প্রথম ধাপে বাদ যাচ্ছে ৬৫টি দলের নিবন্ধন আবেদন
প্রকাশিত : ২২:৪১, ৩ আগস্ট ২০২৫ | আপডেট: ২২:৫৪, ৩ আগস্ট ২০২৫

নিবন্ধন শর্ত পূরণের ১৫ দিন সময় শেষে জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) ৮০টি দল নথিপত্র জমা দিলেও জমা না দেওয়া নিবন্ধনপ্রত্যাশী ৬৫টি দলের আবেদন প্রথম ধাপ থেকে বাদ পড়ে যাচ্ছে। আইন অনুযায়ী সময়ের মধ্যে তথ্য না দিলে দলের নিবন্ধন আবেদন না-মঞ্জুর করবে সংস্থাটি।
রোববার (৩ জুলাই) শর্ত পূরণের সময় শেষে এমন তথ্য জানিয়েছেন ইসি কর্মকর্তারা।
ইসির সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, ১৪৫টি দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করলেও তারা কেউই শতভাগ তথ্য পূরণ করতে না পারার কারণে আমরা ১৫ দিন সময় দিয়ে সব দলকে চিঠি দিয়েছিলাম। সেই সময় আজ শেষ হলো। এ সময়ের মধ্যে ৮০টি দল তথ্য পূরণের জন্য কাগজপত্র জমা দিয়েছে। আইন অনুযায়ী বাকি ৬৫টি দলের নিবন্ধন আবেদন বাতিল করে দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, আইন অনুযায়ী ১৫ দিন পর নতুন করে আর সময় দেওয়ার সুযোগ নাই। যেহেতু ১৫ দিনের বেশি বাড়তি সময় বিধান নাই সেহেতু কমিশন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে বলে আমি মনে করি।
আইন অনুযায়ী, প্রাথমিক যাচাই-বাছাই কমিশনের কোনো রাজনৈতিক দল যদি নিবন্ধন আবেদন সঠিকভাবে পূরণ না করে অথবা শর্তপূরণ বা দলিলাদির ঘাটতি থাকে তাহলে সেই দলগুলোকে ১৫ দিন সময় দিয়ে প্রয়োজনীয় দলিলাদি সরবরাহসহ অন্যান্য ত্রুটি সংশোধনের সুযোগ দিয়ে চিঠি দেয় কমিশন। চিঠি পাওয়ার পর নিবন্ধন আবেদনকারী দল প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ করলে কমিশন আইন অনুযায়ী নিবন্ধন আবেদন মঞ্জুর বা না-মঞ্জুর করবে। এছাড়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিবন্ধন আবেদনকারী দল কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে সেই দলকে নিবন্ধনের অযোগ্য বিবেচনা করে আবেদনর বাতিল করে দেবে।
গত ২২ জুন পর্যন্ত ১৪৫টি দল নিবন্ধন পেতে আবেদন করেছিল। তবে প্রাথমিক বাছাইয়ে কোনো দলই শর্ত পূরণ করতে পারেনি। তাই জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) ১৪৫টি দলকেই প্রয়োজনীয় ঘাটতি পূরণে ১৫ দিন সময় দেওয়া হয়েছিল। আজ রোববার (৩ আগস্ট) বিকেল ৫টায় সেই সময় শেষ হয়েছে। এক্ষেত্রে যে সকল তথ্য দেয়নি, তাদের নিবন্ধন পাওয়ার আর সুযোগ থাকছে না।
আইন অনুযায়ী, নিবন্ধন পেতে ইচ্ছুক দলের একটি কেন্দ্রীয় কমিটি, এক তৃতীয় জেলা ও ১০০টি উপজেলা কমিটি এবং প্রতিটি কমিটিতে ২০০ ভোটারের সমর্থনের প্রমাণ থাকতে হয়। এছাড়াও কোনো দলের কেউ পূর্বে সংসদ সদস্য থাকলে বা পূর্বের নির্বাচনের পাঁচ শতাংশ ভোট পেলেও নিবন্ধন পাওয়ার যোগ্যতা হিসেবে ধরা হয়। এই প্রধান শর্তগুলো ছাড়াও বেশকিছু নিয়ম কানুন মেনে আবেদন করতে হয়। প্রাথমিক বাছাইয়ে এসব নিয়ম কানুনগুলোই সাধারণত খেয়াল করা হয়।
নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় দলগুলোর আবেদন পাওয়ার পর কমিশন প্রথমে এগুলো প্রাথমিক বাছাই করে। এরপর সেই দলগুলোর তথ্যাবলি সরেজমিন তদন্ত শেষে বাছাই সম্পন্ন করে দাবি আপত্তি চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয় কমিশন। সেখানে কোনো আপত্তি এলে শুনানি করে তা নিষ্পত্তি করা হয়। আর কোনো আপত্তি না থাকলে সংশ্লিষ্ট দলগুলোকে নিবন্ধন সনদ প্রদান করে ইসি। নিবন্ধন ছাড়া কোনো দল নিজ প্রতীকে ভোটে প্রার্থী দিতে পারে না।
বর্তমানে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৫১টি (আওয়ামী লীগসহ)। নবম সংসদ নির্বাচনের আগে ২০০৮ সালে নিবন্ধন প্রথা চালু হয়। এ পর্যন্ত ৫৫টি দল ইসির নিবন্ধন পেলেও পরবর্তীতে শর্ত পূরণ, শর্ত প্রতিপালনে ব্যর্থতা এবং আদালতের নির্দেশে পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিল করে ইসি। দলগুলো হলো- জামায়াতে ইসলামী, ফ্রিডম পার্টি, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, পিডিপি ও জাগপা। সস্প্রতি আদালতের আদেশে জামায়াতে ইসলামী ও জাগপা নিবন্ধন ফিরে পেলেও ইসি কেবল জামায়াতের নিবন্ধন ফিরিয়ে দিয়েছে।
এসএস//
আরও পড়ুন