ঢাকা, শনিবার   ০৪ অক্টোবর ২০২৫

ঘুষ-দুর্নীতির সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন যশোর বিআরটিএ’র পরিদর্শক তারিক হাসান

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:১৪, ৪ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১৯:১৮, ৪ অক্টোবর ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

যশোর বিআরটিএ অফিসের মোটরযান পরিদর্শক মো. তারিক হাসানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ঘুষ, নারী কেলেঙ্কারি ও মাদক সংশ্লিষ্টতার একাধিক অভিযোগ উঠেছে। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা পরিচয়ে প্রশাসন ও রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় বহাল তবিয়তে কর্মরত এই কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরে অনিয়মের মাধ্যমে গড়ে তুলেছেন দালাল সিন্ডিকেটের সাম্রাজ্য।

ঝিনাইদহে কর্মরত থাকার সময় থেকেই তার বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় জমে—ফিঙ্গারপ্রিন্টে সমস্যা সৃষ্টি করে দালালের মাধ্যমে অর্থ আদায়, জাতীয় পরিচয়পত্রে জটিলতা দেখিয়ে পুরনো এমআরপি নবায়নের নামে ঘুষ গ্রহণ—সবই ছিল প্রকাশ্য গোপন তথ্য। তার ছত্রছায়ায় অর্ধশতাধিক দালাল বিআরটিএ অফিসের অভ্যন্তরেই অবাধে ঘুষ লেনদেন করতো।

স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, নারী কেলেঙ্কারির ঘটনায় হাতেনাতে ধরা পড়লেও রহস্যজনকভাবে তাকে প্রশাসনিক শাস্তি দেওয়া হয়নি। বরং দালালদের মাধ্যমে মাদক সরবরাহ হতো অফিস কক্ষেই। একপর্যায়ে ঝিনাইদহ অফিস পরিণত হয় তার ব্যক্তিগত অপরাধকেন্দ্রে।

যশোরে বদলি হয়ে আসার পরও তারিক হাসানের অনিয়মের ধারা থামেনি। অভিযোগ রয়েছে, এখানেও নতুন করে দালাল সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন তিনি। মোকাব্বির ও সোহাগ নামের দুজনকে নিয়ে চলছে এই ‘ঘুষ সাম্রাজ্য’। ভুক্তভোগীদের দাবি, মোটরযান রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস সার্টিফিকেট, ড্রাইভিং লাইসেন্স বা রুট পারমিট—যে কাজই হোক, ঘুষ ছাড়া কিছুই হয় না। অনেকের নথিপত্র অকারণে আটকে রাখা হয়, আবার টাকা চাইলে না দিলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়।

ঝিনাইদহে কর্মরত অবস্থায় লিটন নামের এক ব্যক্তির গাড়ির কাগজপত্র সংশোধনের আবেদন নিয়েও তিনি প্রতারণা করেন বলে অভিযোগ আছে। টাকা নেওয়ার পরও কাজ না করে উল্টো আরও অর্থ দাবি করেন। প্রতিবাদ করায় জনরোষের মুখে পড়ে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন তিনি।

তারিক হাসানের পিএস শাহীন স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহানের শালা হওয়ায় রাজনৈতিক সুরক্ষা পেয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এই প্রভাব কাজে লাগিয়ে তিনি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন। কোটচাঁদপুরের দয়ারামপুর গ্রামে গড়ে তুলেছেন আলিশান বাড়ি, গাড়ি ও প্রজেক্টের মালিকানা—যা তার সরকারি বেতনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়, একের পর এক অভিযোগ সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। প্রশাসনিক নীরবতা ও রাজনৈতিক প্রভাবের জালেই নিরাপদ থেকে যাচ্ছেন এই বিতর্কিত কর্মকর্তা।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে একাধিকবার পরিদর্শক তারিক হাসানের মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এসএস//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি