ঢাকা, সোমবার   ০৭ জুলাই ২০২৫

নাগরিক উদ্ধারে আফগানিস্তানে সৈন্য পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র-ব্রিটেন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৫৫, ১৪ আগস্ট ২০২১

Ekushey Television Ltd.

যেভাবে ঝড়ের গতিতে তালেবানরা আফগানিস্তানের একের পর এক বড় বড় প্রাদেশিক শহর কব্জা করছে তাতে রাজধানী কাবুলের পতনের আশঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কাবুলে মার্কিন দূতাবাসের সিংহভাগ কূটনীতিক এবং মার্কিন নাগরিকদের দ্রুত সরিয়ে নিতে ৩ হাজার মেরিন সেনাকে কাবুলে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ বা পেন্টাগন। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণার পরপরই ব্রিটেনও জানিয়েছে তারাও সৈন্য পাঠাবে।

এই সৈন্যরা কাবুল বিমানবন্দরে মোতায়েন থাকেবে এবং বিশেষ বিমানে করে মার্কিন নাগরিক এবং কূটনীতিকদের ফিরে আনার কাজে সাহায্য করবে।

শুক্রবার (১৩ আগস্ট) হোয়াইট হাউজ এবং সামরিক সূত্র উল্লেখ করে নিউইয়র্ক টাইমস লিখছে আগামি এক মাসের মধ্যে কাবুল সরকারের পতন হতে পারে বলে আমেরিকানরা আশঙ্কা করছে। 

‘আফগানিস্তানের উত্তরের বড় বড় শহর যে গতিতে তালেবান কব্জা করছে এবং যেভাবে আফগান সেনাবাহিনীর প্রতিরোধ ভেঙ্গে পড়ছে তাতে বাইডেন সরকার আফগানিস্তান থেকে আমেরিকানদের বের করে আনার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছে’ বলছে নিউইয়র্ক টাইমস।

পেন্টাগন জানিয়েছে, আরও অতিরিক্ত ৪ হাজার মার্কিন মেরিন সেনা ওই অঞ্চলে যাচ্ছে যাতে পরিস্থিতি বেগতিক হলে তারা দ্রুত আফগানিস্তানে যেতে পারে। কাবুল থেকে আমেরিকান নাগরিক এবং কূটনীতিকদের জরুরি ভিত্তিতে ফিরিয়ে আনার এই পরিকল্পনা ইঙ্গিত করছে যে আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে প্রেসিডেন্ট বাইডেন অনড়।

বুধবার রাত এবং বৃহস্পতিবার সকালে দু’দফায় প্রেসিডেন্ট বাইডেন তার সিনিয়র জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সাথে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে পরামর্শ করেন। সেখানে আমেরিকান নাগরিক ছাড়াও যেসব আফগান নাগরিক আমেরিকানদের জন্য কাজ করেছে এবং প্রাণের ঝুঁকিতে রয়েছে তাদের সরিয়ে আনতে বাড়তি ফ্লাইটের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন মি. বাইডেন।

‘ফ্লাইট পাওয়া মাত্রই’ প্রস্থানের পরামর্শ

কাবুলে মার্কিন দূতাবাস থেকে গত কয়েকদিন ধরে কয়েক দফায় ‘ফ্লাইট পাওয়া মাত্রই’ দ্রুত আফগানিস্তান ছাড়ার জন্য আমেরিকান নাগরিকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস গতকাল শুক্রবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন, কাবুলে মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সরিয়ে আনার প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু হবে। এই সংখ্যা হবে চার হাজারের মত যাদের মধ্যে ১৪০০ আমেরিকান নাগরিক।

মি প্রাইস বলেন, ‘তালেবানের সামরিক তৎপরতা যেভাবে বাড়ছে, যেভাবে সহিংসতা এবং অস্থিতিশীলতা আফগানিস্তান জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে তা নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’

কিন্তু একই সাথে মি প্রাইস কাবুলে দূতাবাস বন্ধের সম্ভাবনা নাকচ করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আবার পরিষ্কার করতে চাই যে কাবুলে দূতাবাস খোলা থাকবে।’

নির্ভরযোগ্য একাধিক সরকারি সূত্র উদ্ধৃত করে নিউইয়র্ক টাইমস লিখেছে, ‘আফগানিস্তান থেকে দূতাবাস কর্মীদের সরিয়ে আনার ব্যবস্থা করার পাশাপাশি দোহায় তালেবানের কাছ থেকে নিশ্চয়তা চাওয়া হচ্ছে যে কাবুল দখল করলেও তারা যেন মার্কিন দূতাবাসের ওপর কোনো হামলা না করে।’

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ধারণা আগামি এক মাসের মধ্যে তালেবানের হাতে কাবুলের পতন হতে পারে।

শুক্রবার দক্ষিণ আফগানিস্তানের আরও তিনটি বড় শহর-  লশকার গাহ, হেরাত এবং কান্দাহার- তালেবানের দখলে গেছে। আর মাত্র তিনটি বড় শহর- কাবুল, জালালাবাদ এবং মাজার-ই শরিফ এখনও সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

সৈন্য পাঠাচ্ছে ব্রিটেন

এদিকে আমেরিকানদের কাছ থেকে ঘোষণা আসার পরপরই ব্রিটেনও জানিয়েছে কাবুলে ব্রিটিশ দূতাবাসের কর্মী এবং ব্রিটিশ নাগরিকদের ফিরিয়ে আনায় সাহায্য করতে ৬০০ সৈন্য কাবুলে পাঠানো হচ্ছে।

গত সপ্তাহেই ব্রিটিশ সরকারে পক্ষ থেকে সমস্ত ব্রিটিশ নাগরিককে যত দ্রুত সম্ভব আফগানিস্তান ছাড়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এখনও প্রায় ৪ হাজার ব্রিটিশ নাগরিক আফগানিস্তানে রয়েছে।

তবে, ব্রিটিশ সরকারও জোর দিয়ে বলছে কাবুলে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত স্যার ল্যরি ব্রিসটো এবং অল্প কজন কর্মকর্তা আফগানিস্তানে রয়ে যাবেন। তবে তারা কাবুলের আরও কোনো সুরক্ষিত জায়গায় চলে যাবেন।

এএইচ/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি