ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪

প্রথম বারের মতো পালিত হবে ‘শেখ রাসেল দিবস’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৪২, ১৭ অক্টোবর ২০২১

‘শেখ রাসেল দীপ্ত জয়োল্লাস, অদম্য আত্মবিশ্বাস’ এ প্রতিপাদ্যে নিয়ে সোমবার (১৮ অক্টোবর) প্রথম বারের মত 'ক' শ্রেণির জাতীয় দিবস হিসেবে জাতীয়ভাবে দেশব্যাপী জেলা-উপজেলা এবং বিদেশস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসসমূহে যথাযথ মর্যাদায় উদযাপিত হবে শেখ রাসেল দিবস ২০২১। 

আজ রাজধানীর আগারগাঁয়ে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) অডিটোরিয়ামে প্রথমবারের মতো ‘ক’ শ্রেণীর জাতীয় দিবস হিসেবে ‘শেখ রাসেল দিবস-২০২১’ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

দিবসটি উপলক্ষে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু এবং শিক্ষা, শিল্পকলা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি, ক্রীড়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ১০টি শেখ রাসেল স্বর্ণপদক, শেখ রাসেল পদকপ্রাপ্ত ও অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের ২০টি ল্যাপটপ, এলইডিপি’র আওতায় মূল অনুষ্ঠানে ৫টি এবং স্ব স্ব জেলায় ৩৯৯৫টি মোট ৪,০০০টি ল্যাপটপ প্রদান করা হবে। এছাড়া শেখ রাসেল শিশু- কিশোর পরিষদ ৬০টি পুরস্কার বিতরণ করবে। দিবসটির গুরুত্ব তুলে ধরে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হবে।

জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, পাশাপাশি, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে যেভাবে তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল, যেভাবে দীর্ঘ ২১টি বছর দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল, সেই কালো অধ্যায়কেও এই দুই প্রজন্মকে জানাতে হবে।

তিনি আরো বলেন, ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের পাশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত বাড়িতে শেখ রাসেল জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর যখন জন্ম হয় বঙ্গবন্ধু তখন একটি নির্বাচনী প্রচার অভিযানে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের জন্য চট্টগ্রামে অবস্থান করছিলেন। 

জন্মাবার সময় বাবাকে কাছে না পেলেও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ রাসেলের চির বিদায় হয়, তার পিতার সাথেই। সেদিনের সেই কাল রাত্রিতে ঘাতকরা একে একে পরিবারের আঠারো জন সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করে, নিষ্পাপ শেখ রাসেলকেও সেইদিন খুনীরা রেহাই দেয়নি বলেও উল্লেখ করেন প্রতিমন্ত্রী।

সংবাদ সম্মেলনে পলক আরো জানান, শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা পৃথিবীর ইতিহাসে এরকম নির্মম হত্যাকান্ডের নজির আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। শুধু হত্যাকান্ডের মধ্যেই শেষ নয়, এই হত্যাকান্ডের বিচার যেন বাংলাদেশের মাটিতে  কোনদিন না হয়, সেজন্য ’৭৫ এর সেই ঘাতক খুনীরা বাংলাদেশের সংবিধানকে কলংকিত করে ইনডেমিনিটি অধ্যাদেশ জারি করেছিল এবং সেই ইনডেমিনিটি অধ্যাদেশ খুনী জিয়াউর রহমান তার ১৯৭৯ সালের পবিত্র জাতীয় সংসদ গঠনের জন্য সেটা আইনে পরিণত করেছিলেন এবং সেই ইনডেমিনিটি অধ্যাদেশ ততদিন পর্যন্ত ছিল, সেই আইনটি বাংলাদেশে ‘কালো আইন’ আমাদের কলংকিত করেছিল, যতদিন পর্যন্ত না বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন, আবারো আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার গঠনের আগ পর্যন্ত সেই  কালো আইন বাংলাদেশে বলবৎ ছিল। 

তিনি বলেন, জাতির পিতার হত্যাকান্ডের বিচার আমরা চাইতে পারি, কিন্তু দশ বছরের নিষ্পাপ শহীদ শিশু শেখ রাসেলের হত্যাকান্ডের বিচার আমরা বাংলাদেশে চাইতে পারিনি। বঙ্গবন্ধু রেখেছিলেন দার্শনিক বারটান্ড রাসেলের নামানুসারে শেখ রাসেলের নাম। যে রাসেল তাঁর পিতা-মাতা,ভাইবোন ও পরিবারের সদস্যদের সাথে তাঁর দশটি মাত্র বছরের জীবন কাটিয়েছিল, তাঁর স্বপ্ন-আশা-আকাঙ্খা সব কিছুকে ’৭৫ এর খুনীরা নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। 

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মাটিতে শেখ রাসেলের হত্যার বিচার পর্যন্ত চাইতে পারিনি। আইন করে সেই বিচার চাওয়ার পথকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। ১৯৯৬ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনা নির্বাচিত হওয়ার পর সেই কালো আইন বাতিল করে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যাকান্ডের বিচারের কাজ শুরু হয়। দীর্ঘদিন পর সেই হত্যাকান্ডের বিচারের আংশিক রায় কার্যকর হয়েছে। এখন পর্যন্ত সেই খুনীরা বিদেশের মাটিতে পালিয়ে রয়েছে। 

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদফতর এবং শেখ রাসেল জাতীয় শিশ–কিশোর পরিষদের যৌথ আয়োজনে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলমের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তৃতা করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদফতরের মহাপরিচালক (দায়িত্ব) মো: রেজাউল মাকছুদ জাহেদী, বিশেষ অতিথি ছিলেন, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের মহাসচিব কে.এম শহিদ উল্যা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে শেখ রাসেল এর উপর নির্মিত অডিও ভিজ্যুয়াল প্রদর্শন এবং পরে, শেখ রাসেল দিবস-২০২১ এর লোগো উন্মোচন করা হয়। 

এসি

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি