ঢাকা, রবিবার   ১১ মে ২০২৫

আবারো কি দেখা যাবে আসিফের সেই সুইং (ভিডিও)

প্রকাশিত : ১৩:৫৬, ২১ অক্টোবর ২০১৭ | আপডেট: ১৩:০৭, ২২ অক্টোবর ২০১৭

Ekushey Television Ltd.

ক্রিকেট বিশ্ব কি ভূলে গেছে মোহাম্মদ আসিফের কথা ! ভোলার কথা নয়। তার গতি ও সুইংয়ের দারুণ সমন্বয়ে করা বোলিং কি আর এতো সহজে ভূলতে পারেন ভক্তরা? তাই তো আসিফ ভক্তদের হাহাকার- ফিরবেন তো আসিফ !

একসময় ব্যাটসম্যানদের মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন পাকিস্তানি ফাস্ট বোলার মোহাম্মদ আসিফ। বর্তমান সময়ের অনেক সেরা ব্যাটসম্যানরই ‘দুর্ভাগ্য’ হয়নি তার বল খেলার। বর্তমান সময়ের ব্যাটসম্যানদের কথা বলতে গেলে সবার আগে যে নামটা আসবে তা হলো এবি ডি ভিলিয়ার্স। এশিয়া একাদশ ও আফ্রিকা একাদশের মধ্যকার একটি প্রীতি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিলেন দুজন। সে ম্যাচে আসিফের সুইং বুঝতে না পেরে বল ছেড়ে দিয়েছিলেন ডি ভিলিয়ার্স। সেই বল সরাসরি আঘাত হানে ডি ভিলিয়ার্সের স্ট্যাম্পে। শুধু ডি ভিলিয়ার্স নন, পন্টিং, ক্যালিস, রাহুল  দ্রাবিড়, ভি ভি এস লক্ষণ, শেভাগ এমনকি শচীন টেন্ডুলকারকেও ভূগতে হয়েছে আসিফের বোলিংয়ে। 

টেস্ট ক্রিকেটের আসিফ ছিলেন বেশি ভয়ঙ্কর। নিষিদ্ধ হওয়ার সময়ও বিশ্ব ক্রিকেটের ব্যাটসম্যানদের কাছে আতঙ্কের নাম ছিলেন এ সুইং-কিং। আইসিসি টেস্ট বোলিং র‌্যাঙ্কিংয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার ডেল স্টেইনের পরই ছিল তার অবস্থান। র‌্যাঙ্কিংয়ের দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন এই ডানহাতি পেসার। কিন্তু ভুল পথে পা বাড়িয়ে নিজের সুন্দর ক্যারিয়ারটাকে অন্ধকারে টেলে দেন তিনি। জেল খেটে, নিষিদ্ধ হয়ে শুনেছেন ধিক্কার।

পাক-ভারতের শ্বাসরুদ্ধকর সেই ম্যাচ : প্রতিভাবান আসিফের ক্যারিয়ার জুড়েই ছিলো বিতর্ক। তবে পারফর্মেন্সে কমতি ছিলনা আসিফের। দুর্দান্ত বোলিংয়ে পাকিস্তানকে অসংখ্যবার জিতিয়েছেন তিনি। ২০০৬ সালে পাক-ভারত টেস্ট সিরিজের সেই ম্যাচটি কি মনে পড়ে? যে ম্যাচের প্রথম তিন বলে হ্যাটট্রিক করে পাকিস্তানকে ধ্বসিয়ে দিয়েছিলেন ইরফান পাঠান। আসিফের দুর্দান্ত বোলিংয়ে সে ম্যাচেও ৩৪১ রানের বড় জয় পেয়েছিল পাকিস্তান। প্রথম ইনিংসে শুরুটা করেছিলেন ‘দ্য ওয়াল’ খ্যাত রাহুল দ্রাবিড়কে দিয়ে। এরপর সুইংয়ে বিধ্বস্ত করেছেন লক্ষণ-যুবরাজদের। দ্বিতীয় ইনিংসেও ছিলো আসিফের সুইং। দ্রাবিড়, শেভাগ ও শচীন টেন্ডুলকারকে একেবারে বোকা বানান তিনি। আসিফের সুইংয়ে তিন কিংবদন্তীরই স্ট্যাম্প উড়ে গেছিলো অনেক দূরে।

ওই বছর শ্রীলঙ্কা সফরেও বিশ্ব ক্রিকেট দেখেছে আসিফের বিষ-মাখা সুইং। তার সুইংয়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। ক্যান্ডিতে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৪৪ রানে ৬ উইকেট নেয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসেও ২৭ রানে ৫ উইকেট নিয়ে একাই ধ্বস নামিয়ে ছিলেন স্বাগতিকদের।

নিষিদ্ধ হওয়ার বছরেও দারুণ ফর্মে ছিলেন আসিফ। ২০১০ সালের সিডনি টেস্টে তখনকার পরাক্রমশালী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪১ রানে ৬ উইকেট নিয়ে ১২৭ রানেই গুড়িয়ে দিয়েছিলেন পন্টিংদের। এ বছরই হ্যাডিংলিতে মোহাম্মদ আমির আর মোহম্মদ আসিফ দুজনে অস্ট্রেলিয়াকে ৮৮ রানে অলআউটের লজ্জায় ডুবিয়ে ছিলো।

আসিফের দুর্দান্ত পারফর্মের এমন অসংখ্য ম্যাচ আছে যা নিয়ে আলোচনা করে শেষ করা দায়। পাকিস্তানের হয়ে ২৩টি টেস্টে ২.৯৯ ইকোনোমিতে ১০৬টি উইকেট নিয়েছেন আসিফ। ওয়ানডে-টি-টোয়েন্টিতেও পারফর্ম ছিলো দারুণ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট গতি আর সুইং দিয়ে অল্প সময়েই দর্শকদের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন আসিফ। বর্তমানে ঘরোয়া লিগে খেলা আসিফ আবারো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরবে- এটাই ভক্তদের বিশ্বাস। কিন্তু বাস্তবতা একটু প্রতিকূলেই মনে হচ্ছে। আসিফের বর্তমান বয়স পয়ত্রিশ ছুঁই-ছুঁই। ফাস্ট বোলারদের জন্য বয়সটা একটু বেশিই। তবে ভক্তদের বিশ্বাস- সবকিছু জয় করে আবারো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ফিরবেন সুইং-সম্রাট আসিফ।

 

ভারতের বিপক্ষে সেই ম্যাচে আসিফের বোলিং : ইউটিউব লিংক :

এমআর/এআর

 

 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি