ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৯ মার্চ ২০২৪

ভেনেজুয়েলায় খাদ্য সংকটে নাগরিকেরা

বেঁচে থাকতে পঁচা মাংসই কিনছেন স্থানীয়রা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০০:১৫, ১৭ অক্টোবর ২০১৮ | আপডেট: ০০:১৬, ১৭ অক্টোবর ২০১৮

চলমান অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেই খাদ্য সংকটে ভুগছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ভেনেজুয়েলার নাগরিকেরা। বিদ্যুৎ সহ অন্যান্য শক্তি ও জ্বালানি সংকটে ভুগছে খোদ তেল সমৃদ্ধ এই দেশটি। সরকার বলছে, দেশ এক অর্থনৈতিক যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। তবে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানাচ্ছে দেশটির নাগরিকেরা।

দেশটির প্রতি আস্থা হারিয়ে কয়েক মিলিয়ন নাগরিক ইতিমধ্যে পালিয়েছেন দেশ ছেড়ে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনিশ্চয়তার পথে পা বাড়িয়ে সীমান্ত পেরিয়ে প্বার্শবর্তী দেশগুলোতে চলে যাচ্ছেন অনেকেই। দেশটির অবস্থা এতটা বেহাল যে, তেল সমৃদ্ধ অঞ্চলের রাজধানী বলে খ্যাত জুলিয়া শহরই এখন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। নেই পর্যাপ্ত খাবার। পশুর পঁচা মাংস কিনে খাচ্ছেন স্থানীয়রা।

বিবিসি’র ভ্লাদিমির হার্নান্দেজ সম্প্রতি এই অঞ্চল ঘুরে একটি প্রতিবেদনে প্রকাশ করেছেন। সেখানে দেখা যায়, বিদ্যুতের অভাবে নষ্ট হচ্ছে বাসা বাড়ির ইলেকট্রনিক ডিভাইস। মাংস সংরক্ষণ করতে না পারায় নষ্ট মাংসই বিক্রি হচ্ছে বাজারে। এমনকি পঁচতে শুরু করেছে মর্গের লাশও।

ভ্লাদিমিরের সচিত্র প্রতিবেদনে জুলিয়া শহরটির একজন নাগরিককে দেখা যায়, বাজার থেকে পশুর চর্বি কিনতে। মাংস না পেয়ে চর্বি কেনেন তিনি। ম্যানুয়েল নামের ঐ বাজারের এক মাংস বিক্রেতা বলেন, “প্রতিদিন এখানে ১০ বারের বেশি বিদ্যুৎ চলে যায়। প্রতিবার ঘন্টাব্যাপী বিদ্যুৎ থাকে না এখানে। ফলে পচন শুরু হয় আমাদের পণ্যে”। ভ্লাদিমির জানান, এভাবে পচে যাওয়া মাংসই বাজারে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। এক প্রকার বাধ্য হয়েই তা কিনছেন শহরবাসী।

এদিকে বিদ্যুতের দাবিতে সড়কে বিক্ষোভ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত মারিয়া ইগুনিয়া নামের এক নারী বলেন, “আমার অপারেশন করা হবে। কিন্তু বিগত পাঁচ দিন যাবত আমাদের শহরে বিদ্যুৎ নেই। আমার বাসায়ও নেই। ইতিমধ্যে আমার বাসার শীতাতাপ নিয়ন্ত্রক, পানির পাম্প ও ফ্রীজ নষ্ট হয়ে গেছে। আমার অন্য কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। তাই এখনও আছি”।

৩৫ থেকে ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ঘরে বায়ু চলাচলের জন্য দেয়াল ভেঙ্গে জানালা বানিয়েছেন এই বয়স্কা নারী।    

বিদ্যুৎ না থাকায় পচন ধরতে শুরু করেছে স্থানীয় মর্গে থাকা লাশগুলোতে। মর্গের কর্মী উইলফ্রেডো বলেন, “শরীরগুলো খুব বাজেভাবে পঁচে যাচ্ছে। গতকাল পোকায় ধরা একটি দেহকে আমি ব্যাগে ভরেছি। এসব করার জন্য মাস্ক বা গ্লাভস পর্যন্ত নেই আমাদের”।

তিনি আরও বলেন, “কিছু কিছু লাশ এখানে ৬ মাসেরও বেশি সময় ধরে আছে। কারণ যেখানে শেষকৃত্য হবে সেসব জায়গা সরকারের কাছে দেনায় পরে আছে। তাই সেখানে শেষকৃত্য হচ্ছে না”।

ভ্লাদিমির তার প্রতিবেদনের ইতি টানেন এভাবে- “জুলিয়ায় সংকট সবকিছুকে আক্রান্ত করেছে; এমনকি যারা মৃত তাদেরকেও”।

সূত্রঃ বিবিসি

//এস এইচ এস//


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি