ঢাকা, শুক্রবার   ১৮ জুলাই ২০২৫

শেখ ফজলে ফাহিমকে এফবিসিসিআই সভাপতি করতে চেম্বারগুলোর সমর্থন

প্রকাশিত : ২৩:৫৮, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

দেশের সুষম উন্নয়নে বিভিন্ন জেলার অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দেশের আর্থিক ও রাজস্ব নীতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখা, করের পরিধি বাড়ানো হলেও কর হার কমিয়ে আনা এবং নারী উদ্যোক্তাদের অগ্রাধিকারমূলক সহায়তা প্রদান ইত্যাদি দাবি জানিয়েছে দেশের ব্যবসায়ি নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও উত্তরবঙ্গে শিল্প স্থাপনের ক্ষেত্রে বিশেষ সহায়তা প্রদান, বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলে ‘বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’ স্থাপন এবং দিনাজপুর ও নীলফামারিতে গ্যাসলাইন স্থাপনের দাবি জানানো হয়েছে। ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ভ্যাট আদায়ের ক্ষেত্রে রাজস্ব বিভাগের হয়রানির অবসান চান।

আজ এফবিসিসিআইতে কাউন্সিল অব চেম্বার প্রেসিডেন্টস্-এর এক সভায় চেম্বার নেতৃবৃন্দ এসব বক্তব্য উপস্থাপন করেন। সভায় বিভিন্ন বিভাগ, জেলা, মেট্রোপলিটন চেম্বার এবং মহিলা চেম্বারগুলোর সভাপতিবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

রাজশাহী চেম্বারের সভাপতি মনিরুজ্জামান উল্লেখ করেন যে, দেশের মোট বিনিয়োগের ৭০ শতাংশ ঢাকায়, ২০ শতাংশ চট্টগ্রামে এবং অবশিষ্ট ১০ শতাংশ সারা দেশে রয়েছে। তিনি বলেন, সারা দেশে সমভাবে বিনিয়োগ এবং শিল্পায়ন হলে রাজস্ব আদায়ের পরিমানও সেভাবে বৃদ্ধি পাবে। তিনি উত্তরাঞ্চলে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিনিয়োগ বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব দেন। এছাড়াও শিল্পায়নের জন্য বিশেষ সহায়তা প্রদান এবং ২০/৮০ ইক্যুইটিতে ব্যাংক ফাইন্যান্স-এর ব্যবস্থা করার উপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন।

রংপুর মেট্রোপলিটন চেম্বারের সভাপতি রেজাউল ইসলাম মিলন বলেন, জেলা পর্যায়ে যে কোন ব্যবসা শুরুর জন্য জেলা চেম্বার অব কমার্স থেকে অনুমতি নেয়ার বিধান রাখা দরকার। এছাড়াও তিনি কোন ব্যবসা/ শিল্প স্থাপনের আগে সেই বিনিয়োগের ধরন কি হবে, পণ্যের চাহিদা ও যোগান ইত্যাদি স্থানীয় চেম্বারগুলোর সাথে আলোচনা করে নেয়ার নীতিমালা থাকার দাবি জানান। তিনি করের হার না বাড়িয়ে করের আওতা বাড়ানোর উপর গুরুত্ব দেন। এছাড়াও তিনি রংপুরে একটি ‘বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’ স্থাপনের দাবি জানান।

খুলনা চেম্বারের সভাপতি কাজী আমিনুল হক বলেন, ভ্যাট আদায় কার্যক্রমে জেলা চেম্বারসমূহকে স্থানীয় রাজস্ব কর্মকতাবৃন্দ গুরুত্ব দেয় না। রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে স্থানীয় চেম্বারসমূহকে সম্পৃক্ত করা হলে সরকারের রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পাবে। রাজস্ব আদায় প্রক্রিয়ায় হয়রানি বন্ধ করতে হবে এবং একই করদাতাকে বারবার চাপ না দিয়ে করের আওতা বাড়াতে হবে। আয়করের ক্ষেত্রে সারচার্জ না রাখার জন্যও তিনি অনুরোধ জানান।

চট্টগ্রাম উইমেন চেম্বাবের সভাপতি মনোয়ারা হাকিম আলী বলেন, নারী উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে সরকারের নারী উদ্যোক্তা ফান্ডটি এফবিসিসিআইয়ের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত করতে হবে।

রাঙ্গামাটি চেম্বারের সভাপতি বেলায়েত হোসেন বলেন, দেশের পার্বত্য অঞ্চলের পর্যটন খাত বিকাশ ও উন্নয়নের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহনের উপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন রাঙ্গামাটির ঠেকামূখ বন্দরকে কার্যকর করা হলে স্থানীয়ভাবে অর্থনৈতিক কার্যক্রম বৃদ্ধি পাবে এবং রাজস্ব আহরণে সহায়তা হবে।

সিলেট উইমেন চেম্বারের সভাপতি মিসেস স্বর্ণলতা রায় বলেন, জেলা পর্যায়ে পরিচালিত সরকারি প্রশিক্ষণ কার্যক্রমগুলোতে মহিলা চেম্বারগুলোকে সম্পৃক্ত করা দরকার। তিনি সিলেট হাইটেক পার্কে শিল্প প্রতিষ্ঠার জন্য মহিলা উদ্যোক্তাদের বিশেষ সরকারি সুবিধা দেয়ার আহবান জানান।

কাউন্সিল অব চেম্বার প্রেসিডেন্টস-এর সভাপতি ও এফবিসিসিআই সিনিয়র সহ-সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো: শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন।

উল্লেখ্য যে, এই কাউন্সিল হচ্ছে দেশের সকল জেলা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতিবৃন্দের সংগঠন। সভায় দেশের জেলা ও বিভাগীয় চেম্বার, মহিলা চেম্বার অব কমার্স এবং মেট্টোপলিটন চেম্বারগুলোর প্রতিনিধিবৃৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এফবিসিসিআই সিনিয়র সহ-সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম জেলা চেম্বার নেতৃবৃন্দের বক্তব্য শোনেন এবং নির্দিষ্ট বিষয়গুলোতে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সাথে আলোচনার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। ফাহিম দেশের রাজস্ব নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে সহজীকরণ, স্বচ্ছতা এবং ধারাবাহিকতা বজায় রাখার উপর জোর দেন । দেশের সকল পর্যায়ের ব্যবসায়িদের অংশগ্রহণে এবং তাদের কার্যকর সহযোগিতায় ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা’ অর্জন করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

শেখ ফজলে ফাহিম-এর বিগত বছরগুলোর দূরদর্শী, বিচক্ষণ, ও দায়িত্বপূর্ন ভূমিকার কারনে দল মত নির্বিশেষে দেশের সকল জেলা, বিভাগ, মেট্রোপলিটন এবং মহিলা চেম্বারগুলোর পক্ষ থেকে এফবিসিসিআইয়ের আগামী ২০১৯-২০২১ মেয়াদকালের নিবার্চনে শেখ ফজলে ফাহিমকে সভাপতি পদে পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করা হয়।

এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো: শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন তাঁর বক্তব্যে বর্তমান সরকারের ভিশন ২০৪১ অনুসরণে এফবিসিসিআইয়ের ভিশন ২০৪১-এর উল্লেখ করে বলেন পূর্বাচলে সরকারের দেয়া ১ একর জমির ওপর ‘এফবিসিসিআই আইকন’ ভবন নির্মাণ করা হবে। যেখান থেকে আগামী দিনের এফবিসিসিআই দেশের ব্যবসায়ি সম্প্রদায়ের নেতৃত্ব দেবে।

মহিউদ্দিন খুব শীঘ্রই ‘এফবিসিসিআই বিশ্ববিদ্যালয়’ এবং প্রকৌশল ও কারিগরি প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির লক্ষ্যে ‘এফবিসিসিআই ইনস্টিটিউট’ প্রতিষ্ঠার কথা উল্লেখ করেন। এছাড়াও এফবিসিসিআই সভাপতি বাণিজ্যিক সবধরনের বিরোধ নিস্পত্তির জন্য ‘এফবিসিসিআই আর্বিট্রেশন সেন্টার’ প্রতিষ্ঠার কথা উল্লেখ করেন।

বিভিন্ন জেলা থেকে আগত চেম্বার নেতৃবৃন্দ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্ধ হয়ে থাকা স্থলবন্দরগুলো চালু করা এবং বিদ্যমান স্থলবন্দরগুলোর সক্ষমতা উন্নয়নের ওপরও জোর দেন।

খুলনা চেম্বারের সভাপতি কাজী আমিনুল হক, চট্টগ্রাম উইমেন চেম্বারের সভাপতি মনোয়ারা হাকিম আলী, ঢাকা উইমেন চেম্বারের সভাপতি নাজ ফারহানা, গাজীপুর চেম্বারের সভাপতি আনোয়ার সাদাত সরকার, জামালপুর চেম্বারের সভাপতি রেজাউল করিম রেজনু, বরিশাল চেম্বারের প্রতিনিধি সুজীব রঞ্জন দাস, নারায়নগঞ্জ চেম্বারের প্রতিনিধি মোঃ বজলুর রহমান, মুন্সীগঞ্জ চেম্বারের প্রতিনিধি মোঃ কোহিনুর ইসলাম, সিলেট চেম্বারের প্রতিনিধি সালাহউদ্দিন আলী আহমেদ, মানিকগঞ্জ চেম্বারের প্রতিনিধি তাবারাকুল তোসাদ্দেক হোসেন খান টিটু,চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রতিনিধি এম. সলিমুল্লাহ, জয়পুরহাট চেম্বারের প্রতিনিধি মাহাবুব উদ্দিন, শরিয়তপুর চেম্বারের সভাপতি এ,কে,এম ইসমাইল হক, কক্সবাজার চেম্বারের সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী, ঢাকা চেম্বারের প্রতিনিধি মনোরঞ্জন ভক্ত, সিলেট উইমেন চেম্বারের সভাপতি স্বর্ণলতা রায়, ফরেন ইনভেস্টর চেম্বারের সভাপতি শেহজাদ মুনিম, রাজশাহী উইমেন চেম্বারের প্রতিনিধি আবিদা জেসমিন, গোপালগঞ্জ চেম্বারের সভাপতি কাজী জিন্নাত আলী, রাজশাহী চেম্বারের সভাপতি মোঃ মনিরুজ্জামান, দিনাজপুর চেম্বারের সভাপতি সুজাউর রব চৌধুরী, রংপুর মেট্রোপলিটন চেম্বারের সভাপতি মোঃ রেজাউল ইসলাম মিলন, ঢাকা মেট্রোপলিটন চেম্বারের প্রতিনিধি গোলাম মঈনুদ্দিন, নেত্রকোনা চেম্বারের সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ, লক্ষীপুর চেম্বারের প্রতিনিধি দেওয়ান সুলতান আহমেদ, রাঙ্গামাটি চেম্বারের সভাপতি মোঃ বেলায়েত হোসেন ভুইয়া, কিশোরগঞ্জ চেম্বারের সভাপতি মোঃ মজিবুর রহমান বেলাল, রংপুর উইমেন চেম্বার প্রতিনিধি শাহনাজ পারভীন, লালমনিরহাট চেম্বারের সভাপতি আলহাজ্ব এ.কে.এম কামরুল হাসান বকুল, ব্রাক্ষনবাড়িয়া চেম্বারের সভাপতি আজিজুল হক, নড়াইল চেম্বারের সভাপতি মোঃ হাসানুজ্জামান, নরসিংদি চেম্বারের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, নওঁগা চেম্বারের সভাপতি মোঃ ইকবাল শাহরিয়ার, ভোলা চেম্বারের সভাপতি আব্দুল মমিন টুলু, চাপাইনবাবগঞ্জ চেম্বারের সভাপতি মোঃ ইরফান আলী এবং কুড়িগ্রাম চেম্বারের সভাপতি চৌধুরী শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি