ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৯ মার্চ ২০২৪

লাভের আশায় কলা চাষে ঝুঁকছেন কামারখন্দের কৃষকরা

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১০:৩৬, ৮ জুলাই ২০২০

কৃষি প্রধান সিরাজগঞ্জের রাজগঞ্জ কামারখন্দে এককালীন ফলন ও অল্প খরচে লাভ বেশি হওয়ায় কলা চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা। অনেক কৃষকের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতাও এসেছে এ কলা চাষে।

অন্যান্য ফসলের তুলনায় কলা চাষে শ্রম ব্যয় খুবই কম। জৈব সার ব্যবহার করে কলা চাষ করার ফলে স্থানীয় বাজারে এ কলার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

একবার কলার চারা রোপণ করলে দুই-তিন মৌসুম ফল পাওয়ার কথা জানিয়ে কৃষিবিদ পারভেজ সরকার জানান, ‘আমি এক একর জমিতে কলা চাষ করেছি। বিঘা প্রতি ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকার খরচ করে ৫০-৬০ টাকা আয় করা যায়।’

কলা চাষে কৃষি অফিস থেকে কোন সহযোগিতা না পাওয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি। তবে বিভিন্ন সময় পরামর্শ চাইলে পরামর্শ পেয়েছেন।

উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে কলা চাষ করছে কৃষকরা। করোনা ভাইরাসের প্রভাবে চলতি মৌসুমে চাষিরা কলার দাম কম পেলেও অন্য মৌসুমে ভালো দাম পাওয়ার কারণে অনেক কৃষক চাষের পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছেন। বিশেষ করে ঝাঐল ইউনিয়নে কোনাবাড়ীতে এর চাষ বেশি করা হচ্ছে।

চাকরি না পেয়ে কলা চাষে সফল হওয়া সুজন আলী জানান, ‘জৈব সার ব্যবহার করার কারণে আমাদের এখানে ফলন ভালো হয়। এছাড়াও অন্যান্য ফসলের চেয়ে লাভ বেশি এবং শ্রমিক খরচ কম, যার জন্য আমরা কলা চাষে ঝুঁকছি।’

সাগর কলা, অমৃত সাগর, মেহর সাগরসহ বিভিন্ন জাতের চারা রোপণ করা হয় এ এলাকায়। প্রতি বিঘা জমিতে ৩শ থেকে ৪শ চারা রোপণ করা যায়। প্রায় এক বছর পর পর রোপণকৃত গাছ থেকে কলা পাওয়া যায়।

পাঁচ বিঘা জমিতে কলা চাষ করা সফল ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম জানান, ‘প্রায় পাঁচ বছর হলো কলা চাষ করছি। এলাকার মানুষ আমার কলা চাষ দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে কলা চাষে ঝুঁকছেন।’

কলা বিক্রির জন্য দূরে কোথাও যেতে হয় না জানিয়ে মাজহারুল ইসলাম সৈকত জানান, ‘আমি মূলত শফিকুল ইসলামের কলা চাষে সফলতা দেখে কলা চাষ শুরু করি। ফলন ভালো হওয়ায় প্রথম বছরেই আশানুরূপ লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

বয়স ভেদে বিভিন্ন গাছে কলার কাদি প্রায় সারা বছরই ফলন দেয়। প্রতি কাদি কাঁচা কলা স্থানীয় বিক্রেতাদের কাছে পাইকারি বিক্রি হয় প্রকার ভেদে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত।

এখানকার কলায় রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয় না জানিয়ে অছিমুদ্দিন আকন্দ জানান, ‘চার বছর যাবৎ কলা চাষ করে লাভবান হচ্ছি। অন্য ফসলের চেয়ে এটি অধিক লাভজনক হওয়ায় দিন দিন এলাকায় কলা চাষ বাড়ছে।’

উপজেলায় কত হেক্টর জমিতে কলা চাষ হচ্ছে, কলা গাছে রোগ বালাই ও পোকার আক্রমণ কেমন এবং কৃষি অফিস থেকে চাষীদের কি ধরনের সহযোগিতা করা হয় এমন প্রশ্নের জবাবে কামারখন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার সাদাত জানান, ‘এ বছর উপজেলায় ৪৫ হেক্টর জমিতে কলার চাষ হয়েছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কলা চাষিদের সকল প্রকার সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। কলা গাছে সাধারণ দুই ধরনের রোগের আক্রমণ হয় পানামা এবং সিগাটোকা।’

এআই/এমবি


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি