সু চির পদত্যাগ করা উচিত: জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধান
প্রকাশিত : ১২:৩৫, ৩০ আগস্ট ২০১৮ | আপডেট: ১২:৩৬, ৩০ আগস্ট ২০১৮
রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর জাতিগত নিধনের অভিযানের ঘটনায় মিয়ানমারের নেত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অং সান সু চির পদত্যাগ করা উচিত। সেই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের ওপর দোষ চাপাতে এবং সেনাবাহিনীকে দায়মুক্ত করতে সু চি যে ভূমিকা রেখেছেন সেটিকে গভীর দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের বিদায়ী মানবাধিকার হাই কমিশনার জাইদ রা’দ আল হুসেইন।
তিনি বলেছেন, নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সাবেক এই নেত্রী যেভাবে ঘটনাটিকে জায়েজ করার চেষ্টা করেছেন তা ‘গভীরভাবে দুর্ভাগ্যজনক’।
বিবিসির ইমোজেন ফৌলকেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হুসেইন বলেন, তিনি যে অবস্থানে আছেন, সেখান থেকে কিছু করতে পারতেন। তিনি চুপ করে থাকতে পারতেন- অথবা আরও ভালো হতো, তিনি যদি পদত্যাগ করতেন। বর্মী সেনার মুখপাত্র হওয়ার তার কোনো দরকার ছিল না। তিনি বলতে পারতেন, দেখ আমি, দেশের ন্যূনতম নেতা হওয়ার জন্য প্রস্তুত আছি, কিন্তু এসব অবস্থা সহ্য করে নয়।
সম্ভাব্য গণহত্যার জন্য মিয়ানমারের সামরিক নেতৃত্বকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসার সুপারিশ করে জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিবিসির কাছে তিনি এই মন্তব্য করলেন।
তবে ওই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে মিয়ানমার বলেছে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে তাদের শূন্য সহনশীলতা রয়েছে।
‘পদ্ধতিগত জাতিগত নিধন’ অভিযানের জন্য অভিযুক্ত মিয়ানমারের সেনাবাহিনী আগেও নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছে।
সোমবার প্রকাশিত জাতিসংঘের প্রতিবেদনে, সেনাবাহিনীর নৃশংসতা ঠেকাতে ব্যর্থতার জন্য দীর্ঘ দিনের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রী সু চিকে দায়ী করা হয়েছে।
বিবিসির ইমোজেন ফৌলকেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হুসেইন বলেন, তিনি যে অবস্থানে আছেন, সেখান থেকে কিছু করতে পারতেন। তিনি চুপ করে থাকতে পারতেন- অথবা আরও ভালো হতো, তিনি যদি পদত্যাগ করতেন। বর্মী সেনার মুখপাত্র হওয়ার তার কোনো দরকার ছিল না। তিনি বলতে পারতেন, দেখ আমি, দেশের ন্যূনতম নেতা হওয়ার জন্য প্রস্তুত আছি, কিন্তু এসব অবস্থা সহ্য করে নয়।
রোহিঙ্গা নিপীড়ন থেকে মিয়ানমার সেনাদের নিবৃত্ত করতে কোনো চেষ্টা না করায় সমালোচিত সু চির নোবেল পুরস্কার কেড়ে নেওয়ার দাবি উঠলেও ১৯৯১ সালে দেওয়া ওই পুরস্কার কেড়ে নেওয়া হবে না বলে বুধবার নোবেল কমিটি জানিয়েছে।
৭৩ বছর বয়সী এই নারী সেনা বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ না করলেও নৃশংসতার জন্য সেনাবাহিনীর প্রতি নিন্দা জানানোর বিষয়ে তার উপর আন্তর্জাতিক চাপ আছে।
গত বছর মিয়ানমারের রাখাইনে পুলিশের চৌকিতে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের ভয়াবহ হামলার পর দমন অভিযানে নামে সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর দমপ পীড়নে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয় এবং অগাস্ট মাস থেকে সাত লক্ষাধিক রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে নাফ নদী পেরিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। পৃথিবীর সব দেশ যেখানে উদ্ধাস্তু ও শরনার্থীদের জন্য দরজা বন্ধ করে দিচ্ছে সেখানে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে মানবতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বাংলাদেশের পাশাপাশি বিশ্ব সম্প্রদায়ও রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের দাবি তুলেছে। মিয়ানমার তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার অঙ্গীকার করলেও গড়িমসি করে বছর পার করে দিয়েছে।
/ এআর /
আরও পড়ুন