ঢাকা, শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪

‘বাংলাদেশে মাদকসেবী ফিলিপাইনের চেয়েও বেশি’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৫১, ২২ মে ২০১৮

দেশে মাদক ব্যবসা এবং এর ব্যবহার এখন এক ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এখন দেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা প্রায় ৭০ লক্ষ, যার অধিকাংশই ইয়াবাসেবী। এটা ফিলিাইনের চাইতেও অনেক বেশি। ২০১৬ সালেও সেদেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা ছিল ১৮ লাখ। এ তথ্য জানিয়েছেন একজন বিশেষজ্ঞ।

ফিলিপাইনে রডরিগো দুতার্তের সরকার গত বছর মাদকের বিরুদ্ধে যে সশস্ত্র অভিযান শুরু করে তাতে এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৮শ`-রও বেশি মাদকাসেবী, বিক্রেতা বা পাচারকারী নিহত হয়েছেন, যাকে মানবাধিকার সংগঠনগুলো `বিচার-বহির্ভূত হত্যা` বলে আখ্যায়িত করেছে।

বাংলাদেশে এখন মাদকের যে পরিস্থিতি তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং ভয়াবহ বলে মন্তব্য করেছেন নর্থসা্‌উথ বিশ্বিবদ্যালয়ের অধ্যাপক এমদাদুল হক, যিনি উপমহাদেশে মাদকাসক্তির ইতিহাস নিয়ে একাধিক বই লিখেছেন্। বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বাংলাদেশেও মে মাসের শুরু থেকেই এক মাদকবিরোধী অভিযান শুরু করেছে পুলিশ ও র‍্যাব। আজ মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত ১৮ দিনে কথিত বন্দুকযুদ্ধে অন্তত ৩৪ মাদক ব্যবসায়ী ও পাচারকারী নিহত হয়েছেন। এরা বিভিন্ন ধরণের মাদক বিশেষ করে ইয়াবা বিক্রি ও পাচারের সঙ্গে জড়িত বলে বলা হচ্ছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলছেন, মাদকব্যবসার সঙ্গে সন্ত্রাসী-অস্ত্রবাজরা জড়িত হয়ে পড়েছে এবং এ ব্যাপারে সরকার `জিরো টলারেন্স` নীতি নিয়েছে।

অধ্যাপক এমদাদুল হক বলছেন, বাংলাদেশে মাদকাসক্তদের একটা বড় অংশই হচ্ছে ইয়াবাসেবী। তাছাড়া আছে ফেন্সিডিল, হেরোইন এবং অন্যান্য মাদক।

অধ্যাপক বলেন, এতদিন এ বিষয়টা খোলামেলা ভাবে আলোচিত হয়নি। কিন্তু পরিস্থিতি সত্যি ভয়াবহ। বিভিন্ন নিরাময় কেন্দ্রে গিয়ে আমি মাদকাসক্তদের সঙ্গে কথা বলে যে তথ্য পেয়েছি তা সরকারি পরিসংখ্যানের চাইতে বেশি। সব মিলিয়ে মাদকাসক্তের সংখ্যা ৭ থেকে ১০ মিলিয়নের মধ্যে হবে।

এমদাদুল হক বলেন, বাংলাদেশে এ সমস্যার মোকাবিলা করতে গেলে এর চাহিদা, সরবরাহ, চিকিৎসা - এরকম অনেকগুলো দিক দেখতে হবে। একক কোনও পন্থা নিয়ে এরকম একটা বিরাট সমস্যার মোকাবিলা করা প্রায় অসম্ভব। এর জন্য একটা সামগ্রিক কৌশলগত পরিকল্পনা এবং কার্যকর পদক্ষেপ লাগবে।

তিনি বলেন, মাদক পাচারের দুটো দিক আছে। একটি হলো পেডলার বা খুচরো বিক্রেতা। আরেকটা হচ্ছে যারা এই ব্যবসার মূল নিয়ন্তা- যারা গডফাদার। বাংলাদেশে এ সরকারি অভিযানে যারা টার্গেট হচ্ছে তারা প্রধানত পেডলার লেভেলের। এখানে গডফাদারদের যে বিষয়টা তারা অনেক সময়ই রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকে। তাদের হাতে কোনও মাদক থাকে না। তাই এটা একটা আইনি সমস্যা যে, কর্তৃপক্ষ তাদের পেছনে লাগলেও তাদের হাতে কিছু পায় না।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে এটা নির্বাচনের বছর। তাই সরকারের প্রতি আমার অনুরোধ - এই যে যারা গডফাদার আছে যাদের কথা সরকার নিশ্চয়ই জানে। তাদেরকে হয় শাস্তি দিতে হবে অথবা কঠোরভাবে সতর্ক করতে হবে, যাতে তারা এ থেকে বিরত হয়। এরকম একটা প্রভাব বিস্তারের পদক্ষেপ নেওয়া যায় কি-না তা সরকার ভেবে দেখতে পারে।

সূত্র: বিবিসি

একে//


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি