ঢাকা, শুক্রবার   ০৪ জুলাই ২০২৫

ফলের গন্ধে মৌ মৌ করছে চারদিক

সোহাগ আশরাফ

প্রকাশিত : ১৪:০৮, ৪ জুন ২০২১

Ekushey Television Ltd.

চলছে মধু মাস। বাজারে পাকা আম, কাঁঠাল, লিচু, আনারস, তরমুজ, ডেউয়া, লটকন, কালো জাম, গোলাপ জাম, বেতফল, গাব, জামরুল, আতাফল, কাউ, শরীফাসহ নানা ফলের সমাহার। আর এই সব নানান ফলের গন্ধে মৌ মৌ করছে চারদিক। 

বাংলা ঋতুতে চৈত্র পেরিয়ে বোশেখ ছাড়িয়েই আসে জৈষ্ঠ্য। এ মাসেই দেশিয় বেশিরভাগ ফল প্রকৃতির উপহার হিসেবে ধরা দেয় মানুষের কাছে। নাম, গন্ধ আর স্বাদে এ ঋতুর ফলের তুলনা নেই। 

রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, মৌসুমি ফল সাজিয়ে রেখেছেন বিক্রেতারা। যদিও ঢাকার বাজারে বিগত দিনগুলোতে উচ্চমূল্যের কারণে এসব ফলের নাগাল কম আয়ের মধ্যবিত্ত আর নিম্নবিত্ত মানুষেরা পায় না। তবে গত কয়েক বছরের তুলোনায় এ বছর ফলের দাম কিছুটা কমই বলা চলে।

বাজারে বিভিন্ন জাতের আমের মধ্যে প্রতি কেজি হিমসাগর ৫০-৭৫ টাকা, ল্যাংড়া ৬৫-৭৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া ঢাকার বাজারে গুটি আম নামে পরিচিত বিভিন্ন জাতের দেশি আমের দাম ৬০-৭০ টাকা কেজি।

কারওয়ান বাজারে ছোট ছোট একেকটি কাঁঠাল ১৪০-১৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। বিভিন্ন আকারের কাঁঠালের দাম ১২০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা বা তারও বেশি।
 
কিছুদিন আগে লিচুর দাম ২৫০-৩০০ এর মধ্যে থাকলেও এখন বেশ চড়া। জাতভেদে প্রতি ১শ’ লিচুর দাম ৩৫০ টাকা থেকে ১ হাজার। এর মধ্যে কদমা লিচু ও বেদানা লিচুর দাম বেশি। এ লিচুগুলোর দাম ৬শ’ টাকা থেকে ১২শ’ টাকা পর্যন্ত। এ লিচুগুলো বাজারে খুব একটা দেখা যায় না। সাধারণ জাতের লিচুর দাম খানিকটা কম। এ লিচুর দাম ৩৫০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত।

এছাড়া কালো জাম বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৬০ টাকা কেজিতে। 

অন্যান্য গ্রীষ্মকালীন অন্যান্য ফলের মধ্যে আনারসের দাম কিছুটা কম। জলডুগি জাতের বিভিন্ন মানের একেকটি আনারসের দাম ৩০ টাকা থেকে ৩৫ টাকা।

মধু মাসের মিষ্টি ও সুস্বাদু ফল মিশে আছে আমাদের ঐতিহ্যের সাথে। দেশীয় ফল আমাদের সংস্কৃতি, সভ্যতা ও ঐতিহ্যের বড় একটি অংশ। জ্যৈষ্ঠ্য মাসের ফল পরিবেশের যেমন সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে, তেমনি স্বাদ ও পুষ্টিতেও অনন্য।

এছারাও, দেশীয় ফল পুষ্টিগুণ বিদেশী ফলের চেয়ে তুলনামূলক ভাবে অনেক বেশি। মৌসুমি ফল দেহের রোগ প্রতিরোধ করতে ব্যাপক সাহায্য করে থাকে। যেমন ভিটামিন সমৃদ্ধ কাঁচা আম চোখ ভালো রাখতে সহায়তা করে থাকে, কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে থাকে। দেশীয় ফল ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি সহ দেহের খাদ্য পরিপাক ও পানির চাহিদা মেটাতে সাহায্য করে থাকে। তাই চিকিৎসকরাও এসব ফল বেশি বেশি খাওয়ার পরামর্শ দেন।

কথা হয় ফলের ক্রেতা ইকবাল হোসেনের সঙ্গে। কাঁঠাল আর আম কেনার পর ঘুরছিলেন লিচুর বাজারে। তিনি বলেন, এবার সব ফল যেন একসঙ্গেই এসেছে। অন্যান্যবার প্রতিটি ফল কিছু সময় পরপর এলেও এবার আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, আনারস সবই এখন বাজারে। এটা বেশ ভালো।

তিনি বলেন, রাজধানীর অন্য যেকোনো জায়গার তুলনায় কারওয়ান বাজারে দাম বেশ কম। তাই বেশকিছু ফল কিনেছি, আরও কিছু কেনার ইচ্ছে আছে। আর আশা করি সামনে আরও সরবরাহ বাড়বে এবং তখন ফলের দাম আরও কমবে।

এদিকে মৌসুমি ফলের দাম নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মাঝে। ফল বিক্রেতারা বলছেন, লকডাউনের কারণে পণ্য পরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি পাওয়ায় দাম বেড়েছে ফলের। তারপরও দাম কমেছে এবং সামনে আরও কমবে।

বিক্রেতা আনোয়ার বলেন, কিছুদিন ধরেই গরম পড়তে শুরু করেছে। আর ফলও পাকতে শুরু করেছে। বাজারে যেমন ফল আসছে, তেমনি ক্রেতাও আছে। তবে দাম একেক জায়গায় একেক রকম।
এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি