ঢাকা, বুধবার   ৩০ জুলাই ২০২৫

বিষদস্যু ও শিকারিদের আগ্রসনে হুমকির মুখে সুন্দরবনের বাঘ

খুলনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৪:৩৬, ২৯ জুলাই ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

এশিয়ার মধ্যে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের বৃহত্তম আবাসভূমি হচ্ছে সুন্দরবন। কিন্তু সুন্দরবন বাঘের জন্য ক্রমেই অনিরাপদ আবাসস্থল হয়ে উঠছে। শিকারিদের দৌরাত্ম্য, খাবারের অভাব, সুন্দরবনে মাছ ধরার জন্য বিষ দেয়া, চোরা শিকারীর ফাদঁ বিভিন্ন হুমকির মুখে বাঘ।

আজ ২৯ জুলাই, বিশ্ব বাঘ দিবস। বাঘের প্রাকৃতিক আবাসস্থল রক্ষা ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এইদিনে সারাবিশ্বে দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়। দিনটি উপলক্ষে মোংলায় ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। 

মোংলা উপজেলা প্রশাসন এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) এবং পশুর রিভার ওয়াটারকিপারের আয়োজনে শিশু চিত্রাংকণ প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান হবে। এছাড়াও আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বিশ্ব বাঘ দিবস উপলক্ষে আলাদা আলাদা কর্মসূচি পালন করছে বলে জানা গেছে।

বাঘকে সুরক্ষিত রাখতে ২০১০ সালে দিবসটি পালনের শুভ সূচনা হয়।  ওই বছর বাঘ সংরক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরে রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করে বিশেষজ্ঞরা। ওই সময় বাঘের আবাসস্থল খ্যাত বাংলাদেশসহ ১৩টি দেশ একটি ঘোষণাপত্র জারি করে। 

ঘোষণাপত্রে ২০২২ সালের মধ্যে প্রতিটি দেশ বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ করার ঘোষণা দেয় তারা। তার মধ্যে নেপাল তাদের টার্গেট পূরণ করেছে। ভারত এবং ভুটানও বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণের কাছাকাছি নিয়ে গেছে। কিন্তু বাংলাদেশে বাঘের সংখ্যা সামান্য বাড়লেও সে লক্ষ্য থেকে দূরে আছে। অথচ রয়েল বেঙ্গল টাইগার বাংলাদেশের জাতীয় পশু। এটি বাঘের একটি বিশেষ প্রজাতি। 

এশিয়ার মধ্যে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের বৃহত্তম আবাসভূমি হচ্ছে সুন্দরবন। কিন্তু অনিরাপদ আবাসস্থল, শিকারিদের দৌরাত্ম্য, খাবারের অভাব, সুন্দরবনে মাছ ধরার জন্য বিষ দেয়া, চোরা শিকারীর ফাদঁ ও টোপ পেতে বন্যপ্রানী নিধন, বাঘভীতি সহ বিভিন্ন কারণে সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগারসহ বিভিন্ন প্রজাতির বাঘের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। 

বনবিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের আয়তন ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার। স্বাধীনতার পর ১৯৭৫ সালে দেশে প্রথম বাঘশুমারি হয়। ওই সময় সুন্দরবনে ৩৫০টি বাঘ ছিল। এরপর ১৯৮২ সালের জরিপে ৪২৫টি, ১৯৯২ সালে ৩৫৯টি, ১৯৯৩ সালে ৩৬২টি এবং ২০০৪ সালের জরিপে বাঘের সংখ্যা ছিল ৪৪০টি। তবে ২০১৫ সালে বাঘের সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ১০৬টিতে। ২০১৮ সালের সর্বশেষ জরিপে বাঘের সংখ্যা দাঁড়ায় ১১৪টি। 

চার বছর পর চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ক্যামেরা ট্র্যাকিং পদ্ধতিতে বাঘ গণনার কাজ শুরু হয়। চলতি বছরের জুন মাসে এই জরিপের ফলাফল প্রকাশ করার কথা থাকলেও তা প্রকাশ করা হয়নি। ওই প্রকল্পের কার্যক্রম এখনও ফাইল বন্দি রয়েছে। 

এদিকে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ২০৭০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে বাঘের জন্য কোনো উপযুক্ত জায়গা থাকবে না। সুন্দরবনে শিকারিদের অবাধ বিচরণ ও আবাসস্থল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে হুমকির মুখে রয়েছে সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে বাড়ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা। 

এ অবস্থায় হারিয়ে যেতে পারে দেশ-বিদেশী পর্যটকদেন আর্কষণ সুন্দরবনের সৌন্দর্য্য রয়েল বেঙ্গল টাইগার।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি