ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪

জিম্বাবুয়ের সামরিক অভ্যুত্থানের পেছনে চীন!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৩৯, ১৭ নভেম্বর ২০১৭

জিম্বাবুয়েতে সামরিক অভ্যুত্থানের পেছনে কারা কলকাঠি নাড়ছে, এমন প্রশ্ন বিশ্ববাসীসহ জিম্বাবুয়ের নাগরিকদের। অনেকেই বলছে, বিরোধী দলের শতভাগ আশ্বাস, বহিস্কৃত ভাইস প্রেসিডেন্ট এমারসন নানগাওয়া ও দলের বঞ্চিত প্রবীণ নেতাদের আশ্বাসে জিম্বাবুয়ের সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করছে।

তবে বিদেশি দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে প্রশ্ন তোলা হয়েছে যে, জিম্বাবুয়েতে সামরিক অভ্যুত্থানের পেছনে কি চীনা কানেকশান থাকতে পারে?

জিম্বাবুয়ের প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান জেনারেল কনস্টেনটিনোর গত সপ্তাহের চীনা সফরে যান। সেখানে বেশ কয়েকজন ঊর্ধতন কর্তা ব্যক্তির সঙ্গে তিনি সাক্ষাত করেন। চীন থেকে ফিরেই তিনি দেশে সামরিক হস্তক্ষেপ শুরু করেন বলে অভিযোগ উঠে ।

গত শুক্রবার চীন থেকে ফেরার পর আকস্মিক দখল করেন দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন। গৃহবন্দি করেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট রবার্ট্ মুগাবেকে। এরপর প্রেসিডেন্ট মুগাবেকে ক্ষমতা থেকে সড়ে দাড়ানোর জন্য ক্রমাগতভাবে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। শেষ খবর পাওয়া পর্য্ন্ত মুগাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে না বলে জানা গেছে।

এদিকে চীনা সরকার সেনাবাহিনীকে গ্রীন সিগনাল দিয়ে থাকতে পারে বলে আন্তর্জাতিক মহল আশঙ্কা করছে। এর কারণ হিসেবে তারা বলছে, দেশটিতে চীনের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব রয়েছে । জিম্বাবুয়ের কৃষি, বিদ্যুত এবং নির্মাণখাতে দেশটির বড় অঙ্কের বিনিয়োগ রয়েছে।

রিপোর্টে আরও বলা হয়, ১৯৭০ সালে জিম্বাবুয়ের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় চীন সরাসরি দেশটিতে প্রচুর অস্ত্র ও অর্থ দিয়েছে। স্বাধীনতা যুদ্ধের নায়ক বর্তমান প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবেও চীনের সঙ্গে মিত্রতা বজায় রেখে চলছিল। ২০০২ সালে যখন ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র জিম্বাবুয়ের উপর অবরোধ আরোপ করতে চাইছিল, চীন তখন ১০০টির বেশি প্রকল্পে বিনিয়োগ করে। শুধু তাই নয়, বেইজিং জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের নেওয়া জিম্বাবুয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার উদ্যোগকেও ভেটোর মাধ্যমে আটকে দেয়।

তবে সম্প্রতি মুগাবে অনেকটা কর্তৃত্বপরায়ণ হয়ে উঠছিল বলে দলের মধ্যে অভিযোগ রয়েছে। ২০১৫ সালে দেশটিতে সফরকালে চীনা প্রেসিডেন্ট সি জিনপিং ৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের কথা বলেন। এসময় জিম্বাবুয়েকে সব সময়ের বন্ধু বলে তিনি ঘোষণা করেন।

তবে সম্প্রতি মুগাবে অনেকটা কর্তৃত্বপরায়ণ হয়ে উঠছিল বলে দলের মধ্যে অভিযোগ রয়েছে। এতে চীনের সঙ্গেও মুগাবের একটি দূরত্ব তৈরি হয়। চীন তার দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মুগাবের উপর আর নির্ভর করতে পারছে না বলেও জানা যায়।

এদিকে জিম্বাবুয়ের সামরিক বাহিনীকে ১৯৮০ সাল থেকেই সহযোগিতা করে আসছে চীনা সেনাবাহিনী। চীন সরকার নিজস্ব অর্থায়নে জিম্বাবুয়ের প্রতিরক্ষা কলেজ নির্মাণ করে । শুধু তাই নয়, দেশটির সামরিক বাহিনীকে সামরিক প্রশিক্ষণও দেয় তারা।  

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জেনারেল কনস্টেনটিনো নিয়মিত চীনা সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে আসছেন। চীনের প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রধান চেং ওয়াংকুয়ান ২০১৫ সালে হারারে সফরকালে কনস্টেনটিনোর সঙ্গে ঊষ্ণসম্পর্ক তৈরি হয়।

তবে অনেকেই বলছে দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থানের পেছনে মুগাবের স্বেচ্ছাচারিতাই দায়ি। এছাড়া ভাইস প্রেসিডেন্ট নানগাওয়াকে বহিস্কারের ফলে দলের মধ্যে কোন্দল সৃষ্টি হয়েছে। নানগাওয়াও গোপনে চীনের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছে বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে।

সূত্র: গার্ডিয়ান

এমজে/এসএইচ


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি