ঢাকা, সোমবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৪

বিশ্ব স্ট্রোক দিবস আজ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:১৫, ২৯ অক্টোবর ২০২৩ | আপডেট: ১৩:৩১, ২৯ অক্টোবর ২০২৩

আজ ২৯ অক্টোবর, বিশ্ব স্ট্রোক দিবস। এ বছরেও দিবসটি উপলক্ষে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করছে।

মস্তিষ্কে হঠাৎ রক্ত সরবরাহে বাধা সৃষ্টি হওয়াকেই স্ট্রোক বলে। রোগটির মূল কারণ মানুষের অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন। বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বেই তরুণদের মধ্যে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ছে।

অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপও ৫০ ভাগ স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। পাশাপাশি অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, ধূমপান, নিয়মিত মদ্যপান, কায়িক পরিশ্রম না করা, ফাস্টফুড বা জাংক ফুড গ্রহণও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।

এমন বাস্তবতায় আজ দেশে পালিত হচ্ছে বিশ্ব স্ট্রোক দিবস-২০২৩। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘টুগেদার উই আর, গ্রেটার দেন স্ট্রোক’ অর্থাৎ ‘আমাদের ঐক্য স্ট্রোকের চেয়েও প্রবল’।

দিবসটি উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসার্জারি বিভাগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

এছাড়া নিউরোসার্জারি সোসাইটি অব বাংলাদেশের উদ্যোগে রাজধানী, বিভাগ ও জেলা পর্যায়ের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে রোগটি সম্পর্কে সচেতনতামূলক বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হবে।

নিউরোসার্জারি বিশেষজ্ঞরা গণমাধ্যমকে বলেন, দেশে অসংক্রামক রোগে মৃত্যুর তৃতীয় কারণ স্ট্রোক। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এর লক্ষণ বুঝতে না পারার কারণে রোগীকে হাসপাতালে নিতে বিলম্ব করেন। অথচ স্ট্রোকের রোগীর জন্য প্রথম চার ঘণ্টা গোল্ডেন আওয়ার বা অতি গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে হাসপাতালে নিতে পারলে, শুধু ওষুধ দিয়েই রোগী একদিন পরেই সুস্থ শরীরে হেঁটে বাড়ি ফিরতে পারে। কিন্তু অধিকাংশ সময় চিকিৎসকের কাছে আনতে দেরি হয় বলে ক্ষতি বেশি হয়।

এবিষয়ে ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, "অনেকের প্রচলিত একটি ধারণা, স্ট্রোক হৃদপিণ্ডের রোগ। স্ট্রোককে অনেকে হার্ট অ্যাটাকের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেন। বাস্তবে তা সত্য নয়, স্ট্রোক মস্তিষ্কের রোগ। স্ট্রোক সম্পূর্ণই মস্তিষ্কের রক্তনালির জটিলতাজনিত রোগ। মস্তিষ্কের রক্তবাহী নালির দুর্ঘটনাকেই স্ট্রোক বলা যায়। এ দুর্ঘটনায় রক্তনালি বন্ধও হতে পারে, আবার ফেটেও যেতে পারে। ফলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়। শরিরের যে  অংশকে নিয়ন্ত্রণ করে, স্ট্রোক হলে সেই সব অংশের বিভিন্ন অঙ্গ বিকল হয়ে পড়ে। মস্তিস্কের এক দিক আক্রান্ত হলে শরীরের উলটো দিক বিকল হয়ে পড়ে। স্ট্রোকে আক্রান্তদের মধ্যে ৪০ ভাগ মারা যান। যারা বেঁচে থাকে, তারা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ে বা চিরতরে পঙ্গু হয়ে যায়। তারা বেঁচে থেকেও দুর্বিষহ জীবন যাপন করে।

"স্ট্রোকে আক্রান্তের হার দিনে দিনে বেড়ে চলেছে। অনেক ক্ষেত্রে সচেতনতার অভাবে এই রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। আমাদের দেশে এখন ১৫ থেকে ২০ লাখ স্ট্রোকের রোগী রয়েছে। প্রতি হাজারে গড়ে তিন থেকে পাঁচ জন স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে।

"সাধারণত পঞ্চাশোর্ধ ব্যক্তিদের মধ্যে স্ট্রোকে আক্রান্তের হার বেশি লক্ষ্য করা গেলেও যে কোনো বয়সেই তা হতে পারে। বয়সি রোগীদের স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি থাকলেও ইদানীং তরুণ এমনকি শিশুরাও স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে। ৬০ বছর বয়সের পর প্রতি ১০ বছরে স্ট্রোকের ঝুঁকি দ্বিগুণ হয়। আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যাই বেশি, নারীদের মধ্যে স্ট্রোকে আক্রান্তের হার কম। ফাস্টফুডে আসক্তদের মধ্যে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি।"

উল্লেখ্য, বিশ্ব স্ট্রোক দিবস প্রতিবছর ২৯ অক্টোবর উদযাপিত হয়। মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ কোনো কারণে বিঘ্নিত হলে স্ট্রোক সংঘটিত হয়। বিশেষ করে রক্তনালী বন্ধ হয়ে কিংবা রক্তনালী ছিঁড়ে মস্তিষ্কে এই রক্ত সরবরাহ বিঘ্নিত হয়। রক্তে থাকে অক্সিজেন আর পুষ্টিগুণ। ফলে অক্সিজেনের অভাবে মস্তিষ্কের টিস্যুগুলো মারা যায়। স্ট্রোকের সবচেয়ে বড় কারণ হলো উচ্চরক্তচাপ। সারাবিশ্বে মৃত্যুর তৃতীয় প্রধান কারণ স্ট্রোক।

এমএম//


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি