শরীরচর্চায় মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়: গবেষণা
প্রকাশিত : ০৯:৪৬, ১১ আগস্ট ২০১৮ | আপডেট: ১২:২০, ১৪ আগস্ট ২০১৮
দৈনিক অন্তত ৪৫ মিনিট করে সপ্তাহে তিন থেকে পাঁচবার শরীরচর্চা মানসিক সমস্যার সমাধানে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
গবেষকরা একমাস ধরে ১২ লাখ মানুষের দৈনিক শারীরিক কার্যক্রমের তালিকা করেন এবং তাদের মানসিক অবস্থা বর্ণনা করেন। এর ভিত্তিতেই এ তথ্য দেওয়া হয়েছে।
গবেষণায় দেখা যায়, ব্যায়ামের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা ব্যায়াম না করা ব্যক্তিদের চেয়ে প্রতিমাসে ১ দশমিক ৫টি কম `বাজে দিন`-এর অভিজ্ঞতা করে থাকেন।
সবচেয়ে বেশি ইতিবাচক অভিজ্ঞতা হয় যারা দলগত খেলা, সাইক্লিং এবং ফুসফুস ও হার্টের ব্যায়াম করে থাকেন।
সব বয়স ও লিঙ্গের মানুষই শরীরচর্চার ফলে মানসিকভাবে ভাল বোধ করেন। ঘরের কাজ করা ও শিশুদের দেখাশোনা করাও এই তালিকার মধ্যে পরে।
ল্যান্সেট সাইকিয়াট্রি জার্নালে প্রকাশিত হওয়া এই গবষেণা এখন পর্যন্ত এই ধরণের যে কোনও গবষেণার মধ্যে সবচেয়ে বড় আকারের। তবে শারীরিক কার্যক্রম ব্যায়ামের কারণেই যে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয় এমন কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর শরীরচর্চার প্রভাব বিষয়ক পূর্ববর্তী গবেষণায় মিশ্র ফল পাওয়া গেছে। কিছু গবেষণা অনুযায়ী, কম পরিমাণে শরীরচর্চা করলে মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি হয় এবং মানসিক অবস্থা ভালো না থাকার কারণেও শরীরচর্চার আগ্রহ কমে যায়।
শরীরচর্চা করলে হৃদরোগ, স্ট্রোক ও ডায়বেটিসের সম্ভাবনা কমে যাওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে আগেই।
এই গবেষণায় অংশ নেওয়া প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিরা জানান, প্রতিমাসে গড়ে ৩ দশমিক ৪ দিন তারা মানসিকভাবে অপ্রসন্ন থাকেন। আর যারা শরীরচর্চা করেন তারা গড়ে প্রতিমাসে দুইদিন মানসিক বিষন্নতায় ভোগেন।
বিষন্নতার কারণে আগে যাদের চিকিৎসা নিতে হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে শরীরচর্চা আরও বেশি ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। বিষন্নতায় ভোগা ব্যক্তিদের মধ্যে যারা ব্যায়াম করেন বা শারীরিকভাবে সক্রিয়, তারা গড়ে প্রতিমাসে ৭ দিন মানসিকভাবে অপ্রসন্ন থাকেন যেখানে শারীরিকভাবে নিষ্ক্রিয় ব্যক্তিরা মাসে ১১ দিন অবসন্নতায় ভোগেন।
কত সময়ের জন্য শারীরিকভাবে সক্রিয় ছিলেন এবং কতদিন পরপর শরীরচর্চা করেন সেটিও গুরুত্বপূর্ন।
প্রতি দুইদিনে ৩০ থেকে ৬০ মিনিট শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকাকে সবচেয়ে বেশি কার্যকর বলে মনে করা হয়। অপরদিকে অতিরিক্ত ব্যায়ামে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকয়িাট্রির সহযোগী অধ্যাপক অ্যাডাম চেকরুড বলেন, ‘এমন একটা ধারণা ছিল যে যত বেশি ব্যায়াম করা হবে ততই মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে। তবে আমাদের গবেষণা বলে বিষয়টি এমনও নয়।’
তিনি জানান, মাসে ২৩ বারের বেশি ব্যায়াম করলে বা ৯০ মিনিটের চেয়ে বেশি সময় ধরে ব্যায়াম করলে মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থা খারাপের দিকেও যেতে পারে।
দলগত খেলাধুলার ইতিবাচক দিক হলো তা ব্যক্তিতে সামাজিকভাবে মানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ত রেখে একাকিত্ব বোধ করার সম্ভাবনা কমায়। যার ফলে মানুষের মধ্যে সহনশীলতা তৈরি হয় ও অবসন্নতা দূর হয়।
সূত্র: বিবিসি
এমএইচ/একে/










