট গবেষক আহসান হাবিব বলেন, “ইট পোড়াতে যে পরিমাণ কার্বন মনো-অক্সাইড তৈরি হচ্ছে, যে পরিমাণ হ্যাজার্ডাইস গ্যাস তৈরি হচ্ছে- এগুলো কারণেই আমাদের ইনভায়রনমেন্ট পলিউশন বেশি হচ্ছে।”
গবেষকরা বলছেন, দেশে পোড়া ইটের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব ব্লকও ব্যবহার সম্ভব। এতে রক্ষা হবে পরিবেশ। বাঁচবে টাকা।
নদী ড্রেজিংয়ে যে পরিমাণ বালু আর মাটি পাওয়া যায়, তা দিয়ে বাৎসরিক ইটের চাহিদার সমান ব্লক বানানো সম্ভব-অভিমত বিশেষজ্ঞদের।
হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মো. আশরাফুল আলম বলেন, “আর নয় পোড়ামাটির ইট, আমাদের উদ্ভাবিত পরিবেশবান্ধব সলিড ব্লক ব্যবহার করুন। এতে একদিকে যেমন কৃষিজমি রক্ষা হবে, পরিবেশ রক্ষা হবে তেমনি আমাদের অর্থনৈতিক সাশ্রয় হবে।”
নদী ড্রেসিংয়ে যে পরিমাণ বালু আর মাটি পাওয়া যায় তা দিয়ে বাৎসরিক ইটের চাহিদার সমান ব্লগ বানানো সম্ভব, অভিমত বিশেষজ্ঞদের।
ভিডিও-
এএইচ/
আরও পড়ুন