ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৪ জুলাই ২০২৫

মাক্রোঁর বিতর্কিত বিলে মন্ত্রিসভার সায়

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৪৯, ১০ ডিসেম্বর ২০২০

Ekushey Television Ltd.

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁর কঠোরপন্থী মুসলিমদের নিয়ন্ত্রণ, সরকারি কাজের সময় ধর্মীয় পোশাক পরা নিষিদ্ধসহ নানা বিতর্কিত সংবলিত বিলে সায় দিয়েছে দেশটির মন্ত্রিসভা। যা নিয়ে ফরাসী রাজনীতিবিদরা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। খবর ডয়েচে ভেলের। 

মন্ত্রিসভায় পাস হওয়ার পর সেই বিলের বিতর্কিত ধারাগুলো নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
  
মাক্রোঁ বলছেন বিচ্ছিন্নতাবাদীদের রুখতে বিল আনা হয়েছে। কিন্তু মন্ত্রী, রাজনীতিবিদরা বলছেন, কট্টরপন্থী মুসলিমদের নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্য নিয়েই বিল আনা হয়েছে। শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটিকে হত্যা ও কার্টুন বিতর্কের পর এই আইন এনেছেন মাক্রোঁ। মন্ত্রিসভায় বিল অনুমোদিত হয়েছে। এবার পার্লামেন্টে বিতর্ক হবে। তার আগে বিলে কী আছে, তার অনেকটাই সামনে এসেছে।

বিলে বলা হয়েছে, তিন বছর বয়স হলেই বাচ্চাকে বাধ্যতামূলকভাবে স্কুলে যেতে হবে। বিশেষ ক্ষেত্রেই তাকে বাড়িতে পড়াশুনোর অনুমোদন দেয়া হবে। বলা হচ্ছে, কট্টরপন্থীদের পরিচালিত গোপন স্কুলে বাচ্চাদের যাওয়া বন্ধ করতে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। গোপন স্কুলগুলোও নিষিদ্ধ করা হয়েছে বিলে।

বিলে বলা হয়েছে, সব মসজিদকে ধর্মস্থান হিসাবে নথিভুক্ত করতে বলা হবে। এখন মসজিদগুলো রুলস ফর অ্যাসোসিয়েশন-এর অধীনে আছে। ১০ হাজার ইউরোর বেশি বিদেশি সাহায্য পেলে মসজিদগুলোকে তা জানাতে হবে।

গত ২১ অক্টোবর প্যাটিকে মরনোত্তর লিজিয়ন অফ অনারে ভূষিত করে প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ বলেন, ‘আমরা কার্টুন ছাড়বো না৷ ইউরোপীয় গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধকে রক্ষা করতে গিয়ে প্যাটি জীবন দিয়েছেন । তিনি এই প্রজাতন্ত্রের মুখ।’

বিল অনুযায়ী, কোনো চিকিৎসক যদি কোনো নারীকে ভার্জিন সার্টিফিকেট দেন, তা হলে তার জরিমানা এবং এক বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। নারীবাদী মুসলিম এবং অধিকাররক্ষা কর্মীরা এই ধরনের সার্টিফিকেটের বিরুদ্ধে। কিন্তু উল্টোদিকের যুক্তি হলো, এই সার্টিফিকেট না থাকলে মেয়েরা নির্যাতিতা হতে পারেন। এমনিতেই ফরাসি আইন অনুসারে বহুবিবাহ বন্ধ। তারপরেও বিলে বহুবিবাহ বন্ধের কথা আবার বলা হয়েছে।

জোর করে বিয়ে বন্ধ করতে বিলে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ইচ্ছের বিরুদ্ধে বিয়ে দেয়া হচ্ছে, এমন সন্দেহ হলে স্বামী ও স্ত্রীকে আলাদাভাবে এক কর্মকর্তার কাছে যেতে হবে। কর্মকর্তা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। তিনি যদি মনে করেন, জোর করে বিয়ে হয়েছে, তা হলে সরকারি আইনজীবীকে ব্যবস্থা নিতে বলবেন।

সরকারি কাজের সময় কোনো ধর্মীয় পোশাক পরাও নিষিদ্ধ করা হয়েছে বিলে। 

মাক্রোঁর দাবি, ‘বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ফ্রান্সের বিপদের কারণ হয়ে উঠেছেন। তাই তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে এই বিল আনা হয়েছে।’

কিন্তু অধিকাররক্ষা গোষ্ঠীগুলোর মতে, ‘এই আইন হলে ফরাসি মুসলিমরা বৈষম্যের শিকার হবেন। ফলে এই বিল খুবই বিতর্কিত।’

তবে সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এই বিল কোনো ধর্মের বিরোধী নয়। বিলে কোথাও মুসলিম বা ইসলাম কথা লেখা নেই। প্রধানমন্ত্রীর দাবি, মসজিদ, স্কুল, জনসেবা ও বিভিন্ন গোষ্ঠীগুলো যাতে আরো ভালোভাবে চলে এবং ফ্রান্সের ধর্মনিরপেক্ষতা যাতে বজায় থাকে সেই লক্ষ্যেই বিলটি আনা হয়েছে।
এআই/এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি