পোশাকবিধি নিয়ে গভর্নরের ক্ষোভ, সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার
প্রকাশিত : ১২:৩৭, ২৪ জুলাই ২০২৫

কর্মীদের পোশাক নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়েছে। মিডিয়ার মাধ্যমে বিষয়টি বিদেশে অবস্থানরত গভর্নরের নজরে এলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং তার নির্দেশনায় বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) এক বার্তায় একথা জানান তিনি।
মুখপাত্র আরিফ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মরত সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় অফিস সময়ে পেশাদার ও মার্জিত পোশাক পরিধানের পরামর্শ দেয়ার বিষয়ে স্ব স্ব বিভাগীয় সভায় আলোচনায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। তবে এ বিষয়ে কোনো নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি এবং এ সংক্রান্ত কোনো সার্কুলারও জারি করা হয়নি।
এদিকে, কর্মক্ষেত্রে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পোশাকবিধিকে ‘পরামর্শমূলক’ বলছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
তারা বলছে, অতিশয় কারুকার্যপূর্ণ পোশাককে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। অফিসে কারও পোশাক পরিধানের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা খর্ব হবে না।
বুধবার (২৩ জুলাই) দিবাগত রাত ১২টা ৫১ মিনিটে এক বিবৃতিতে এ কথা বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এর আগে সোমবার (২১ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগ-২ সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগ ২-এর (বেনিফিটস অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন উইং) একটি বিভাগীয় মাসিক সভার অ্যাজেন্ডা ও কার্যবিবরণীতে নিয়মিত অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সেসব সিদ্ধান্তের একটি ছিল পোশাক নিয়ে।
গৃহীত সিদ্ধান্তের ১১ (ঘ) নম্বরে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের (সি ও ডি শ্রেণিভুক্ত কর্মচারীদের নির্ধারিত পোশাক ব্যতীত) সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় পেশাদার ও মার্জিত পোশাক পরিধান করতে হবে। যেমন- পুরুষ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ক্ষেত্রে ফরমাল শার্ট, লম্বা হাতা বা হাফ হাতা, ফরমাল প্যান্ট, ফরমাল জুতা পরতে হবে। জিনস ও গ্যাবার্ডিন প্যান্ট পরিহার করতে হবে।
নারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ক্ষেত্রে বলা হয়, শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ ও ওড়না, অন্যান্য পেশাদার শালীন পোশাক অবশ্যই সাদামাটা এবং পেশাদার রঙের হতে হবে। ফরমাল স্যান্ডেল বা জুতা, সাদামাটা হেডস্কার্ফ বা হিজাব হতে হবে। শর্ট স্লিভ ও লেংথের ড্রেস (ছোট হাতা ও দৈর্ঘ্যের পোশাক), লেগিংস পরিহার করতে হবে।
এ বিষয়ে গতকাল রাতে সংবাদমাধ্যমে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর এ বিষয়ে গতকাল দিবাগত রাতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিবৃতি দিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মরত বিভিন্ন বয়সী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে বয়সের পার্থক্যজনিত কারণে পুরুষ ও নারী উভয় সহকর্মীদের মধ্যে পোশাকের বৈচিত্র্য পরিলক্ষিত হয়। পোশাকের ধরনের নানা পার্থক্য হেতু নারী-নারী ও পুরুষ-পুরুষ সহকর্মীদের মধ্যে মানসিক বৈষম্য দূর করে পারস্পরিক বোঝাপড়া (বন্ডিং) আরও দৃঢ় করার লক্ষ্যে অফিসে পোশাক পরিধানের ক্ষেত্রে আলোচ্য সার্কুলারটি জারি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বিবৃতিতে বলা হয়, এটা একটি পরামর্শমূলক সার্কুলার। নারী সহকর্মীদের বোরকা ও হিজাব পরিধানের ক্ষেত্রে কোনো বাধ্যবাধকতা বা নির্দেশনা আরোপ করা হয়নি। এই সার্কুলারের মাধ্যমে অতিশয় কারুকার্যপূর্ণ পোশাককে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আশা করি এই সার্কুলারের মাধ্যমে অফিসে কারও পোশাক পরিধানের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা খর্ব হবে না।’
এএইচ
আরও পড়ুন