রিফাতের হত্যাকারীদের ধরতে সেতুমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশ
প্রকাশিত : ১৯:২৬, ২৭ জুন ২০১৯

বরগুনার ঘটনায় হত্যাকারীদের ধরতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আন্তরিক চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, বরগুনায় এক যুবককে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন- যেভাবেই হোক দ্রুত হত্যাকারীদের গ্রেফতার করতে হবে। পুলিশ বিভাগ বিষয়টি নিয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আলাপকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, বরগুনায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে যুবক হত্যার ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। পুলিশ সোর্সে জানতে পেরেছি ইতোমধ্যে একজন গ্রেফতার হয়েছেন। যতদূর জেনেছি এটি প্রেমঘটিত, ব্যক্তিগত বিদ্বেষের বহিঃপ্রকাশ। ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকিদেরও গ্রেফতারের প্রক্রিয়া চলছে।
এসময় সরকার হস্তক্ষেপ না করলে খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে সাত দিনে, মওদুদ আহমেদের এমন বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, বার বার এক বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করতে ভালো লাগে না। খালেদা জিয়ার বিচার ও জামিনে সরকার কখনও বাধা দেয়নি। সক্ষমতা থাকলে তারা খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য তারা আন্দোলন করুক, কে বাধা দিয়েছে? তাদের ৫০০ জনের মিছিলও তো হয় না। তারা নির্বাচন ও আন্দোলন সব ক্ষেত্রেই ব্যর্থ। এমন ব্যর্থ বিরোধী দল আমি জীবনেও দেখিনি। বর্তমানে কোনও রাজনৈতিক অস্থিরতা নেই, এমন কোনও পরিস্থিতিও নেই।
বরগুনায় দিন-দুপুরে স্ত্রীর সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশ কাজ করছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রামের ইন্টারন্যশনাল কনভেনশন সেন্টারে ‘বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন অ্যাওয়ার্ড ২০১৯’ পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান শেষে তিনি এ কথা বলেন।
এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, একটি দুঃখজনক ঘটনা। এ ঘটনা কেন ঘটেছে তা তদন্তের পর ডিটেইল জানানো হবে। ঘটনার পর পুলিশ কিন্তু বসে নেই। আমি আপনাদের জোর গলায় বলতে পারি পুলিশ এখন পিছিয়ে পড়া অবস্থায় এখন নেই। আমি সব সময় বলি আপনি যদি ১০ বছর আগের পুলিশ আর এখনকার পুলিশ চিন্তা করেন তাহলে ভুল করবেন। আমাদের পুলিশ এখন অনেক দক্ষ এবং ইনফরমেড। আমার কাছে এ মুহূর্তের খবর হলো ইতোমধ্যে দুজনকে গ্রেফতার হয়েছে। বাকি যে কয়জন নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত তাদের সবাইকে গ্রেফতার করা হবে।
প্রসঙ্গত, বুধবার (২৬ জুন) সকাল ১০টার দিকে রিফাত ও তার স্ত্রী মিন্নি বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় ওঁৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা রাম দা নিয়ে রিফাতের ওপর চড়াও হয়। এ সময় মিন্নি তাদের বাধা দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। কিন্তু, তার বাধা সত্ত্বেও সন্ত্রাসীরা রিফাতকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। হাতে থাকা একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ দিয়ে বারবার আত্মরক্ষার চেষ্টা চালান রিফাত। কিন্তু তা যথেষ্ট ছিল না। সন্ত্রাসীরা তার হাত-পা, বুক, পিঠসহ সারা শরীর কুপিয়ে রক্তাক্ত করে। এ ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। এতে দেখা যায়, মিন্নি এ সময় একবার সন্ত্রাসী নয়নকে, আরেকবার নয়নের সহযোগী দুর্বৃত্ত রিফাত ফরাজীকে আটকানোর চেষ্টা করেন এবং ‘বাঁচাও, বাঁচাও, না না’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। কিন্তু, ততক্ষণে রাম দার কোপে মারাত্মক আহত হন রিফাত। এরপর তাকে উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে বিকালে রিফাত শরীফ মারা যান।
আরও পড়ুন