ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪

শতবর্ষ পরে কেমন হবে আমাদের পৃথিবী?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২১:৩৭, ২০ আগস্ট ২০১৭

পৃথিবীর আগামীর ভবিষ্যৎ কেমন হবে-এ প্রশ্নটা বর্তমানে আমাদের অনেকেরই। আগামী ৫০ থেকে দেড়শ’ বছর পরে পৃথিবী কোন দিকে যাবে?

জিন সম্পাদনা করে নীরোগ, নির্মেদ ‘আদর্শ’ মানুষ তৈরি করার বিদ্যা মানুষ আগামী ৫০ থেকে দেড়শ’ বছরের মধ্যে খুব ভালোভাবেই রপ্ত করবে। ক্রিস্পার ক্যাস৯-এর (CRISPR-Cas9) মতো জিন এডিটিং টুল এখনই চলে এসেছে। আর ক্যান্সার নিরাময়ে অর্জিত অগ্রগতির কারণে বয়স একশ’ বছরের নিচে কেউ আর ক্যান্সারের মৃত্যু বরণ করবে না। মানুষের গড় আয়ু বাড়বে, যেমনটা গত দেড়শ বছরে ধরে বেড়েই এসেছে।

আগামী দেড়শ বছরের মধ্যে মানুষ সিঙ্গুলারিটি পয়েন্টে, অর্থাৎ মানুষ অমর হবে—একথা সঠিক করে বলা যাবে না। ঊনিশ শতকে মানুষ গড়ে মাত্র ৩৭ বছর বেঁচে থাকতো। একুশ শতকে এসে সেটা ৭৮ বছরে পৌঁছেছে। কাজেই সিঙ্গুলারিটি পয়েন্টে পৌঁছাতে না পারলেও আগামী দেড়শ’বছরে যে গড় আয়ু বেড়ে একশ’ পার করবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই! এমনটা বলাই যায়।

একদিকে মানুষের গড় আয়ু দেড়শ’ থেকে দুইশ’ বছর, অন্যদিকে জনসংখ্যা বেড়ে ১৩ বিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে-এ রকম এক পৃথিবী দেড়শ’ বছর পরে সামান্য আর্থ-সামাজিক ভারসাম্যহীনতা কিন্তু ভীষণ রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। পৃথিবীর বর্তমান জনসংখ্যা সাত দশমিক তিন বিলিয়ন। আর ২০৫০ সালে জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে নয় দশমিক সাত বিলিয়ন আর ২১০০ সালে হবে ১১ দশমিক দুই বিলিয়ন।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাটিয়ে রোবটের উৎপাদন ব্যবহার এমন একপর্যায়ে পৌঁছাতে পারে যে, আফ্রিকা ও এশিয়ার বিশাল জনগোষ্ঠীর সঙ্গে ধনী দেশগুলোর সম্পদের ফারাক আকাশচুম্বী হয়ে উঠবে। উন্নত দেশগুলোর ত্রুটিহীন মানুষগুলো জিন পরিবর্তনের কারণে বড় লোকেরা হয়তো আজ থেকে একশ’ বছর পরে স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করবেন না। এরা তাঁদের বিপুল সম্পদ নিয়ে প্রথমে পৃথিবীর আন্তর্জাতিক পানি সীমানায় নিজস্ব কৃত্রিম দ্বীপ বানিয়ে বড়লোকপাড়া স্থাপন করবে।

কৃত্রিম দ্বীপে বসবাস?

ইরোপের দেশ মোনাকো, সুইজারল্যান্ড বা পশ্চিম পাম বিচ যতই বিত্তবান এলাকা হোক না কেন উত্তর আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য বা লাতিন আমেরিকা থেকে কিন্তু বেশি দূরে নয়। খোদ উত্তর আমেরিকায় শ্বেতাঙ্গরা যেমন সংখ্যালঘু। ‘বেআইনি’ আর ‘অসম্পূর্ণ’ সাধারণ মানুষে ভরপুর হয়ে যাবে। আজব চিন্তাগুলো বাস্তবায়নের পথ খুঁজবে উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপ মহাদেশের বিত্তবানরা।

আর তাই আটলান্টিক বা প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝখানে পানির ওপরে প্রতিষ্ঠিত হবে কিছু সমৃদ্ধশালী সার্বভৌম রাষ্ট্র। এই দ্বীপ রাষ্ট্রগুলোর মহা বিত্তবান লোকেরা প্রথমে অমর হতে চাইবে, পরে প্রথম সুযোগে চাঁদে, মঙ্গল গ্রহে বা অন্য গ্রহগুলোতে বসতি স্থাপন করবে। আর জলবায়ুর দিক থেকে বিধ্বস্ত, প্রাকৃতিক সম্পদের দিক থেকে নিঃস্ব অসহায় হয়ে পৃথিবীতে পরে থাকবে গরিব মানুষের দল।

আরেকটা প্রশ্নের উত্তর না খুঁজলেই নয়, সেটা হলো দেড়শ’ বছর পর্যন্ত পৃথিবীর অস্তিত্ব আদৌ টিকবে তো? পরিবেশ বিপর্যয়ের যে বার্তা দিন দিন মিলছে, তাতে শঙ্কা বেড়েই চলছে। তবে দেড়শ’ বছরের মধ্যে পৃথিবীর স্বাভাবিক মৃত্যু হবে না, কিন্তু পৃথিবীর অনেক দেশই বেড়ে যাবে সমুদ্রের পানিতে বৈশ্বিক উষ্ণতা। বিশ্বাস করুন আর না-ই করুন, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে আগামী দেড়শ বছরে অন্তত এক ফুট পানি বেড়ে যাবে। আগামীর পৃথিবীতে দিন দিন সম্ভাবনা যেমন বেড়ে যাবে, ঠিক তেমনি প্রযুক্তির উৎকর্ষতার কারণে কিছু সমস্যাও সৃষ্টি হবে ।

কেআই/টিকে


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি