ঢাকা, রবিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

সাংবাদিক রাশীদ উন নবী বাবু আর নেই

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২২:০৪, ৮ জুলাই ২০২০ | আপডেট: ১৫:৪৫, ১০ জুলাই ২০২০

সাংবাদিক রাশীদ উন নবী

সাংবাদিক রাশীদ উন নবী

Ekushey Television Ltd.

দেশের পেশাদার সাংবাদিকতায় অন্যতম পরিচিত মুখ একেএম রাশীদ উন নবী বাবু আর নেই। বুধবার রাতে রাজধানীর পান্থপথের বিআরবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ... রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৬৪ বছর। 

রাশীদ উন নবী বাবুর মেয়ে ফারাহ আনিকা অনন্যা জানান, গত বছর বাবার ক্যান্সার ধরা পড়ে। অবস্থার অবনতি হলে গত রোববার তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই গতকাল রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে তার মৃত্যু হয়।

রাশীদ উন নবী সংবাদকর্মীদের কাছে বাবু ভাই নামেই বেশি পরিচিত। তিনি জাতীয় প্রেসক্লাব ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সিনিয়র সদস্য। 

রাশীদ উন নবী বাবু স্ত্রী ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। তার স্ত্রী ড. তহুরুন নিগার বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের গবেষণাগারে (সায়েন্স ল্যাবরেটরি) পরিচালক ছিলেন। তাদের একমাত্র মেয়ে ফারাহ আনিকা অনন্যা স্থপতি। রাশীদ উন নবীর ছোট বোন মনিরা আক্তার জানান, গত বছরের এপ্রিলে তার ভাইয়ের অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার ধরা পড়ে। প্রথমে ঢাকার আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে তিনি চিকিৎসা নেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য মে মাসে তাকে ভারতের ক্রিশ্চিয়ান মিশনারি হাসপাতালে (সিএমসি) নেওয়া হয়। সেখানে তিনি এক মাস চিকিৎসা নেন। 

সিএমসির চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানান, সেখানে তার অস্ত্রোপচার সম্ভব নয়। পরের মাসে তিনি মুম্বাইয়ের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। পরে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। এরপর থেকে তিনি দেশেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তার শরীর খারাপ যাচ্ছিল। সর্বশেষ রোববার তার অবস্থার আরও অবনতি হয়। ওই দিনই তাকে বিআরবি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

রাশীদ উন নবীর ছোট ভাই রায়হান জানান, রাতেই হাতিরপুলের বাসায় প্রথম জানাজা হয়। বগুড়ায় বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় জানাজা হবে। ভাইয়ের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী ভাই পাগলা কবরস্থানে বাবার কবরের পাশে তার লাশ দাফন করা হবে।

রাশীদ উন নবী বাবু ১৯৫৬ সালের ১২ মার্চ বগুড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম হারিছ উদ্দিন সরকার ও মা রামেনা বেগম। তিনি বগুড়া জিলা স্কুল থেকে এসএসসি এবং বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হন। পরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লাইব্রেরি সায়েন্সে মাস্টার্স করেন। বগুড়ায় থাকাকালেই ১৯৭৪ সালে তিনি দৈনিক বাংলাদেশের মাধ্যমে সাংবাদিকতা শুরু করেন। বিভিন্ন দৈনিকে নির্বাহী সম্পাদক ও বার্তা সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন ছাড়াও কয়েকটি 'মিডিয়া হাউস' গঠনেও তার ভূমিকা ছিল। বেসরকারি টেলিভিশন এনটিভি ও চ্যানেল ওয়ানে বার্তা বিভাগের শীর্ষ পদে তিনি কাজ করেন। মিডিয়ায় তিনি একজন সজ্জন এবং ভাল মানুষ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। 

৪৫ বছরের সাংবাদিকতা জীবনে তিনি দেশের প্রথম সারির প্রায় সব পত্রিকা ও টিভি চ্যানেলে কাজ করেছেন। সমকাল, আমার দেশ, দৈনিক বাংলা, বাংলার বাণী, দেশ বাংলা, আজকের কাগজ, ইত্তেফাক, যুগান্তর, ইনকিলাব ও সাপ্তাহিক পূর্ণিমা তার মধ্যে অন্যতম। এ ছাড়া তিনি দৈনিক জনতা, দৈনিক করতোয়া, রাজশাহী বার্তায়ও কাজ করেন। রাশীদ উন নবী দৈনিক সকালের খবরের সম্পাদক ছিলেন। সর্বশেষ তিনি প্রকাশিতব্য দৈনিক আমার দিন পত্রিকায় সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

রাশীদ উন নবী বাবুর মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমীন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম ও ইআরএফ’র প্রেসিডেন্ট সাইফ ইসলাম দিলাল। 

এছাড়া বগুড়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু, বগুড়া প্রেসক্লাব সভাপতি মাহমুদুল আলম নয়ন, সাধারণ সম্পাদক আরিফ রেহমান, বগুড়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আমজাদ হোসেন মিন্টু ও সাধারণ সম্পাদক জেএম রউফ শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন।

এমবি//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি