ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৩ জুন ২০২৫

বাউফলে ইউএনওর অপসারণ দাবির সংবাদ সম্মেলনে হামলা

পটুয়াখালী প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ২২:৩২, ১ জুন ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে অসৌজন্যমূলক আচরণ ও সাংবাদিককে শাস্তি দেওয়ার হুমকির প্রতিবাদে ইউএনওর অপসারণ ও বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবিতে ডাকা সংবাদ সম্মেলন সন্ত্রাসী হামলায় পন্ড হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আজ রোববার বিকাল চারটায় উপজেলা পরিষদের মূল ফটকের অভ্যন্তরে ডাকবাংলোর সামনে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে বিকেল পাঁচটায় শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন শুরু করেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে,সংবাদ সম্মেলন শুরুর প্রাক্কালে ইউএনওর কার্ালয়ের এক কর্মচারীকে দিয়ে মুল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। সংবাদ সম্মেলন শুরু করলে কয়েক উশৃঙ্খল তরুণ জোরপূর্ক সংবাদ সম্মেলনের ব্যানার ছিড়ে নিয়ে যায়। এরপর লিখিত বক্তব্য পাঠ শুরুর একপর্যায়ে একই সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে জোড়পূর্বক সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যের কাগজ ছিনিয়ে নিয়ে যায়। অদূরে দাঁড়িয়ে থাকা কিছুক্ষণের মধ্যে ইউএনওর দেহরক্ষীর দায়িত্বে থাকা কয়েকজন আনসার সদস্য ও গ্রাম পুলিশের শতাধিক সদস্য এসে শিক্ষার্থীদের চলে যাওয়ার জন্য বলেন। প্রায় আধাঘন্টা বিষয়টি নিয়ে উভয়ের সঙ্গে বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে ধাক্কাধাক্কি  শুরু হয়। এরপরই সংবাদ সম্মেলন পন্ড হয়ে যায়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী শুভ চন্দ্র শীল বলেন,সাংবাদিককে প্রকাশ্যে জেলে ঢুকিয়ে দেওয়ার হুমকি ও অসৌজন্যমূলক আচরণসহ দুর্নীতিবাজ ইউএনওর অপসারণ ও বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবিতে কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করে আসছি। তার-ই ধারাবাহিকতায় আজ রোববার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। তা ইউএনওর ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের হামলায় পন্ড গেছে।

সিয়াম আহম্মেদ বলেন, আগে থেকেই সংবাদ সম্মেলন না করার জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিলেন ইউএনও আমিনুল ইসলাম। তিনি এখন ইউএনওর চাকুরির পাশাপাশি বাউফলে সন্ত্রাসী লালন পালন শুরু করেছেন। যাতে তাঁর অনিয়মেমর বিরুদ্ধে কেউ কোনো কথা বলতে না পারেন।

সংবাদ সম্মেলনের আয়োজক আরেক সদস্য মোছা. শাহনাজ বলেন, আমরা যুদ্ধ করে স্বাধীনতা এনেছি। এখন আমাদের বাক স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়ার অপচেষ্টা চলছে। তিনি আরও বলেন, বাউফলের ইউএনও আমিনুল ইসলাম একজন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা। ফ্যাসিষ্ট সরকারের দোসর এবং শেখ হাসিনার মুখ্য সচিবের ভাগনি জামাই।  ফ্যাসিবাদ সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার লক্ষে ইউএনও আমিনুল ইসলাম আমাদের বাকস্বাধীনতা কেড়ে নেওয়ার অপচেষ্টা করেছেন। এর বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।

এর আগে গত ২১ মে (বুধবার) বিকেলে উপজেলার সর্বস্তরের ছাত্র–জনতার ব্যানারে আয়োজিত কর্মসূচি থেকে ইউএনওর অপসারণের দাবি জানানো হয়।

এ বিষয়ে ইউএনও আমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন,‘উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। আর তাঁর জানাও নেই।’

এরও আগে গত ১৯ মে (সোমবার) ‘অবহিত না করে’ অনুষ্ঠান আয়োজন করা নিয়ে তর্কের জেরে উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও সাংবাদিক এ এইচ এম শহীদুল হকের সঙ্গে ইউএনওর অসৌজন্যমূলক আচরণ ও শাস্তির হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ওই দিন বাউফল আদর্শ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দুদকের পটুয়াখালী জেলা কার্যালয় ও বাউফল দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির আয়োজনে স্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বের দিনক্ষণ নির্ধারিত ছিল। দুপুর ১২টার দিকে অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে বিদ্যালয়ে এসেই ক্ষুব্ধ হন ইউএনও আমিনুল ইসলাম। এ নিয়ে শহীদুল হকের সঙ্গে ইউএনওর কথা–কাটাকাটি হয়। কথা–কাটাকাটির এক পর্যায়ে খেপে গিয়ে ইউএনওকে বলতে শোনা যায়, ‘প্রজাতন্ত্রের আমি এমন কর্মচারী মালিককে শাস্তিও দিতে পারি।’ এ–সংক্রান্ত ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

এসএস//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি