সীমাহীন লুটপাটে বিলীনের পথে সিলেটের সাদা পাথর
প্রকাশিত : ১৬:৪৭, ১২ আগস্ট ২০২৫

একসময় যেখানে পাহাড় আর সাদা পাথরের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হতো চোখ, আজ সেখানে শুধু ধুলা, শব্দ আর লুটের তাণ্ডব। সিলেটের ভোলাগঞ্জ—দেশের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র, যার পরিচয় ছিল 'সাদা সোনার রাজ্য'। আজ তা পরিণত হয়েছে অবাধ লুটপাটের মরণফাঁদে।
দিনদুপুরে প্রকাশ্যে পাথর কাটা, পরিবেশ ধ্বংস আর পর্যটন কেন্দ্রের অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার পথে, অথচ দেখার যেন কেউ নেই। প্রশাসনের দায়সারা মোবাইল কোর্ট আর চোখ বুঁজে থাকা নীরবতা—সব মিলিয়ে এক নিষ্ঠুর ব্যর্থতা, যার ভার বইছে প্রকৃতি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, একসময় রাতের আঁধারে মাঝেমধ্যে পাথর চুরি হলেও এখন দিনদুপুরে চুরি হচ্ছে কয়েক কোটি টাকার সাদা পাথর। যার কারণে এখন বিলীন হওয়ার উপক্রম সাদা সোনার রাজ্য।
প্রশাসনের সামনে দিয়ে বালু-পাথর লুট করে নিয়ে গেলেও কোনো কর্ণপাত নেই তাদের। সাদা পাথর লুটের জন্য ওই এলাকার বাসিন্দারা প্রশাসনকেই দুষছেন। তারা বলছেন, প্রশাসনের ব্যর্থতা আর মদদে এই লুটপাট চলছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকেই সাদা পাথরে শুরু হয় এই লুটপাট। পরে স্থানীয় ও সেনাবাহিনীর কারণে তা অনেকটা বন্ধ হয়। কিন্তু, তবুও সুযোগ বুঝে চলে এই লুটপাট। বিভিন্ন সময়ে প্রশাসন ধলাই নদীতে অভিযান চালালেও বন্ধ হয়নি এই লুটপাট।
যেদিকে পাথর কেনাবেচা হয় এবং গাড়ি বা বড় নৌকা করে পাথর যায়, সেদিকে অভিযান না হওয়াতে এই লুটপাট বন্ধ হচ্ছে না বলে দাবি করছেন এলাকাবাসী। আর এ কারণে এখন বিলীনের পথে রয়েছে সাদা পাথর।
আর এই পাথর লুটপাটের পেছনে মদদ রয়েছে বিএনপির এক নেতার। পাথর লুট ও চাঁদাবাজির অভিযোগে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাহাব উদ্দিনের দলীয় সব পদ স্থগিত করা হয়েছে। সোমবার বিএনপির কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে তাঁর পদ স্থগিতের কথা জানানো হয়।
নজিরবিহীন এই লুটপাটের বিষয়ে বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান হতাশা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, আগের চার বছর জাফলং-এ পাথর উত্তোলন বন্ধ রাখতে পেরেছিলাম, এখন আমি উপদেষ্টা হয়েও পারলাম না।
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, পাথর উত্তোলনে সর্বদলীয় ঐক্য দেখছি। একটি সুন্দর জিনিস কী করে হাতে ধরে কেমন অসুন্দর করতে হয় সেটা শিখতে হলে বাংলাদেশে আসতে হবে।
এএইচ
আরও পড়ুন