ঢাকা, সোমবার   ০৪ আগস্ট ২০২৫

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লাখ মানুষ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২২:১৯, ১৮ আগস্ট ২০১৭ | আপডেট: ১৮:৪৭, ১৯ আগস্ট ২০১৭

Ekushey Television Ltd.

উজানে ভারি আর টানা বৃষ্টির কারণে চলমান বন্যায় এ পর্যন্ত দেশের ২৭ জেলার অর্ধকোটি বা ৫০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর এ বন্যায় গত এক সপ্তাহে প্রাণ হারিয়েছেন ৭৭ জন।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমের দ্বিতীয় দফার এ বন্যায় ছয় লাখ ১৮ হাজার ৭০৯ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজনীন শামীমা জানান, দেশের ২৭ জেলার ১৩৩ উপজেলা ও ৪৩টি পৌরসভা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বলেন, প্রায় ১১ লাখ ৪১ হাজার পরিবারের ৫০ লাখ ১৮ হাজার ৭০৬ জন বানভাসি মানুষ এ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত রয়েছে। তিন হাজার ১৯৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।

তথ্য অনুযায়ী, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, রংপুর, সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা, রাঙামাটি, নীলফামারী, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, খাগড়াছড়ি, দিনাজপুর, জামালপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, ময়মনসিংহ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাজবাড়ী নওগাঁ, জয়পুরহাট, যশোর, মৌলভীবাজার, ফরিদপুর, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ ও মাদারীপুর জেলার বিস্তীর্ণ জনপদ এখন বন্যা কবলিত।

এর মধ্যে কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নেত্রকোণা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, দিনাজপুর, জামালপুর, ময়মনসিংহ, রাজবাড়ী, নওগাঁ, জয়পুরহাট, যশোর ও টাঙ্গাইলে তিন হাজার ১৯৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।

যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে: ১৪ হাজার ৭৩৭টি ঘর সম্পূর্ণ এবং ২ লাখ ৪৭ হাজার ৮২৬টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুর্গত জেলাগুলোতে অন্তত ৪২ হাজার ৩১১টি টিউবওয়েল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কুড়িগ্রামে ১৮ জন, লালমনিরহাটে ৬ জন, সুনামগঞ্জে ২ জন, নেত্রকোণায় ২ জন, নীলফামারীতে ৫ জন, গাইবান্ধায় ৩ জন, সিরাজগঞ্জে ৪ জন, দিনাজপুরে ২৮ জন, জামালপুরে ৪ জন, ঠাকুরগাঁওয়ে ১ জন, নওগাঁয় ১ জন মিলিয়ে মোট ৭৭ জনের মৃত্যু হয়েছে গত এক সপ্তাহে।

ত্রাণ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর জানিয়েছে, ২৭ জেলার বন্যা দুর্গতদের মধ্যে এ পর্যন্ত ৫ কোটি ৯৮ লাখ ৮১ হাজার ৯৫০ টাকা নগদ, ১৬ হাজার ৪ মেট্রিক টন চাল এবং ৩৬ হাজার ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

অধিদপ্তরের পরিচালক আবু সৈয়দ মোহাম্মদ হাশিম গণমাধ্যমকে বলেন, চলমান বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এবারের বন্যা এখনও ১৯৯৮ বা ১৯৮৮ সালের মত ভয়াবহ রূপ নেয়নি। বন্যার বিস্তার ও স্থায়ীত্ব তুলনামূলকভাবে কম।

উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোর বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ভারি বৃষ্টি না হলে মধ্যাঞ্চল ও দক্ষিণ মধ্যাঞ্চলের অবনতিশীল পরিস্থিতিরও শিগগিরই উন্নতি হতে পারে।

উজানের পরিস্থিতি : বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, গঙ্গা- ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা এই তিন অববাহিকার মধ্যে গঙ্গা পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে, ব্রহ্মপুত্রের উজানের ভারতীয় অংশে এবং মেঘনা অববাহিকার ভারতীয় ও বাংলাদেশ অংশে পানি কমা অব্যাহত রয়েছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর ভারতীয় অংশের গোহাটিতে (বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ১৮০ কিলোমিটার উজানে) ৩৩ সেন্টিমিটার, পাণ্ডুতে (বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ১৬০ কিলোমিটার উজানে) ২২ সেন্টিমিটার, গোয়ালপাড়ায় (বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ৯০ কিলোমিটার উজানে) ২৭ সেন্টিমিটার এবং ধুবরী  (বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ২৫ কিলোমিটার উজানে) ১৮ সেন্টিমিটার পানি কমছে।

বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নুনখাওয়া, চিলমারী, বাহাদুরাবাদ, সারিয়াকান্দি এবং সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে কমেছে ব্রহ্মপুত্র-যমুনার পানি।

পূর্বাভাস কেন্দ্র জানায়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনার ভারতীয় অংশে আগামী ২৪-৩৬ ঘণ্টায় গড়ে ২১ সেন্টিমার পানি কমতে পারে। বাংলাদেশ অংশের ব্রহ্মপুত্র-যমুনার বিভিন্ন পয়েন্টে আগামী ৭২ ঘণ্টায় পানি কমা অব্যাহত থাকলেও গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি আগামী ৪৮ ঘণ্টায় বাড়বে।

আর/ডব্লিউএন


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি