৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকার নতুন বাজেট

অভ্যন্তরীন উৎসকেই নির্ভরতার ভিত ধরে উচ্চাভিলাসী, কিছুটা ঘাটতির ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকার নতুন বাজেট দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। তার সর্বশ্রেষ্ঠ বাজেটে আগের বছরের চেয়ে ৬০ হাজার কেটি টাকা বেশি খরচ করতে চান। নতুন বাজেটের ১ লাখ ৬ হাজার ঘাটতির বড় অংশ মেটাতে হবে স্থানীয়ভাবে ধারদেনা করে। অর্থমন্ত্রীর আশা, নতুন অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির ৭ দশমিক ৪ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে।
সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রীসভার বিশেষ বৈঠকে অনুমোদন দেয়া হয় ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট ও অর্থবিল। পরে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতকে সাথে নিয়ে সংসদে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্পিকারের অনুমতি নিয়েই অর্থমন্ত্রী ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৪ লাখ ২৬৬ হাজার কোটি টাকা নতুন বাজেট দেন। ২ লাখ ৯৩ হাজার কোটি টাকা আয় এবং বাকি ১ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি কথাও আসে তার বাজেট বক্তৃতায়।
অর্থমন্ত্রী আগামী বাজেটে চলতি বাজেটের চেয়ে ৫০ হাজার কোটি টাকা বেশী আয়ের লক্ষ্য ঠিক করেছেন। আর ঘাটতিও চলতি বাজেট থেকে আগামী বাজেটে ১০ হাজার কোটি টাকা থেকে বেড়ে লাখ কোটি ছাড়িয়েছে।
বেতন-ভাতাসহ দেশ পরিচালনার খরচ মেটাতে অর্থমন্ত্রীকে যথারীতি অনুন্নয়ন রাজস্বখাতে ২ লাখ ৩৪ হাজার কোটি ব্যয় ধরেছেন। তবে এরমধ্যে ৪১ হাজার কোটি টাকার চলে যাবে দেশী-বিদেশী ঋণের সুদ পরিশোধে। রাস্তাঘাট, সেতু, বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীতে দেড় লাখ টাকার বেশী খরচ করবেন অর্থমন্ত্রী। প্রস্তাবিত বাজেটে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে শিক্ষা ও প্রয্ুিক্ত খাতে ১৬ দশমিক ৪ শতাংশ এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পরিবহন ও যোগাযোগ ১২ দশমিক ৫ শতাংশ।

অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তব্যে ২ লাখ ৯৩ হাজার কোটি টাকার আয়ের মধ্যে এনবিআরের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ২ লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহের প্রাক্কলন করেছেন। এনবিআর বহির্ভুত কর থেকে সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা, কর ব্যতিত প্রাপ্তি ৩১ হাজার কোটি টাকা আয়ের সাথে যোগ করেছেন সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার বিদেশী অনুদান। বহুল আলোচিত ভ্যাট থেকে আয় আসবে সর্বোচ্চ, ৯১ হাজার কোটি টাকা। অভিন্ন ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট এবং নতুন ভ্যাট আইন চালু হবে ১ জুলাই।
বাজেটের ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরিণ উৎস থেকে সর্বোচ্চ ৬০ হাজার কোটি টাকার অর্ধেক টাকাই অর্থমন্ত্রী যুগাবেন সঞ্জয়পত্র বিক্রি করে। তারপরও হাজার কোটি টাকার বিদেশী ঋনের স্বপ্নের হিসেবও রাখা হয়েছে।
চলতি অর্থবছরের ২০ লাখ কোটি টাকা মোট দেশজ উৎপাদন, জিডিপি লক্ষ্য থেকে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে আগামী অর্থবছরে অর্থমন্ত্রী জিডিপি আশা করছেন ২২ লাখ কোটি টাকা। সেই সঙ্গে উন্নয়নের মহাসড়কের নানা অগ্রগতি তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী। সময় এখন আমাদের, সময় এখন বাংলাদেশের-এই দর্শনের বাজেটকে টেবিল চাপড়ে সমর্থন জানান সংসদ সদস্যরা।