ঢাকা, সোমবার   ২১ জুলাই ২০২৫

মুক্তিযুদ্ধ ও চব্বিশ গণঅভ্যুত্থানকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই: আলী রীয়াজ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৪:০২, ২১ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ১৪:৫০, ২১ জুলাই ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

 

জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ বলেছেন, আমাদের অস্তিত্বের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত মুক্তিযুদ্ধ ও চব্বিশের রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থানকে নিয়েই অগ্রসর হবার যাত্রা চলমান থাকবে। একে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই।

সোমবার সকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমীর দোয়েল হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের ষোড়শ দিনের আলোচনার শুরুতে প্রারম্ভিক বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

আলোচনা শুরুতে তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ, ৫৩ বছরের সংগ্রাম এবং গত বছরের একটি অভাবনীয় গণঅভ্যুত্থান, রক্তপাত ও প্রাণনাশকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। এগুলোকে সঙ্গে নিয়েই আমাদেরকে অগ্রসর হতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের প্রতিদিনের আলোচনার শুরুতেই আমরা যাদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করি, তারা হচ্ছেন আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা, যেই মুক্তিযুদ্ধ ব্যতীত আমরা কখনো এখানে আসতে পারতাম না। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িত। আমাদের সকল সাফল্য ও ব্যর্থতার ঊর্ধ্বে মুক্তিযুদ্ধ। লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণের বিনিময়ে দীর্ঘ সময়ের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা এ রাষ্ট্র অর্জন করেছি, রাষ্ট্রের পথরেখা নির্ধারণ করেছি।

অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সেই সংগ্রাম অব্যাহত থাকার মধ্য দিয়েই আমরা একটি ভয়াবহ ফ্যাসিবাদের মধ্যে নিপতিত হয়েছিলাম। সেখান থেকে সকলে মিলে একটি সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা এ জায়গায় এসেছি। এই পটভূমিকাই জাতীয় সনদের বিবেচ্য, আপনারা সেটা মাথায় রাখুন।

দ্রুত রাষ্ট্রীয় সনদ তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে, দ্রুত ঐকমত্যে পৌঁছাতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।

ড. আলী রীয়াজ বলেন, যদি আমরা ঐক্যমতে ৩১ তারিখের মধ্যে পৌঁছাতে চাই, যেটাকে আমি এটাকে বাধ্যবাধকতা বলে মনে করি, তবে আমাদের হাতে ১০ দিন সময় আছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে আমাদেরকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। এর মধ্যে একটি/দুটি বিষয় আছে, তার জন্য হয়তো সময় বরাদ্দ করা যাবে। কিন্তু কিছু কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছানো ব্যতিরেকে অগ্রসর হওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, আমরা যেহেতু প্রথম থেকে ‘নোট অফ ডিসেন্ট’ এর ব্যবস্থা রেখেছি সেহেতু কেউ চাইলে দ্বিমত পোষণ করতে পারেন এবং সেটি জাতীয় সনদে উল্লেখ থাকবে।

এর বাইরে আপনারা কমিশনের ওপর একটি দায়িত্ব অর্পণ করেছেন, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ গঠিত হবে কি হবে না, সে বিষয়ে আপনাদের মতামত বিবেচনা করে কমিশন আগামীকাল বা পরশু দিনের মধ্যে জানাবে।

গতকালকের অমীমাংসিত বিষয় নিয়ে আজকের আলোচনা শুরু হবে জানিয়ে তিনি বলেন, গতকাল তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে সমস্ত রকমের আলোচনা করার পরে কমিশন এটি ধারণা করছে যে কমিশনের পক্ষ থেকে যে সংশোধিত প্রস্তাব দেয়া হয়েছে তাতে অধিকাংশের একমত আছে এবং কিছু কিছু বিষয়ে কারো কারো দ্বিমত থাকতে পারে।

আজকের মধ্যে পরামর্শ করে বিষয়গুলো মীমাংসা করার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদেরকে জানানো হলে কমিশনের পক্ষ থেকে আগামীকালের বৈঠকে আবার সে বিষয়গুলো উত্থাপন করে একটি সিদ্ধান্তে আসা যায় কিনা সে প্রচেষ্টা করা হবে।

সবশেষে, রাজনৈতিক দলগুলোর আন্তরিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে দ্রুত একমতে পৌঁছাতে পারবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আজ বৈঠকে আরও উপস্থিত আছেন- কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান ও ড. আইয়ুব মিয়া।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আজকের আলোচনায় অংশগ্রহণ করছে- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি