ঢাকা, রবিবার   ১১ মে ২০২৫

রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পে দেশি রড ব্যবহারের দাবি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:১৯, ২৬ অক্টোবর ২০১৭ | আপডেট: ১৮:২০, ২৬ অক্টোবর ২০১৭

প্রতিকী ছবি

প্রতিকী ছবি

Ekushey Television Ltd.

বাগেরহাটের রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের অবকাঠামো নির্মাণে দেশি রড ব্যবহারের দাবি জানিয়েছেন ইস্পাত খাত সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। তারা বলেছেন, রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের অবকাঠামো নির্মাণে ডাকা আন্তর্জাতিক দরপত্রে দেশিয় রড উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সমান সুযোগ নেই। একইভাবে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে টানেল নির্মাণের রড সরবরাহের কাজও দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো পাচ্ছে না। বিষয়টি বাংলাদেশের রড উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বঞ্চনার। দেশীয় রডশিল্পকে বাঁচানোর জন্য বিদেশ থেকে বিনা শুল্ক ও করে রড আমদানি বন্ধের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে এ খাতের তিনটি সংগঠন।

দেশীয় রডশিল্পের সমস্যা ও সংকট নিয়ে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়েছে।  বাংলাদেশ অটো রি-রোলিং অ্যান্ড স্টিল মিলস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ স্টিল মিলস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ রি-রোলিং মিলস অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে লিখিত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ অটো রি-রোলিং অ্যান্ড স্টিল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মুহাম্মদ শহিদউল্লাহ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রামপাল ও কর্ণফুলী টানেলের মতো দুটি বড় উন্নয়ন প্রকল্পের ভৌত অবকাঠামো নির্মাণকাজে রড সরবরাহের সুযোগ দেশীয় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেওয়া হয়নি। প্রকল্প দুটিতে রড আমদানির জন্য উল্টো সব ধরণের শুল্ক ও কর ছাড় বিদেশী প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হচ্ছে। এতে একদিকে সরকার বড় ধরনের রাজস্ব হারাচ্ছে, অন্যদিকে দেশীয় রডশিল্প বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ছে।

বাংলাদেশে উৎপাদিত রড বিশ্বমানের দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ  প্রকল্প, এলিভেটেড এক্সপ্রেস হাইওয়ের মতো বড় বড় প্রকল্পে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদিত রড ও ইস্পাত ব্যবহৃত হচ্ছে। দেশের যেকোন বড় প্রকল্পে মানসম্পন্ন রড সরবরাহ করার সক্ষমতা দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর আছে। বর্তমানে দেশে রড ও ইস্পাতের বার্ষিক চাহিদা ৫০ লাখ টন, এর বিপরীতে মিলগুলোর উৎপাদনক্ষমতা ৮০ লাখ টন। অর্থাৎ চাহিদার চেয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদনক্ষমতা কমপক্ষে ৩০ লাখ টন বেশি।

বিদ্যুতের দাম বাড়ানো বিরোধিতা: নতুন করে সরকারের বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। এ বিষয়ে বলা হয়, বিশ্ববাজারে তেলের দাম এখন সর্বনিম্ন পর্যাযে আছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের মূল কাঁচামাল তেলের দাম যখন সর্বনিম্ন, তখন বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির উদ্যোগ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামের ওঠানামা বাংলাদেশে বিদ্যুতের মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে কোনোভাবেই প্রতিফলিত হয় না। বিদ্যুতের দামের পাশাপাশি গাজীপুর, আশুলিয়া, কোনাবাড়ী এলাকার শিল্পকারখানায় গ্যাসের তীব্র সংকট ও বিদ্যুৎ-বিভ্রাটের জন্য রড উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ অটো রি-রোলিং অ্যান্ড স্টিল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি    মনোয়ার হোসেন বলেন, নতুন করে যে হারে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।সেটি কার্যকর হলে টন প্রতি রডের দাম কমপক্ষে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত বাড়বে।

কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি: সম্প্রতি দেশের বাজারে রডের মূল্যবৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আন্তর্জাতিক বাজারে রডের কাঁচামাল আয়রন স্ক্র্যাপের দাম বেড়ে যাওয়ায় পণ্য মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। রডের আরেকটি কাঁচামাল ফেরো এলয়েজ আমদানিতে নতুন করে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর আরোপ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরে তীব্র জাহাজজটের কারণে কাঁচামাল ছাড়াতে দেরি হচ্ছে। এতে টনপ্রতি রডে ২হাজার ৪৫০ থেকে ২ হাজার ৮৫০টাকা পর্যন্ত খরচ বৃ্দ্ধি পাচ্ছে। এরপর বিদ্যুতের দাম বাড়লে রড ও ইস্পাতশিল্পে সামগ্রিকভাবে বিরূপ প্রভাব পড়বে।

/ এআর /


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি