ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪

‘জয় শ্রীরাম’ না বলায় ভারতে ট্রেন থেকে ফেলে দিল মুসলিমদের

প্রকাশিত : ১১:৫১, ২৭ জুন ২০১৯ | আপডেট: ১১:৫৭, ২৭ জুন ২০১৯

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় কয়েকজন মুসলমানকে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান না দেওয়ায় মারধর করে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে। 

গত বৃহস্পতিবার সকালের ওই ঘটনাটি জানা যায় মঙ্গলবার রাতে। দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার ক্যানিং - শিয়ালদহ লোকাল ট্রেনে চেপে প্রতিদিনের মত কাজে যাচ্ছিলেন এই মুসলমান যাত্রীরা।

সেদিনই হিন্দু সংহতি নামের একটি কট্টর হিন্দু সংগঠনের জমায়েত ছিল কলকাতায় এবং তাদের সমর্থকরাও নানা স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠছিলেন ও ‘জয় শ্রীরাম’ শ্লোগান দিচ্ছিলেন। কিছু পরেই হিন্দুত্ববাদীদের সংখ্যাটা প্রতি কামরায় ৭০-৮০ জন মতো করে হয়ে যায়।

আহত মুসলিমদের একজন মান্নান মোল্লা বলেন, প্রথমে তাদের বলা হয় জয় শ্রীরাম স্লোগানে গলা মেলাতে বলা হয়। "এর সঙ্গেই চলতে থাকে পোশাক ও দাঁড়ি নিয়ে কটূক্তি, বলা হয় যে এইসব পোশাক পরা যাবে না।

আর তারপরে চলন্ত ট্রেনেই শুরু হয় মারধর। ট্রেনটির বিভিন্ন কামরায় মারধর চলছিল বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।

মার খাওয়া দু`জন বলেন, ঘটনার পর থেকে তারা আতঙ্কে ভুগছেন। একজন বলেছেন, ট্রেনে উঠতে হবে বলে তিনি ভয়ে কাজে পর্যন্ত যাচ্ছেন না। পুলিশ বলছে, ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে তারা।

শাহরুফ হালদার নামে আরেকজন জানিয়েছেন, পার্ক সার্কাস স্টেশনে ঢোকার পরে তিনি ও আরও কয়েকজন মুসলমান যাত্রী নেমে যেতে চেষ্টা করছিলেন, সেখানে তাদেরও ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয় এবং তার আগে তাদেরও মারধর করা হয়। একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বীকেও পেটায় ওই সংগঠনটির কর্মীরা।

রেল পুলিশ বলছে, মারধর আর ধাক্কা মারার অভিযোগের তদন্ত করছেন তারা। আহতদের চোট খুব গুরুতর নয়, কিন্তু বাইরে থেকে আঘাতের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে, কারো কারো মাখায় সেলাই দিতে হয়েছে বলেও জানানো হয়।

হিন্দু সংহতির প্রধান  তপন ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রসঙ্গে কোনও কথা বলতে রাজী হননি। কিন্তু ওই সংগঠনটির কয়েকটি সূত্র সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করে যে তাদের কোনও কর্মী সমর্থক এই ঘটনায় জড়িত ছিলেন না।

উল্লেখ্য, এর আগে ভারতের পূর্বাঞ্চলের প্রদেশ ঝাড়খন্ডে ২৪ বছর বয়সী তাবরেজ আনসারি নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগ এনে তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়। পরে এই নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা তৈরি করে। যেখানে দেখা যায়, তাবরেজকে হিন্দু দেবতাদের নাম নিতে বাধ্য করা হচ্ছে এবং তিনি জীবন ভিক্ষা চাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে তাবরেজের স্ত্রী শাহিস্তা পারভিন বলেন, নির্যাতনের পর সারারাত একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয় তাকে এবং পরদিন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পারভিন আরও বলেন, হিন্দু দেবতাদের প্রশংসা করতে অস্বীকৃতি জানানোর জন্য তাকে একটানা নির্যাতন করা হয়। পরে পুলিশের হেফাজতে তাবরেজের মৃত্যু হয়।

এনএম


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি