ঢাকা, শুক্রবার   ৩০ মে ২০২৫

বিসিবি থেকে সরে যাচ্ছেন ফারুক, আসছেন বুলবুল?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:০৬, ২৯ মে ২০২৫ | আপডেট: ১৩:৩৮, ২৯ মে ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব ছাড়তে যাচ্ছেন ফারুক আহমেদ। দেশের ক্রিকেট অঙ্গনে এমন গুঞ্জন আরও জোরালো হয়েছে। তবে তিনি স্বেচ্ছায় দায়িত্ব ছাড়ছেন কিনা সেটা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব নিতে পারেন জাতীয় দলের আরেক সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল।

২০০ কোটি টাকার অনিয়ম ও একনায়কতন্ত্রের অভিযোগ, জাতীয় দলের ধারাবাহিক ভরাডুবি—বোর্ড সভাপতি হিসেবে যেন শনির রেশ কাটছেই না ফারুক আহমেদের। তার জন্যই কি তাকে এই পদে রাখতে অনিচ্ছুক সরকার? নাকি এর পেছনে লুকিয়ে আছে আরও গভীর কোনো কৌশল?

অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) আরেক দফা বড়সড় পালাবদলের ছক কষা হচ্ছে। বিশ্বস্ত সূত্রের বরাতে জানা গেছে, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার বাসভবনে গোপন এক বৈঠকে ফারুক আহমেদকে জানানো হয়েছে—বোর্ডের শীর্ষপদে তারা পরিবর্তন চাইছেন। কিন্তু কেন এই পরিবর্তন? তবে কেন পরিবর্তন আনতে চাচ্ছেন, সে ব্যাখ্যা পাননি ফারুক। 

পরিস্থিতির এমন ঘূর্ণাবর্তে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—ফারুক কি স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়াতে যাচ্ছেন, না কি সরকারের একপ্রকার চাপেই পদ ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন? যদিও নির্বাচিত সভাপতি হিসেবে ফারুককে সরিয়ে দেওয়ার এখতিয়ার আইসিসির নিয়মে সরকারের নেই, তবুও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) মনোনীত পরিচালক হওয়ায় কিছুটা জায়গা থেকে যায়।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরপরই বিসিবিতে জায়গা করে নিয়েছিলেন ফারুক। এনএসসির মনোনয়নে পরিচালক হয়ে আসার পর পরিচালকদের ভোটে তিনি বোর্ডের সভাপতি হন। সেসময় সরিয়ে দেওয়া হয় পুরোনো শিবিরের জালাল ইউনুস ও সাজ্জাদুল আলমকে। কিন্তু মাত্র নয় মাস যেতে না যেতেই সেই ফারুককেই সরানোর ইঙ্গিত মিলছে সরকারের শীর্ষ মহল থেকে।

এই পরিবর্তনের ইঙ্গিতে বিসিবির ভেতরে চলছে নানা গুঞ্জন। সবচেয়ে আলোচিত নাম—জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক, বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম বুলবুল। আইসিসিতে তাঁর চাকরির মেয়াদ শেষ হতে চলেছে আগামী মাসেই। একইসঙ্গে গুঞ্জন উঠেছে, তাঁকে সামনে রেখে বিসিবির আগামী নির্বাচনের আগে একটি অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি গঠন করতে চায় সরকার।

কিন্তু এখানেই জটিলতা—বিসিবির গঠনতন্ত্রে এর কোনো সুযোগ নেই। ফলে কৌশলের আশ্রয় নিতে হতে পারে। সেই কৌশল হতে পারে ফারুক আহমেদের ‘স্বেচ্ছায়’ পদত্যাগ।

সূত্র বলছে, ফারুক সরকারের সঙ্গে আলোচনায় জানিয়েছেন, তিনি নির্বাচন করবেন না—এই শর্তে নির্বাচন পর্যন্ত সভাপতির দায়িত্বে থাকতে চান। তবে সরকার হয়তো ততটুকুও চান না। ঈদের আগেই ৩১ মে বিসিবির জরুরি সভার আগে অনেক কিছুই পরিষ্কার হয়ে যেতে পারে।

যদি ফারুক সরে দাঁড়ান, তাহলে এনএসসি আমিনুলকে নতুন পরিচালক করে বোর্ডে নিয়ে আসতে পারে এবং সরকারের ইশারা থাকলে তাঁকে সভাপতি নির্বাচিত করা নিতান্তই সময়ের ব্যাপার। আমিনুল এর আগে মুখ ফিরিয়ে নিলেও এখন আর তা করছেন না—এমনটাই বলছে নির্ভরযোগ্য সূত্র।

তবে এই পালাবদলের ছায়া দীর্ঘ হতে পারে বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য। আইসিসির গাইডলাইন অনুযায়ী, কোনো সরকারের হস্তক্ষেপে নির্বাচিত বোর্ডে পরিবর্তন আনা নিষিদ্ধ। শ্রীলঙ্কা, জিম্বাবুয়ের অভিজ্ঞতা সেই বাস্তবতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি