ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪

নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ছয় বছর পূর্তি আজ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০১:১৬, ২৭ এপ্রিল ২০২০

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের ছয় বছর পূর্ণ হলো আজ সোমবার। নারায়ণগঞ্জের নিম্ন আদালতে রায়ের পর উচ্চ আদালতে ২০১৮ সালে ২২ আগস্ট ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বহাল রেখে অন্য আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা বহাল রাখেন। 

বর্তমানে মামলাটি সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। দেড় বছর ধরে মামলাটি আপীল বিভাগে থাকায় নিহতের আত্মীয়-স্বজনরা হতাশা প্রকাশ করেছেন। নিহতদের পরিবারসহ নারায়ণগঞ্জবাসী সাত খুন মামলার রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানান। 

এ মামলায় ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, র‌্যাব-১১-এর চাকরিচ্যুত সাবেক অধিনায়ক লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন ও লে. কমান্ডার এম মাসুদ রানাসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদানের আদেশ দেন। নিহতদের সাতটি পরিবারের মধ্যে ৫টি পরিবার উপার্জনক্ষম ব্যক্তিদের হারিয়ে এখন অর্থকষ্টে মানবেতর জীবনযাপন করছে। 

সাত খুনে নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী ও একটি মামলার বাদিনী সেলিনা ইসলাম বিউটি বলেন, সাত খুন মামলার রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছি। উচ্চ আদালত থেকে সাত খুনের আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি দণ্ডাদেশসহ যে রায়টি হয়েছে সেই রায়টি যেন সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগে বহাল থাকে। আমরা এ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে কথা বলেছি, তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে সাত খুন মামলায় কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। 

সেলিনা ইসলাম বিউটি বলেন, সাত খুনে সাতটি পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। এদের মধ্যে ৫টি পরিবার এখন চরম অর্থকষ্টে দিনযাপন করছে। 

নিহত তাজুল ইসলামের পিতা আবুল খায়ের বলেন, আমরা নিম্ন আদালত থেকে আসামিদের ফাঁসির রায়টি দ্রুততম সময়ে পেয়েছি। কিন্তু মামলাটি এখনও উচ্চ আদালতের আপীল বিভাগে আটকে আছে। আমরা বর্তমানে সাত খুন মামলাটি নিয়ে শঙ্কিত ও হতাশ হয়ে পড়েছি। কারণ সাত খুনের আসামি খুবই প্রভাবশালী ও টাকাওয়ালা লোক। 

তিনি বলেন, আমরা সাত খুন মামলার রায়টি জীবিত থাকতে দেখে যেতে চাই। কারণ আমরা জানতে পেরেছি সাত খুনে নিহত সিরাজুল ইসলাম লিটনের বাবা গত দুদিন আগে মারা গেছেন। তিনি তার ছেলের হত্যার বিচার দেখে যেতে পারলেন না। আমরা সাত খুন মামলার রায় দ্রুত কার্যকর করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে জোরদাবি জানাই। 

নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, সাত খুন মামলাটি উচ্চ আদালতের আপীল বিভাগে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। হাইকোর্ট ডিভিশনে সাত খুন মামলায় যে সাজাটি বহাল রেখেছেন সেই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষ আপীল বিভাগে আপীল করেছেন। আশা করি এ বছরই মামলাটি শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু এখন করোনাভাইরাসের কারণে উচ্চ আদালতের সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তাই এ মামলাটি এখন একই অবস্থায় রয়েছে। এ মামলাটি আপীল বিভাগে শেষ হলে এরপর রিভিউ হবে। 

তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ২৬ জনের ফাঁসি ও ৯ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজার আদেশ হয়। আসামি পক্ষের আপীলের পর হাইকোর্ট বিভাগ নিম্ন আদালতে যেখানে ২৬ জনের ফাঁসির আদেশ ছিল সেখানে হাইকোর্ট ১৫ জনকে ফাঁসির আদেশ বহাল রেখেছেন। মৃত্যুদণ্ড ১০ জনের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছেন। তবে মূল আসামিদের মৃত্যুদণ্ড বহাল আছে। অন্য আসামিদের সাজা বহালও রেখেছেন। 

তিনি বলেন, হাইকোর্ট যে রায়টি দিয়েছেন আমরা আশা করি আপীল বিভাগেও সেই একই রায়টি বহাল থাকবে।

এমবি//


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি