ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪

সংঘাত নয়, আমরা উন্নতি চাই: প্রধানমন্ত্রী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৪:২৪, ২৯ মে ২০২২

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যুদ্ধ না, আমরা শান্তি চাই। সংঘাত নয়, আমরা উন্নতি চাই।

রোববার (২৯ মে) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস-২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কেবল বাঙালি জাতিরই নন, তিনি ছিলেন বিশ্বের নির্যাতিত, নিপীড়িত ও শোষিত মানুষের মুক্তির ও শান্তির দূত। এজন্য বিশ্ব শান্তি পরিষদ তাকে জুলিও কুরি শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর ১৯৭৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে।

সরকার প্রধান বলেন, "বাংলাদেশ সব সময় চায় শান্তি প্রতিষ্ঠা হোক। যুদ্ধ না, আমরা শান্তি চাই। সংঘাত না, আমরা উন্নতি চাই। জাতির পিতার শান্তি সেনানীরূপে ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় ‘ব্লু হেলমেট’ পরিবারের সদস্য হয়। আজ আমরা সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে গৌরবের  ৩৪ বছর উদযাপন করছি।"

তিনি বলেন, "জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে গত ৩৪ বছর ধরে বাংলাদেশের প্রতিটি শান্তিরক্ষী তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব দক্ষতা ও সফলতার সঙ্গে পালন করে যাচ্ছেন। আজ সমগ্র বিশ্বে শান্তিরক্ষায় সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান সর্বজনবিদিত।"

এ সময় বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় জীবন উৎসর্গকারী সকল শান্তিরক্ষীর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, "জাতিসংঘ মিশনে কার্যকর অংশগ্রহণ বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় আমাদের অবস্থানকে সুসংহত করেছে। একইসঙ্গে সামরিকভাবে শক্তিশালী দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের দেশের পারস্পরিক কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এছাড়াও, শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা দেশের জন্য বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছেন, যা আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছে।"

প্রধানমন্ত্রী বলেন, "সমসাময়িক বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বিশ্ব শান্তি নিশ্চিত করা অতীতের চেয়ে অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রযুক্তির দ্রুত প্রসার ও অগ্রযাত্রার সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রীয় এবং অরাষ্ট্রীয় অপশক্তিগুলো নতুন হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। ফলে বর্তমানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনগুলোতে শান্তিরক্ষীদের বহুমাত্রিক ও জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা অপারেশনে এ নতুন চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় আমরা আমাদের শান্তিরক্ষীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জামাদি দিয়ে প্রস্তুত করে তুলছি।"

আমাদের শান্তিরক্ষীরা ৪৩টি দেশে ৫৫টি মিশন সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছেন বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বর্তমানে ৯টি মিশনে আমাদের শান্তিরক্ষীরা নিয়োজিত রয়েছেন। এছাড়াও বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর বেশকিছু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বিভিন্ন মিশনে ডেপুটি ফোর্স কমান্ডার এবং সেক্টর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা বর্তমানে জাতিসংঘের পিস-বিল্ডিং কমিশনের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।

শান্তিরক্ষীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমাদের শান্তিরক্ষীদের একটা বিশেষ গুণাবলী হলো, শুধুমাত্র শান্তিরক্ষার দায়িত্বই পালন করেন না। সাথে সাথে অনেক সামাজিক দায়িত্বও তারা পালন করেন। তাই শিশু, নারী থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষের একটা বিশ্বাস, আস্থা আপনারা অর্জন করেন। সেজন্য আপনাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাই, ধন্যবাদ জানাই।

শহীদ শান্তিরক্ষীদের স্মরণ করে সরকার প্রধান বলেন, আমি আবারও সেই সব শান্তিরক্ষীদের স্মরণ করছি, যারা বিশ্ব শান্তির জন্য অকাতরে জীবন উৎসর্গ করে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের পতাকাকে সমুন্নত রেখেছেন। এ পর্যন্ত শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে আমাদের সর্বমোট ১৬১ জন শহীদ হয়েছেন। গত এপ্রিল পর্যন্ত বিগত এক বছরে দুই জন শান্তিরক্ষী শহীদ হয়েছেন। আমি তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোক-সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানাচ্ছি। এ বছর দুই জন শহীদ শান্তিরক্ষীর পরিবার এবং ১৪ জন আহত শান্তিরক্ষীকে সম্মাননা প্রদান করা হলো। আমি তাদের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকার কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি।

এসবি/ 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি