ঢাকা, রবিবার   ১৩ জুলাই ২০২৫

দাড়ি-গোঁফ কেটেও গ্রেপ্তার এড়াতে পারেননি আশিক

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:৪৭, ২৭ ডিসেম্বর ২০২১ | আপডেট: ১৮:২১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২১

Ekushey Television Ltd.

ভ্রু ও দাড়ি কেটেও গ্রেপ্তার এড়াতে পারেননি কক্সবাজারে স্বামী-সন্তানকে জিম্মি করে পর্যটক এক নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত আশিকুল ইসলাম আশিক ওরফে টনের্ডো আশিক।

কয়েকদিন আগেও দাড়িতে ভর্তি ছিল যার মুখ, ধর্ষণের মামলার আসামি হওয়ার পরপরই গ্রেপ্তার এড়াতে সেই আশিক ছদ্মবেশ ধারণ করতে কেটে ফেলেন দাড়ি। কেটে ফেলেন ভ্রুর কিছু অংশও। তবে এমন ছদ্মবেশ ধারণ করেও নিজেকে রক্ষা করতে পারেনি তিনি। কক্সবাজার থেকে পটুয়াখালী যাওয়ার পথে মাদারীপুরের মোস্তাফাপুর বাসস্ট্যান্ডে র‌্যাবের জালে ধরা পড়েন।

আশিকের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সংবাদ সম্মেলন ডাকে র‌্যাব। সেখানে আশিকের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন এলিট ফোর্সটির মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। সংবাদ ব্রিফিংয়ের সময় হাজির করা হয় আশিককেও।

সেখানে দেখা যায়, কক্সবাজারে নারীকে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত আশিকের দাড়ি ক্লিন সেভ করা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে যেন চিনতে না পারেন সেজন্য ভ্রুর ডানপাশের কিছু অংশ কেটে ফেলেন। এছাড়া দুই ভ্রুর সংযোগস্থলের চুলও কেটে ফেলেন। কিন্তু এমন ছদ্মবেশ ধারণ করেও কাজ হয়নি। ধরা পড়তে হয় র‌্যাবের হাতে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, গ্রেপ্তার আশিক ও তার সহযোগীরা ভিকটিম ও তার পরিবারের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। ভিকটিম ও তার পরিবার চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে লাবনী বিচ এলাকার রাস্তা থেকে ওই নারীকে অটোরিকশায় করে তুলে নিয়ে যায়। এরপর আশিক ভিকটিমকে ধর্ষণ ও জিয়া গেস্ট ইন হোটেলে আটকে করে রেখে ভিকটিমের স্বামীর কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এরপর ভিকটিমকে হোটেলে আটকে রেখে আশিক হোটেল থেকে বের হয়ে যায়।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গত ২২ ডিসেম্বর রাতে কক্সবাজারে গণধর্ষণের শিকার হন এক নারী। ওই ঘটনায় ভিকটিমের স্বামী বাদী হয়ে চারজন এজাহারনামীয় আসামি ও আরও ২/৩ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।

বিষয়টি চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করলে গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে চলে যায় আশিক। পরবর্তীতে বেশভূষা পরিবর্তন করে ঘটনার দুই দিন পর কক্সবাজার থেকে একটি এসি বাসযোগে ঢাকায় আসেন। সেখান থেকে পটুয়াখালী যাওয়ার পথে মাদারীপুরের মোস্তাফাপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী ওই নারী স্বামী-সন্তানসহ কক্সবাজারের একটি হোটেলে অবস্থান করছিলেন। তাদের সঙ্গে আট মাস বয়সী একটি শিশু সন্তান ছিল। শিশুটির জন্মগতভাবে হার্টে ছিদ্র থাকায় তার চিকিৎসায় ১০ লাখ টাকা প্রয়োজন। শিশুটির চিকিৎসার অর্থ সংকুলানের আশায় স্বামীসহ কক্সবাজারে অবস্থান করছিল পরিবারটি। তারা বিত্তবান পর্যটকদের নিকট হতে অর্থ সাহায্য চাইত। এ সময় তিনি অপহরণ ও ধর্ষণের শিকার হন।

অপহরণের ঘটনায় ভিকটিমের স্বামী র‍্যাব-১৫ এর কাছে ভিকটিমকে উদ্ধারে সহায়তা চায়। এরপর র‍্যাব ভিকটিমের স্বামীকে নিয়ে ভিকটিমকে উদ্ধারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় ও একপর্যায়ে ভিকটিম উদ্ধার হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৩ ডিসেম্বর রাতে জিম্মি করার সহযোগিতার অভিযোগে জিয়া গেস্ট ইন হোটেলের ম্যানেজার রিয়াজ উদ্দিন ছোটনকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি