ঢাকা, রবিবার   ১৯ মে ২০২৪

ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে আখাউড়া স্থলবন্দর

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৬:৪১, ১৮ জুন ২০২২

টানা বর্ষণ ও ভারতীয় পাহাড়ি ঢলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর এলাকা তলিয়ে গেছে। হাওড়া নদীর বাঁধ ভেঙ্গে গেছে। এতে দুটি ইউনিয়নের অন্তত আটটি গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

শনিবার ভোরে আখাউড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী মনিয়ন্দ ইউনিয়নের কর্নেল বাজার সংলগ্ন আইড়ল এলাকায় হাওড়া নদীর বাঁধ ভেঙ্গেছে বলে নিশ্চিত করেছেন মনিয়ন্দ ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুল আলম চৌধুরী দীপক। 

তিনি জানান, পানির প্রবল তোড়ে বাঁধ সংলগ্ন পীচ ঢালাই সড়কও ভেসে গেছে। পার্শ্ববর্তী মোগড়া ইউনিয়নের নিলাখাদ গ্রামসহ মনিয়ন্দ ইউনিয়নের আইড়ল, ইটনা, খারকুট, বড় লৌহঘর, ছোট লৌহঘর ও বড় গাঙ্গাইল গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামগুলোতে থাকা অনেক পুকুরের মাছ পানির তোড়ে ভেসে যাওয়ায় মৎস্য চাষীরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। 

হঠাৎ করে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় সীমান্তবর্তী এসব গ্রামের মানুষেরা বিপাকে পড়েছেন। গ্রামগুলোর নিচু বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়ায় জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে অনেক মানুষ। দ্রুত এই ভাঙ্গা বাঁধ মেরামত করতে না পারলে গোটা এলাকা প্লাবিত হয়ে যাবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

অন্য দিকে আখাউড়া স্থলবন্দর সংলগ্ন দক্ষিণ ইউনিয়নের কালিকাপুর ও আবদুল্লাহপুর গ্রামের ৯০টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় স্থানীয় আব্দুল্লাহপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কয়েকটি পরিবারকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে।

এদিকে বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার খবর পেয়ে শনিবার সকালে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অংগ্যজাই মারমা এবং স্থানীয় মনিয়ন্দ ইউপি চেয়ারম্যান দীপক চৌধুরী ভাঙ্গন এলাকাসহ পানিতে তলিয়ে যাওয়া গ্রামগুলো পরিদর্শন করেছেন।

আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অংগ্যজাই মারমা বলেন, আকস্মিক এ বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসন ইতোমধ্যে প্রস্তুতি নিয়েছে। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তাৎক্ষণিক কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় তারা এটি দেখছেন।

এদিকে টানাবর্ষণ ও ভারতীয় পাহাড়ি পানির তোড়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর এলাকা তলিয়ে গেছে। এতে যাত্রী পারাপারে দুর্ভোগ নেমে আসে। 

আখাউড়া ইমিগ্রেশন পুলিশের সহকারি পরিদর্শক মো. জাফর জানান, শুক্রবার দুপুর থেকে টানা বৃষ্টি ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে ঢলের পানি নেমে আসায় ইমিগ্রেশনের সামনের সড়ক প্রায় দুই ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ইমিগ্রেশন ভবনেও পানি ছুঁই-ছুঁই করছে। একপ্রকার পানিবন্দি অবস্থায় তাদেরকে কাজ সারতে হচ্ছে। বিকেল থেকে বন্দরের পাশ হয়ে যাওয়া খাল দিয়েও দ্রুত বেগে পানি আসছে।

মো. জাহাঙ্গীর নামের কুমিল্লার এক পাসপোর্টধারী যাত্রী জানান, একে তো প্রচুর বৃষ্টিপাত তার ওপর সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় ইমিগ্রেশন ভবনে যেতে মালামাল মাথায় করে নিতে হয়েছে। এতে সব মালামাল ভিজে যায়।

উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জালাল হোসেন জানান, পাহাড়ি ঢলের কারণে বন্দরসহ আশেপাশের এলাকার বাড়িঘরসহ বেশ কিছু পুকুর তলিয়ে গেছে। পাহাড়ি ঢলের পানি নামা অব্যাহত থাকায় পরিস্থিতি আরো অবনতি হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
কেআই//


Ekushey Television Ltd.





© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি